ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ঝালকাঠিতে বীজতলায় হাঁটু পানি : কোটি টাকার ক্ষতি

প্রকাশিত: ১২:০৫ পিএম, ১৮ জুলাই ২০১৬

ঝালকাঠিতে টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বেড়ে যাওয়ায় চার উপজেলায় ২০ দিন ধরে আমন বীজতলা এখন হাঁটু পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। এতে জেলায় প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমির আমন বীজতলা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষি বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, ইতোমধ্যেই প্রায় ১কোটি টাকার বীজতলার ক্ষতি হয়েছে। পানি দ্রুত নেমে না গেলে এ ক্ষতির পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে বলেও কৃষি বিভাগ ধারণা করছে। বীজতলা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত পড়ার পাশাপাশি আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র জানায়, ঝালকাঠি জেলায় এ বছর ৫০ হাজার ৭৬৯ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল জাতের ৮ হাজার ৯৫৫ হেক্টরে এবং ৪১ হাজার ৮১৪ হেক্টরে স্থানীয় জাতের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।

এ পরিস্থিতিতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের বসতবাড়ি সংলগ্ন উঁচু জমিতে নতুন করে বীজতলা করার পরামর্শ দিচ্ছে। আর বীজতলা আষাঢ় মাসের মধ্যে শেষ করতে না পারলে বিলম্বে বীজতলায় আমন আবাদ কমে যাবে। এ পরিস্থিতিতে হতাশ হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।  

সরেজমিনে দেখা গেছে, পানির নিচে থাকা বীজতলার সিংহভাগই পচে গেছে। কিছু কিছু বীজতলা পানির ওপর মাথা তুলে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। এক ধরনের বাষ্প থেকে সৃষ্ট ভাসমান শ্যাওলা ওই বীজতলা আবার চেপে ধরেছে।

কৃষকরা জানান, জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় আমন বীজতলা করার সময় আষাঢ় মাসে বৃষ্টি ছিল। স্থানীয় আড়তদারদের কাছ থেকে চুক্তিতে টাকা এনে বীজতলা করেছিলেন বেশিরভাগ কৃষক। সেই বীজতলা জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আর মাত্র দু-একদিন সময় আছে নতুন বীজতলা করার। কিন্তু অর্থের অভাবে নতুন করে বীজতলা করা সম্ভব নয় বলেও জানান কৃষকরা। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, বর্তমানে বাজারেও বীজে সঙ্কট রয়েছে।  

এ বিষয়ে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ছত্রকান্দা গ্রামের কৃষক মো. মনিরুজ্জামান জাগো নিউজকে বলেন, আষাঢ় মাসের প্রথম সপ্তাহে আমরা উচ্চফলনশীল জাতের বীজতলা করেছি। আর আষাঢ়ের মধ্যবর্তী সময় স্থানীয় জাতের বীজতলা তৈরি করি। বীজতলা করার পরে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়া বৃষ্টিতে ২০ দিন ধরে তলিয়ে আছে। ১৫ শতাংশ বীজতলা দিয়ে এক হেক্টরে বীজ রোপণ করা যেত, কিন্তু পানিতে সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

এদিকে রাজাপুর উপজেলার বামনকাঠি গ্রামের রনি ফরাজী বলেন, ‘আমনের বীজতলাগুলো পানিতে ডুবে আছে। নতুন করে বীজতলা করার সময়ও নেই। এ বছর আমন চাষে মারাত্মক ক্ষতি হবে আমাদের। আড়তদারদের কাছ থেকে আনা দাদনের টাকাই পরিশোধ করতে পারবো না।’

এ বিষয়ে ঝালকাঠি কৃষি সম্প্রসারণ অদিদফতরের উপ-পরিচালক শেখ আবু বকর সিদ্দিক বলেন, আমন বীজতলা নষ্ট হওয়ায় কৃষকের বসতবাড়ির উঁচু স্থানে নতুন বীজতলা করার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। যারা করতে পারেননি তারা ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন।

মো. আতিকুর রহমান/এএম/ এমএএস/পিআর