ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

বর্ষায় ঘুরে আসতে পারেন সুবলং জলপ্রপাত

প্রকাশিত: ০১:৫৮ পিএম, ১৩ জুলাই ২০১৬

এখন বর্ষা। কলরবে নামছে ঝরণাধারার পানিপ্রবাহ। কাড়ছে দৃষ্টি, টানছে কলকল ধ্বনি। আনন্দ উপভোগে সেখানে ছুটে চলেছেন স্থানীয় এবং দূর থেকে আগত ভ্রমণপিপাসু পর্যটকরা। অসংখ্য মানুষের পদচারণায় প্রতিদিন কোলাহলপূর্ণ ও উৎসবমুখর থাকছে প্রকৃতির নিসর্গ আর মনোরম কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে প্রবাহিত ঝরণাধারা রাঙামাটির সুবলং জলপ্রপাত।

এ ঝরণাধারার আনন্দ উপভোগ করতে এ বর্ষায় ঘুরে আসতে পারেন জলপ্রপাতটিতে। এটি এখন গোটা দেশ ছাড়িয়ে দৃষ্টি কেড়েছে আন্তর্জাতিক পর্যটক ও পর্যবেক্ষক মহলেও।

সুবলং ঝরণার অবস্থান রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বরকল উপজেলার সুবলং ইউনিয়নের চিলারধাক নামক দুর্গম পাহাড়ি এলাকায়। বরকলের সুবলং এবং সদর উপজেলার বন্দুকভাঙ্গা ও বালুখালী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী ওই পাহাড়ি এলাকাটি গড়ে উঠেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্ববৃহৎ কৃত্রিম জলরাশি কাপ্তাই হ্রদ ঘেঁষে। সারিবদ্ধ পাহাড়মালার মাঝ দিয়ে প্রবাহিত ওই সুবলং জলপ্রপাতটি। অনেক উঁচু পাহাড় থেকে অনবরত নামে ঝরণাধারার পানি। পানি গড়িয়ে মেশে সরাসরি কাপ্তাই হ্রদে। যা দেখলে মন কাড়ে সবার।

জানা যায়, প্রায় দুই দশক আগে ঝরণাটি আবিস্কার করেছিলেন প্রকৃতিপ্রেমীরা। এক সময় সেটি ছিল সবুজ পাহাড় আর ঘন অরণ্যে ঘেরা। পরে পর্যটকদের আকর্ষণ দেখে সেটিকে সংস্কার করে বরকল উপজেলা প্রশাসন। বর্তমানে সুবলং ঝরণাধারা ঘিরে গড়ে উঠেছে একটি দর্শনীয় স্পট। নদী পথে আসা-যাওয়ার সময় সবার নজরে কাড়ে স্পটটি।

বরকল উপজেলা প্রশাসন জানায়, বর্তমানে সুবলং ঝরণা দেশে বিদেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। সেখানে পূর্ণাঙ্গ একটি পর্যটন স্পট নির্মাণ করা হয়েছে। ঝরণা ধারার ওপর দিয়ে নির্মিত হয়েছে একটি সেতু। এছাড়া পর্যটকদের সুবিধার জন্য সেখানে কয়েকটি অবকাঠামো নির্মাণ করে টিকিট কাউন্টার, বিপণী বিতান, বিশ্রামাগার, টয়লেট, ওয়াশ রুম করে দেয়া হয়েছে। স্পটে প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা।

এদিকে স্থানীয় এবং দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য অন্যরকম আকর্ষণ রাঙামাটির সুবলং ঝরণা দেখতে প্রতি বছর পর্যটন মৌসুমে অসংখ্য পর্যটক ও ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে এই স্পটটি। বর্ষা মৌসুম ছাড়াও ঝরণাধারাটি জেগে থাকে সব ঋতুতেই। বর্তমানে পর্যটকদের ভিড় জমছে প্রতিদিন। বিশেষ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে ভিড় জমছে বেশি।

vromon

রাঙামাটি পর্যটন মোটেল অ্যান্ড হলি ডে কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, সুবলং ঝরণাটি এখন জীবিত। চলতি বর্ষা শুরু থেকেই ঝরণাটির পানি প্রবাহ নামছে। পর্যটকরা নৌ ভ্রমণযোগে দলে দলে উপভোগ করতে যাচ্ছেন আকর্ষণীয় সুবলং ঝরণায়।

দেশে বিদেশে পরিচিত অপূর্ব ওই পাহাড়ি ঝরণার শীতল ও চঞ্চলা জলধারা যে কাউকেই কাছে টানে। আশেপাশে রয়েছে আরও অনেক ছোট ছোট ঝরণা। ঝরণাগুলোর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য সেখানে তৈরি করেছে ভূ-স্বর্গ। নয়নাভিরাম ওই ঝরণার সমাবেশ শিহরিত করে তোলে হৃদয় ও মনকে।
 
স্থানীয় পর্যটন কর্তৃপক্ষ জানায়, গিরিনির্ঝর বড় ঝরণাধারাসহ কাছাকাছি রয়েছে আটটি ঝরণাধারার সমাবেশ। তার মধ্যে মূল ঝরণাধারাটি প্রায় ৩শ’ ফুট উচ্চতা থেকে প্রবাহিত। বর্ষাকালে অবিরাম জলধারার পতনে অপরূপ দৃশ্যের অবতারণ ঘটে যা দেখতে পর্যটকরা ছুটছেন প্রতিদিন।

কীভাবে যাবেন
পর্যটন শহর রাঙামাটি থেকে ১৫-১৬ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সুবলং ঝরণা। এটি দেখতে যেতে হবে রাঙামাটি শহর থেকে ইঞ্জিনবোট বা স্পীডবোট নিয়ে। তবে লোকাল কোনো নৌযান সার্ভিস চালু নেই। যেকোনো নৌ পরিবহন নিয়ে যেতে হবে রিজার্ভ করে। যাওয়া-আসার সময় উপভোগ করা যায় রোমাঞ্চকর নৌ ভ্রমণ। ইঞ্জিনবোট নিয়ে যাওয়া-আসার সময় লাগে প্রায় ৩ ঘণ্টা।

vromon

কোথায় থাকবেন
যেকোনো স্থান থেকে সুবলং জলপ্রপাত দেখতে গেলে থাকতে হবে রাঙামাটি শহরে। শহরে রয়েছে পর্যটন মোটেলসহ অনেকগুলো আবাসিক হোটেল। শহর থেকে সকালে ইঞ্জিনবোট নিয়ে বের হলে সুবলং ঝরণা ঘুরে ও কাপ্তাই হ্রদে নৌভ্রমণ করে আবার দুপুরের দিকে ফেরা যায় শহরে। আর দুপুরের দিকে গেলেও সন্ধ্যার আগে ফেরা যাবে রাঙামাটি শহরে।

যাওয়া-আসার পথে শহর থেকে অদূরে পেদাটিংটিং ও চাংপাং নামে দুটি রেস্টুরেন্ট পাওয়া যায়। দুপুরের খাবার ওই দুটি রেস্টুরেন্টেই সেরে নেয়া যেতে পারে।

এফএ/এমএস