জমজমাট কক্সবাজারের ঈদবাজার
আর মাত্র সপ্তাখানেক বাকি। আগামী ৬ অথবা ৭ জুলাই সূর্য ডুবার সাথে সাথে শুরু হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর উদযাপনের ক্ষণ গণনা। তবে এটি নির্ভর করছে রোজা ২৯ অথবা ৩০টির পূর্ণ হওয়ার উপর।
সেটা যাই হউক, উৎসবের আমেজে জমজমাট কেনা কাটায় ব্যস্ত কক্সবাজারের মানুষ। আষাঢ় মাস চললেও বর্ষণ না থাকায় এবার রমজানের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মার্কেটে আনাগোণা ছিল ক্রেতাদের। তাদের মাঝে প্রবাসী পরিবার ও মধ্যবিত্ত নিম্ন মধ্যবিত্তরা ছিলেন বেশি।
২৫ জুনের পর সরকারি পেশাজীবীদের চলতি মাসের বেতন ও ঈদ বোনাস হাতে আসায় শেষ মুহূর্তে আরো জমজমাট হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের ঈদবাজার। ফলে জেলা, উপজেলা ও পৌর শহরের বাণিজ্যিক এলাকার বিপনী বিতানগুলো এখন লোকে লোকারণ্য। চলছে সকাল-দুপুর-মধ্যরাত এমনকি মাঝে মাঝে শেষ রাত পর্যন্তু বিকিকিনি।
জেলা শহরের ফজল মার্কেট, কোরালরীফ প্লাজা, সমবায় সুপার মার্কেট, এ ছালাম মার্কেট, নিউ মার্কেট, ইডেন গার্ডেন সিটি, সী-কুইন মার্কেট, আপন টাওয়ার, ফিরোজা শপিং কমপেক্স, পৌর সুপার মার্কেট, বাটা মার্কেট, ডাবা বাজার, মসজিদ মার্কেট ও হকার মার্কেটসহ একাধিক বিপনী বিতান ঘুরে দেখা গেছে, বিপনী বিতানগুলোর বেশির ভাগ দোকানে নানা বয়সী নারী ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। তাল মিলিয়ে আসছে কিশোর ও তরুণরাও। ঈদে পোশাকে মধ্যবয়সী কিংবা নব বিবাহিতা নারীরা বিভিন্ন নামী-দামী ব্রান্ডের শাড়ী খুঁজলেও তরুণী ও কিশোরীদের প্রধান পছন্দ ডিসেন্ট ড্রেস।
ঈদকে সামনে রেখে দোকানে দোকানে শোভা পাচ্ছে দেশি বিভিন্ন ডিজাইন আর দামের বালু চুরি, হ্যান্ডি ব্লক, টাঙ্গাইল, জুট কাতান, সূতি, হাফ সিল্ক ও জামদানি সিল্ক, মুসলিন অ্যামব্রয়ডারি, মুসলিন শিপন, এনডি, বলাকা, জামদানি, ধুপিয়ান, র-কাতান, জয়শ্রী, স্বর্ণ কাতান, মুসলিন ব্রাশো, ঝলক কাতান শাড়ী। ক্রেতাদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে জামদানী, সূতি, টাঙ্গাইল, র-সিল্কের ওপর কাটোয়ার, অ্যামব্রয়ডারি ও এন্ডির মিশ্রণে হাতে বোনা সিল্ক শাড়ি। ক্রেতারা গরমের কারণে এবার সূতি শাড়িকে প্রাধান্য দিচ্ছেন বলে জানান দোকানিরা।
অপরদিকে ভারতীয় জয়-বিজয়, বিনয়, প্রাচীর-সেভেন, গঙ্গা, শিয়া, কমল, এলিজাসহ আরো হরেক রকমের ব্রান্ডের থ্রি-পিচ রয়েছে বাজারে। ব্যবসায়ীদের মতে তরুণী ও ছোটদের জন্য খোঁজ করা হচ্ছে ভারতীয় নানা সিরিয়ালের চরিত্রের নামে বাজারে আসা কাপড়।
ফজল মার্কেট দোকান মালিক সমিতির নেতা ও অংকুর বিপনী বিতানের মালিক কামরুল হাসান জানান, রমজানের শুরু থেকে ঈদবাজার সরগরম। বিদেশি পোশাকের পাশাপাশি দেশীয় পোশাকের চাহিদা কম নয়।
সমবায় সুপার মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তা ও ময়ূরী বস্ত্র বিতানের মালিক সাইফুদ্দিন মুহাম্মদ বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা ও বর্ষণ না থাকায় ভালোই জমে উঠেছে ঈদবাজার। শেষ সময়ে প্রচুর ক্রেতা সাধারণ আসছেন। এতে হাসির ঝিলিক রয়েছে ব্যবসায়ীদের মুখে।
আবার, চুরি-ছিনতাই ও ইভটিজিং প্রতিরোধে বিপনী বিতানগুলোর সামনে ব্যাপক নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে নিরাপত্তাকর্মী নিয়োজিত রয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ব্যবসায়ী দোকান মালিক সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম মুকুল।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ জানিয়েছেন, ঈদে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সব ধরনের প্রস্তুতি আগে থেকেই নেয়া হয়েছে। রয়েছে প্রতিটি মার্কেটের সামনে পর্যাপ্ত পুলিশ পাহারা। আগে থেকেই বলা হয়েছিল, কেউ কোথাও কোন ধরনের হয়রানির শিকার হলে পুলিশকে অবহিত করতে।
এমএএস/পিআর