চেক প্রতারণা মামলায় আসলাম চৌধুরী কারাগারে
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীকে চেক প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। পুলিশ সোমবার তাঁকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আব্দুল কাদেরের আদালতে হাজির করলে বিচারক তাঁকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী কফিল উদ্দিন জানান, পূবালী ব্যাংকের ৩৬ কোটি ৮ লাখ টাকার একটি চেক প্রতারণার মামলায় আসলামের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত।
ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের প্রতিনিধির সঙ্গে গোপন বৈঠকে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে ঢাকায় গ্রেফতার হওয়ার এক মাস ৪ দিনের মাথায় রোববার রাতে তাঁকে চট্টগ্রামে আনা হয়।
আদালত সুত্রে জানাগেছে, সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটের অ্যাসোসিয়েট প্রতিষ্ঠানের নামে আসলাম চৌধুরী বিভিন্ন সময়ে পূবালী ব্যাংক থেকে মোট ৩৬ কোটি ৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলেন। ঋণ পরিশোধের জন্য তিনি যমুনা ব্যাংকের চেক দিলেও অপর্যাপ্ত তহবিলের কারণে তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
ফলে কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মোট ৩৬ কোটি ৮ লাখ টাকার চেক প্রতারণার অভিযোগে ২০১৩ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে ৮টি মামলা দায়ের করেন। পূবালী ব্যাংকের সিডিএ কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক এস এম ইয়াহিয়া বাদি হয়ে এসব মামলা করেন।
এর মধ্যে ২০১৪ সালের ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মূখ্য মহানগর হাকিম আদালতে ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার চেক প্রতারণার মামলাটি দায়ের করা হয়। এর আগে ২০১৩ সালের ২ ডিসেম্বর ৬ কোটি ৭০ লাখ টাকার চেক প্রতারণার আরেকটি মামলা দায়ের করা হয়।
এছাড়া ৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকা করে চেক প্রতারণার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আরও ৬টি মামলা দায়ের করা হয়। এর মধ্যে ২০১৫ সালের ১ এপ্রিল দুইটি, ২২ মার্চ দুইটি ও ১৮ মার্চ দুইটি মামলা দায়ের করে পূবালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
এসব মামলায় আসলাম চৗধুরীকে হাজির করার জন্য পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সোমবার মহানগর হাকিম আব্দুল কাদেরের আদালতে আসলাম চৌধুরীকে হাজির করা হলে বিচারক তাকে গ্রেফতার দেখানোর অনুমতি দিয়ে কারাগারে পাঠান। তবে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে কেউ আদালতে জামিনের আবেদন করেননি।
উল্লেখ্য, বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরী সম্প্রতি ভারতে গিয়ে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক এবং বাংলাদেশ সরকারকে উচ্ছেদ করতে গোপন ষড়যন্ত্র করছেন বলে দেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে খবর প্রকাশিত হয়। ইসরায়েলের প্রভাবশালী নেতা মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে আসলাম চৌধুরীর একাধিক ছবি এবং ইসরায়েলি একটি অনলাইনে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তৎপর হয়ে উঠে।
পরে গত ১৫ মে ঢাকার কুড়িল এলাকা থেকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে। ইতোমধ্যে তাকে দফায় দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলেও সরকার উৎখাতের কোন ষড়যন্ত্রের তথ্য উৎঘাটন করতে পারেনি বলে জানান বিএনপি নেতারা।
জীবন মুছা/এমএমজেড/পিআর