রাজশাহী
মাউশির সেই পরিচালক-এডির অপসারণ দাবি

রাজশাহী মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) কলেজ শাখার পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক (এডি) মো. আলমাছ উদ্দিনের নামে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠার পর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি উঠেছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক এবং রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিতভাবে এই দাবি জানান রাজশাহী জজকোর্টের অ্যাডভোকেট এনামুল হক।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
এর আগে ২৯ মার্চ ‘রাজশাহী মাউশির ‘দুর্নীতির বরপুত্র’ এডি আলমাছ উদ্দিন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপর বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে পরিচালক আছাদুজ্জামান ও এডি আলমাছের অনিয়ম-দুর্নীতির খবর ফলাও করে প্রকাশ হয়।
লিখিত অভিযোগে এপিপি অ্যাডভোকেট মো. এনামুল হক বলেন, বিগত তিন মাস যাবত লক্ষ্য করছি, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষার রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক মো. আলমাছ উদ্দিনের দুর্নীতি এবং ঘুস গ্রহণের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। এডি আলমাছ উদ্দিন একজন আওয়ামীপন্থি শিক্ষক এবং নাটোরের তৎকালীন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের সঙ্গে নিয়মিত যাতায়াত করতেন।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে রাজশাহীর আঞ্চলিক কার্যালয়ে সহকারি পরিচালক হিসেবে যোগদানের পরই দুর্নীতির সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন আলমাছ উদ্দিন। তৎকালীন আওয়ামী দোষর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ব্যানার্জীর সহযোগিতায় এ সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন তিনি। এর মাধ্যমে ডিগ্রি পর্যায়ে তৃতীয় শিক্ষকদের ভুয়া তালিকা তৈরিতে জনপ্রতি ৩০ হাজার টাকার বিনিময়ে অনিয়ম করেন।
এপিপি অ্যাডভোকেট মো. এনামুল হক তার অভিযোগে বলেন, ২০২৪ এর নভেম্বর মাসে আলমাছ উদ্দিন বিধিবহির্ভূতভাবে ভুয়া তালিকার প্রায় ২০০ জনের এমপিও প্রদানে অনিয়ম করে প্রায় ৫ কোটি টাকা দুর্নীতি করেন। তিনি রাজশাহী ও ঢাকায় ৫-৬টি ফ্ল্যাটসহ কোটি কোটি টাকার সম্পদ তৈরি করেন যা পত্রিকার প্রকাশিত হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাবেক পরিচালক বিশ্বজিৎ ব্যানার্জি বদলি হয়ে গেলেও থেকে যান আলমাছ। পরবর্তীতে নতুন পরিচালক আছাদুজ্জামানের সঙ্গে তার পুরনো দুর্নীতির সিন্ডিকেট নতুন করে জাগিয়ে তোলেন। আগের দুর্নীতি সম্পর্কে মো. আলমাছ উদ্দিনসহ সেসিপ প্রকল্পের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মাউশি কর্তৃক তদন্ত কাজ চলমান। তারপরও আলমাছ উদ্দিন অদৃশ্য শক্তির বলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা, রাজশাহী অঞ্চলের সহকারী পরিচালক (কলেজ) পদে বহাল তবিয়তে আছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক মোহা. আছাদুজ্জামান আওয়ামী দোসর সহকারি পরিচালক মো. আলমাছ উদ্দিনের সঙ্গে যোগসাজশে তিনি নতুন করে দুর্নীতির সিন্ডিকেট শুরু করেছেন। যা বিগত দুই সপ্তাহ যাবত বিভিন্ন স্থানীয় ও জাতীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অভিযোগের বিষয়গুলো যথাযথভাবে খতিয়ে দেখে পরিচালক মোহা. আছাদুজ্জামান ও সহকারী পরিচালক আলমাছ উদ্দিনকে প্রত্যাহার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাচ্ছি।
বিজ্ঞাপন
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে দুদকের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক মো. কামরুল আহসান বলেন, অভিযোগটি জমা হয়েছে কি না মনে করতে পারছি না। আপনি ১৫ এপ্রিল দুদক অফিসে আসেন, সাক্ষাতে বিষয়টি নিয়ে কথা বলা যাবে।
এ বিষয়ে জানতে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদকে মোবাইলে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।
সাখাওয়াত হোসেন/জেডএইচ/জিকেএস
বিজ্ঞাপন