চৈত্রের মাঝামাঝিতেও রাতে শীত পঞ্চগড়ে
ভোরের দিকে দেখা দিচ্ছে কুয়াশা। থাকছে সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত
ভোরে কুয়াশা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত তীব্র গরম। আর রাতে অনুভূত হচ্ছে হালকা শীত—এমনই আবহাওয়া বিরাজ করছে সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। চৈত্রের মাঝামাঝিতে এমন আবহাওয়া বিচিত্র হলেও হিমালয়কন্যা পঞ্চগড়ের জন্য স্বাভাবিক বলছেন স্থানীয়রা।
তবে আবহাওয়া অফিসের ভাষ্য, দীর্ঘদিন বৃাষ্ট নেই। সঙ্গে বাতাসের আগ্রতা ও জলীয়বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এমন আবহাওয়া বিরাজ করছে।
হিমালয়ের পাদদেশে অবস্থিত উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে বরাবর শীতপ্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত। এখানে শীত মৌসুমে সারাদেশের তুলনায় বেশি শীত অনুভূত হয়। অন্য এলাকার তুলনায় আগেভাগে শুরু হয় শীত। দীর্ঘস্থায়ীও হয় বেশি। এখানে প্রতিবছর ফেব্রয়ারির পর থেকে তীব্র গরম শুরু হয়। বসন্তের মাঝামাঝিতে বৃষ্টি হলে বর্ষার আগ পর্যন্ত এবং গ্রীষ্মের শেষের দিকে শুরু হয় তীব্র গরম। এবার বসন্তের শেষ এবং গ্রীষ্মের কয়েক দিন আগেও অনুভূত হচ্ছে শীত। চৈত্রের মাঝামাঝি বর্তমান সময়ে তেঁতুলিয়াসহসহ পঞ্চগড়ের আশপাশের এলাকায় সন্ধ্যা ৬টার পর থেকে পরদিন সকাল ৯টা পর্যন্ত সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে ১৬ থেকে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দিনে সকাল ৯টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বর্তমানে শীত অনুভূতির সঙ্গে ভোরের আকাশে ঘন কুয়াশাও দেখা যাচ্ছে। কায়াশার রেশ থাকছে সকাল ৭টা থেকে ৮টা পর্যন্ত।
পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার ময়দানদিঘী ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক কুদরত-এ খোদা বলেন, ‘পঞ্চগড়ে বছরের দুই থেকে তিনমাস বাদ দিলে বছরজুড়েই শীতের একটা আমেজ থাকে। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। আমাদের এলাকায় বর্ষাকাল ছাড়া সবসময় রাতে কুয়াশার একটা ভাব থাকে। আমাদের জন্য এই আবহাওয়া একটি স্বাভাবিক বিষয়। এখানে গরমের সময়ও বৃষ্টি হলে শীত অনুভূত হয়। মোটামুটি সারা বছর কাঁথা নিয়ে ঘুমাতে হয়। তবে এবার বেশ কিছুদিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে না। দিনে প্রচণ্ড গরম থাকছে। ধুলাবালিতে আকাশ বাতাস ভরে গেছে। ভোরের আকাশে কুয়াশার এটিও অন্যতম কারণ হতে পারে।’
জেলা শহরের মসজিদপাড়া মহল্লার সত্তরোর্ধ্ব ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘ফজরের নামাজের সময় প্রতিদিন কুয়াশা থাকে। রাতেও শীত লাগে। কাঁথা গায়ে দিয়ে ঘুমাতে হয়। দিনে আবার বেশ গরম। আমাদের পঞ্চগড়ের আবহাওয়াটাই আসলে অন্য এলাকার চেয়ে আলাদা।’

বুধবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন ১৬ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় জানান, পঞ্চগড় জেলা বালু ও পাথরসমৃদ্ধ এলাকা। এখানে প্রতিদিন ভূগর্ভস্থ শত শত ট্রাক বালু ও পাথর উত্তোলন এবং পরিবহন করা হয়। সারাক্ষণ আকাশে বাতাসে ধূলিকণা ও পাথরকণা জমে থাকে। দীর্ঘদিন কোনো বৃষ্টিপাত না হওয়ায় বায়ুমণ্ডলে ধূলিকণা জমে থাকার কারণে কুয়াশা বেশি দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা ও জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে যাওয়ায় কুয়াশার সঙ্গে শীত অনুভূতির এই বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করছে।
তিনি বলেন, পঞ্চগড়ে দিনে প্রচণ্ড গরম থাকে। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হচ্ছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হচ্ছে ১৬ থেকে ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সফিকুল আলম/এসআর/জেআইএম
সর্বশেষ - দেশজুড়ে
- ১ কুষ্টিয়ায় ট্রাকচাপায় প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবকের
- ২ পাগলা মসজিদের ১৩ দানবাক্সে মিললো ৩৫ বস্তা টাকা
- ৩ স্মৃতিসৌধের পরিদর্শন বইয়ে তারেক রহমানের পরিচয় ‘রাজনৈতিক কর্মী’
- ৪ সাড়ে ৮ ঘণ্টা পর শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু
- ৫ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রীবাহী বাস-ট্রাকের সংঘর্ষ, আহত ১০