ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

তিনদিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রায় পুড়ছে যশোর

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ০৯:৩০ এএম, ৩০ মার্চ ২০২৫

চৈত্রের দাবদাহে হাঁসফাঁস উঠেছে যশোরের প্রাণীকুলে। তিনদিন ধরে এই জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে। শনিবার (২৯ মার্চ) বিকেলে যশোরে ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস। শুক্রবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল যশোরে।

এর আগে বৃহস্পতিবারও (২৭ মার্চ) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল এই জেলাতেই।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

যশোর বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার বিকেল চারটার দিকে এই জেলায় সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। শুক্রবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল যশোরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃহস্পতিবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল এই জেলাতেই।

গত তিনদিন ধরে তাপদাহে চরম ভোগান্তিতে রয়েছে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিশেষ করে দিনের বেলা ঈদের কেনাকাটা করতে আসা মানুষের গরমে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। তবে দাবদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েন রিকশাচালকেরা। চাইলেই গরমে বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ নেই তাদের। জীবিকার তাগিদে এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করতে হচ্ছে। আবার গরমের কারণে কমেছে তাদের আয়ও।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এছাড়া তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণীকুলের। এ আবহাওয়া কয়েকদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বইতে থাকায় জনজীবনে অস্বস্তি নেমে এসেছে। তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছে না। বিশেষ প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ ছাতা মাথায় অথবা রিকশায় চলাচল করলেও সে সংখ্যা খুবই কম।

অপরদিকে বিগত বছরগুলোতে ঈদ সামনে রেখে শহরে বিপুলসংখ্যক মানুষের উপস্থিতি এবং বিপণি বিতানগুলোতে জমজমাট বেচাকেনা চললেও এ বছর গরমের কারণে শহরে দিনের বেলা মানুষের উপস্থিতি কম।

বিজ্ঞাপন

কালেক্টরেট মসজিদ মার্কেট এলাকার ব্যবসায়ী আলতাফ হোসেন বলেন, তাপপ্রবাহের কারণে বাজারে ক্রেতাদের উপস্থিতি তুলনামূলকভাবে কম। যে কারণে বেচাকেনায় প্রভাব পড়েছে। গত কয়েকদিন তাপদাহ হলেও প্রতিনিয়তই তা বাড়ছে।

শহরের দড়াটানাতে হাবিবুর রহমান নামে এক আইনজীবী জানান, দুদিন যশোরে তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। রোদ্দুরে সব পুড়ে যাচ্ছে। যেহেতু দু’একদিন পরেই ঈদ। তাপদাহ হলেও বাধ্য হয়ে মার্কেটে আসতে হচ্ছে। এসেই গরমে কাহিল হয়ে পড়েছি।

তবিবর নামে এক রিকশাচালক বলেন, মনে হচ্ছে আগুন উড়ছে। রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে, জীবিকার তাগিদে বের হতে হচ্ছে। পিচের তাপের আঁচ মুখে লাগছে, মনে হচ্ছে মুখ পুড়ে যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

চলমান তাপপ্রবাহে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। তাপপ্রবাহ থেকে রক্ষা পেতে তারা মাথায় টুপি অথবা গামছা পরে চলাচল করছেন। কৃষিকাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা ক্লান্ত দেহ নিয়ে ছায়ায় বিশ্রাম করছেন। গরমের হাত থেকে শরীরকে শীতল করে জুড়িয়ে নিতে শহর থেকে কিশোর-যুবকেরা দল বেঁধে ছুটছে গ্রামাঞ্চলে নলকূপগুলোতে গোসল করতে।

সাধারণত মধ্য এপ্রিলে তীব্র তাপদাহ বয়ে যায় যশোরে। তবে এবার মার্চেই যশোরে তাপদাহ শুরু হওয়ায় জনমনে অস্বস্তি ও উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। এবার আগেভাগে তাপদাহ শুরু হওয়ায় প্রাণীকুলকে আরও ভোগান্তি পোহাতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত বছরের ৩০ জুন যশোরে ব্যারোমিটারের পারদ চড়েছিল ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এর আগে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৭২ সালে ১৮ মে। সেদিন রাজশাহীতে তাপমাত্রা ছিল ৪৫ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

বিজ্ঞাপন

মিলন রহমান/এফএ/এএসএম

বিজ্ঞাপন