গাজীপুরে নেই চিরচেনা সেই যানজট

পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে গাজীপুরে নেই চিরচেনা যানজট। যাত্রীরা নির্বিঘ্নে গন্তব্যে যাচ্ছেন। সড়কে পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি এবং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যানবাহনগুলো যাত্রী নিয়ে দ্রুত গন্তব্যে ছেড়ে যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত রাস্তার মোড়ে মোড়ে আগে যেমন শত শত মানুষ বাসের জন্য অপেক্ষা করে থাকত, এখন আর সে অবস্থা নেই। নির্দিষ্ট স্টপেজে বাসগুলো যাত্রী তুলছে এবং গন্তব্যে চলে যাচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকালে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। চাপ বাড়লেও মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। মহাসড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবক শিক্ষার্থীরাও কাজ করছে।
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার হিসেবে পরিচিত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে যানবাহন এবং ঘরমুখো মানুষের ব্যাপক চাপ বেড়েছে। সেখানে সার্ভিস লেনে যাত্রী ওঠানামা করানোর জন্য কিছুটা জটলা থাকলেও মূল সড়কে কোনো যানজট নেই। অনেকটা স্বস্তি নিয়ে মানুষ চলাচল করছে। এছাড়া সকাল থেকে গাজীপুরের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে মানুষ বাড়ি ফিরছে। এই দুই মহাসড়কের সবচেয়ে ব্যস্ততম এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা ও চন্দ্রা স্টেশনে যাত্রী ও পরিবহনগুলো ভিড় করছে।
গাজীপুরের কারখানাগুলো বৃহস্পতিবার ছুটি দেওয়া হয়েছে। যানজট এড়ানোর জন্য ঘরমুখো যাত্রীরা আগেভাগেই বাড়ি ফিরছেন। যাত্রীদের অনেকেই বেশি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেছেন। তবে পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন আগে যাত্রী টানতে নির্ধারিত ভাড়ার চাইতে কম ভাড়া নেওয়া হতো। এখন নির্ধারিত ভাড়া নেওয়ায় অনেকে এটিকে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ করছেন।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ জানায়, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তায় যাত্রীরা ভিড় করছেন। অনেকেই কাঙ্ক্ষিত গাড়ির জন্য অপেক্ষা করে আছেন। স্টপেজগুলোতে সারি সারি বাস দাঁড়িয়ে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে। তবে কোথাও কোনো যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।
জেলার ২ হাজার ১৭৬টি ছোট বড় কলকারখানা রয়েছে। এরমধ্যে ১ হাজার ১৫৪টি পোশাক কারখানা। এসব কারখানায় কাজ করেন প্রায় ২২ লাখ কর্মী। এরইমধ্যে অনেক কলকারখানা ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ঈদের ছুটি শুরু হয়েছে। যানজট থেকে রেহাই পেতে ঘরমুখো মানুষেরা আগেভাগেই ঈদযাত্রা শুরু করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আলেমা টেক্সটাইল কারখানার শ্রমিক জিহাদুল ইসলাম বলেন, কারখানা ছুটি হওয়ার পরপরই যানজটের কথা চিন্তা করে স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে বাড়ি ফিরছেন ঈদ উদযাপন করতে।
শ্রমিক সালমা বেগম বলেন, নাটোর যাওয়ার জন্য সকাল ৭টা থেকে অপেক্ষা করছেন চন্দ্রা এলাকায়। অনেক গাড়ি থাকলেও ভাড়া চাইছে বেশি।
নাওজোর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রইছ উদ্দিন বলেন, মহাসড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে কখনো কখনো জটলার সৃষ্টি হলেও তা খুব একটা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে না। যানজট নিরসনে পুলিশের ৩০০ এবং জেলা পুলিশের ৩০০ সদস্য তিন শিফটে দায়িত্ব পালন করছেন।
বিজ্ঞাপন
অপরদিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কেও সকাল থেকে যানবাহন চলাচল একেবারে স্বাভাবিক। অন্য সময় কিছু কিছু পয়েন্টে যানজট থাকলেও এবার কোথাও যানজটের খবর পাওয়া যায়নি।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) অশোক কুমার পাল বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে গাজীপুর অংশে কোথাও যানজট নেই। যানবাহনগুলো স্বাভাবিক গতিতেই চলছে। যানজট নিরসনে মহানগর পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি রয়েছে। মহাসড়কে কোনো অটোরিকশা যাতে না উঠতে পারে সেজন্য পুলিশ কাজ করছে। এছাড়া সড়কে পুলিশের পাশাপাশি বেশ কিছু সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে।
আমিনুল ইসলাম/এফএ/জিকেএস
বিজ্ঞাপন