ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

হিতকরীর গরুর মাংস পেয়ে খুশি শতাধিক হতদরিদ্র পরিবার

উপজেলা প্রতিনিধি | মিরসরাই (চট্টগ্রাম) | প্রকাশিত: ১২:৪২ পিএম, ২৭ মার্চ ২০২৫

নুন আনতে পান্তা পুরায়, এমন পরিবারের জন্য গরুর মাংস কিনে খাওয়া অসম্ভব। এমন শতাধিক পরিবারকে গরুর মাংস উপর দিলো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা হিতকরী।

বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার আবুতোরাব বাজারে হিতকরী কার্যালয়ের সামনে ভোর থেকে সংগঠনটির সদস্যরা শতাধিক পরিবারের হাতে তুলে দেন গরুর মাংস।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

উপজেলার মায়ানী ইউনিয়নের পশ্চিম মায়ানী গ্রামের মৃত আবদুল ওহাবের ছেলে তারেক হোসেন। ১৪ বছর বয়সে বাবাকে হারিয়েছেন তিনি। পরিবারের একমাত্র সন্তান তারেক। এখনও তার উপার্জনের সক্ষমতা হয়নি। আশপাশের মানুষ যতটুকু সাহায্য সহযোগিতা করে সেগুলো দিয়ে চলে দুই বোন, মা আর নানিকে নিয়ে সংসার।

তারেক হোসেন জানায়, আমরা কখনও কোরবানি দিতে পারি না। কারণ আমাদের ওইটুকু সামর্থ্য নেই। কোরবানি উপলক্ষে আশপাশের মানুষ যা দেয় সেটুকু খেয়ে আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়। কখনও গরুর মাংস কিনে খেতে পারি না। আজ তারা আমাদের গরুর মাংস, মসলা, আলু, পেঁয়াজ দিয়েছেন। সেগুলো পেয়ে খুব আনন্দ লাগছে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

খৈইয়াছড়া ইউনিয়নের পাহাড়ের পাদদেশে বসবাস করা এক দিনমজুরের স্ত্রী বিবি জহুরা জানান, গরুর মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য আমাদের হয়নি। দুই সন্তানের পড়াশোনার খরচ নিয়ে হিমশিম খেতে হয়। পাহাড়ি এলাকা হওয়ায় কেউ কখনো কোরবানির মাংসও দেয় না। দীর্ঘদিন পর সন্তানদের নিয়ে দু’বেলা পেটপুরে খেতে পারবো।

হিতকরীর গরুর মাংস পেয়ে খুশি শতাধিক হতদরিদ্র পরিবার

বিজ্ঞাপন

পশ্চিম খৈইয়াছড়া থেকে আসা প্যাডেলচালিত রিকশাচালক মো. দুলাল বলেন, আমরা গরিব মানুষ। কোনো রকম দিনাতিপাত করছি। গরুর মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। গত বছরও এই সংগঠন থেকে একটি গরুর মাংসের প্যাকেট পেয়েছি। এবারও দিয়েছে। পরিবারে বৌ-বাচ্চা নিয়ে খেতে পারবো।

সংস্থাটির মাংস বিতরণ উপ-কমিটির আহ্বায়ক মামুন নজরুল বলেন, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হিতকরীর কিছু সদস্য ও শুভাকাঙ্ক্ষীর সহযোগিতায় আমরা গত বছরের মতো এবারও শতাধিক পরিবারের মাঝে গরুর মাংস বিতরণ করেছি। অনেকে ২৭ রমজানের আগের রাতে ভালো কিছু রান্না করেন। কিন্তু সমাজে এমন অনেক পরিবার আছে কখনও গরুর মাংস কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। তাই আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াসের মাধ্যমে কিছু পরিবারে মাঝে তুলে দিয়েছি গরুর মাংস। এছাড়া মসলা, আলু ও পেঁয়াজ দেওয়া হয়েছে প্রত্যেক প্যাকেটের সঙ্গে।

২০০১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর হিতকরী সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হয়। সমাজের ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী করতে ‘হিতকরী পাঠগৃহ’, সুবিধাবঞ্চিত মানুষদের নিয়ে ইফতার, আগুনে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা, জেলেপাড়ায় বিচার থেকে বঞ্চিত মানুষকে ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়া, মানসিক রোগীদের সেবা ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করাসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে আসছে সংগঠনটি। শিক্ষার্থীদের এ সংগঠন বর্তমানে দেশ-বিদেশে প্রায় ৩০০ সদস্য নিয়ে নিজেদের অর্থায়নে সমাজ বিনির্মাণে কাজ করছে।

বিজ্ঞাপন

এম মাঈন উদ্দিন/এফএ/জিকেএস

বিজ্ঞাপন