ভিডিও EN
  1. Home/
  2. দেশজুড়ে

ময়মনসিংহে দর্জিপাড়ায় মন খারাপ

মো. কামরুজ্জামান মিন্টু | প্রকাশিত: ১২:৫০ পিএম, ২৪ মার্চ ২০২৫

প্রতিবছর ঈদের কয়েকদিন আগে থেকে ময়মনসিংহের দর্জিপাড়ায় শ্রমিক-কারিগরদের ব্যস্ততা বাড়ে কয়েকগুণ। ব্যস্ততায় দম ফেলার সময় হতো না তাদের। তবে এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। দর্জিপাড়ায় আগের মতো ব্যস্ততা নেই। অনেকটা স্বাভাবিক সময়ের মতোই কাজ করছেন কারিগররা।

শহরের গাঙ্গিনারপাড় হকার্স সুপার মার্কেটের একপাশ দর্জিপাড়া বা দর্জি পট্টি হিসেবে পরিচিত। এই পট্টিতে শতাধিক কারিগর কাজ করেন।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে দেখা যায়, প্রত্যেকটি দোকানে শ্রমিক বাড়ানো হয়েছে। এরমধ্যে গুটিকয়েক দোকানে কাজের ব্যস্ততা থাকলেও অনেক কারিগর ঢিলেঢালাভাবে কাজ করছেন। পোশাক নিয়ে কেউ আসতেই একেক কারিগর একেক দিক থেকে ডাকাডাকি করছেন।

ময়মনসিংহে দর্জিপাড়ায় মন খারাপ

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, ঈদের মাত্র কয়েকদিন বাকি। এখনো কারিগরদের আশানুরূপ ব্যস্ততা বাড়েনি। ঈদ উপলক্ষে দোকানে বাড়তি শ্রমিক রাখা হয়েছে। অনেক দোকানের শ্রমিক অলস সময় পার করছেন।

শহিদুল টেইলার্সের মালিক শহিদুল ইসলাম। দর্জি পট্টিতে ১৪ বছর কারিগর হিসেবে কাজ করছেন। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রতিবছর ঈদের ১৫ দিন আগে থেকে আমাদের ব্যস্ততা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। এসময় থেকে অনেক কারিগর নতুন অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দেন। অথচ আমার দোকানে এখন পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি নতুন থ্রি-পিসের কাজ এসেছে। ধীরে ধীরে কাজ করছি।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, থ্রি-পিস সেলাই বাবদ ৩০০-৩৫০ টাকা, লাইলিং থ্রি-পিস ৬০০, বোরকা ৫০০, পাঁচ পার্টের হিজাব ৬০০, পাঞ্জাবি সেলাইসহ ফিটিং ১৫০-২০০, ব্লাউজ ৩০০, লাইলিং (ব্রা কাটিং) ৫০০ ও প্রতি শার্ট-প্যান্ট তৈরিতে ৫৫০ টাকা নিচ্ছি।

শাহাব উদ্দিন এমব্রয়ডারি অ্যান্ড টেইলার্সের মালিক শাহাব উদ্দিন বলেন, পোশাকের কাজ করাতে লোকজন এখন পর্যন্ত কম আসছেন। ঈদ উপলক্ষে কাজ করে দেওয়ার জন্য প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার টাকা মজুরিতে অনেকে বাড়তি শ্রমিক-কারিগর রেখেছেন। আশানুরূপ লোকজন না এলেও এসব কারিগর ও শ্রমিকদের নির্ধারিত পরিমাণ টাকা ঠিকই দিতে হচ্ছে। ফলে যে দোকানে পোশাকের অর্ডার বেশি আসছে, সে দোকান থেকে পোশাক এনে অন্য দোকানের কারিগররা কাজ করছেন।

ব্যবসা মন্দা হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শপিংমল ও বিপনি-বিতানে ক্রেতাদের অভাব নেই। অনেকে পোশাক কিনে তাদের বাসার আশপাশে থাকা কারিগরদের কাছে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে ব্যবসা কিছুটা খারাপ যাচ্ছে। তবে ব্যবসা হঠাৎ করেই চাঙ্গা হয়ে যেতে পারে। তখন সময়ের অভাবে অর্ডার নেওয়া সম্ভব হয় না। দুয়েকদিনের মধ্যে নতুন জামা নিয়ে আসা লোকজনের পরিমাণ বাড়লে ঈদের চাঁদ রাতের মধ্যেই সবার কাপড় সেলাইসহ ফিটিং করে দেওয়া সম্ভব হবে।

বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহে দর্জিপাড়ায় মন খারাপ]

থ্রি-পিস সেলাই করাতে আসা আফসানা আক্তার জাগো নিউজকে বলেন, শহরের বাঘমারা এলাকায় আমার বাসা। বাসার সঙ্গেই টেইলার্সের দোকান রয়েছে। তবে তাদের সেলাই আমার পছন্দ না। তাই এখানে এসেছি। তবে অনেকে তাদের আশপাশের টেইলার্স থেকে পোশাকের বিভিন্ন কাজ করাচ্ছেন।

পাঞ্জাবি সেলাই করতে আসা জয়নাল আবেদিন বলেন, পাঞ্জাবি কিনে সরাসরি এখানে চলে এসেছি। অন্তত ৪০ বছর এই দর্জি পট্টিতে এসে পরিবারের সবার বিভিন্ন পোশাকের সেলাই করাই। এখানের কারিগররা বেশি দক্ষ থাকায়, দূর থেকেও এখানে লোকজন আসেন। সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন অলিগলিতে টেইলার্সের দোকান গড়ে ওঠাসহ অনেক নারীরা এই কাজ শিখেছেন। তারা পোশাকের নিজের কাজ নিজেরাই সেরে ফেলছে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র সহসভাপতি শংকর সাহা বলেন, শহরের ফুটপাত থেকে শুরু করে শপিংমল ও বিপণি-বিতানগুলোতে পোশাক একচেটিয়া বিক্রি হচ্ছে। সে অনুযায়ী বলা যায়, ক্রেতার সংখ্যা কমেনি। ঈদে দর্জি পট্টিতে দর্জিদের ব্যবসায় কখনো মন্দাভাব আসেনি। কয়েকদিনের মধ্যে সব দর্জিদের ব্যস্ততা কয়েকগুণ বেড়ে গিয়ে সবার মুখে হাসি ফিরবে বলেই মনে করছি। কারণ এখানকার কারিগররা খুবই দক্ষ। তারা সব ধরনের পোশাকে সুক্ষ্মভাবে কাজ করেন।

এমএন/জিকেএস

বিজ্ঞাপন