ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

আসিফ ইকবাল | প্রকাশিত: ০৫:৪৬ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪

বিদায়ী বছরে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) গবেষকরা তাদের গবেষণা এবং নানাবিধ উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের কৃষিখাতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তারা বলছেন, এসব উদ্ভাবন মাঠ পর্যায়ে প্রয়োগ করলে দেশের মানুষ উপকৃত হবে। সঠিকভাবে ব্যবহার করলে নতুন উদ্যোক্তা তৈরির সম্ভাবনাও সৃষ্টি হবে।

বাকৃবির গবেষকদের এসব উদ্ভাবনের মধ্যে রয়েছে উচ্চ ফলনশীল রং-বেরঙের গাজর দেশের আবহাওয়া উপযোগী করে উৎপাদন, দেশেই ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে গবাদিপশুর প্রায় নির্ভুল রোগ নির্ণয়, যা বহির্বিশ্বে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়; ইঁদুরের ওপর ফোরজি তরঙ্গের প্রভাব পর্যবেক্ষণ, উচ্চ অ্যান্থোসায়ানিন যুক্ত বিট রুটের উৎপাদন বৃদ্ধি (ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্যকারী), দেশি শিং মাছের জিনোম সিকুয়েন্স আবিষ্কারের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি, আমলকি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির হিট স্ট্রেস কমানো, অপ্রচলিত উদ্ভিদ থেকে উন্নতমানের খাদ্যসামগ্রী তৈরি, পোলট্রির ব্যাকটেরিয়াঘটিত রোগের বিরুদ্ধে আদা-রসুনের নির্যাসের কার্যকারিতা, গবাদিপশুর ব্রুসেলোসিসের টিকা তৈরি, দেশে ঘোড়ার দেহে প্রাণঘাতী গ্ল্যান্ডার্স রোগের উপস্থিতি নির্ণয়, বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদন এবং দেশে রঙিন মুলার চাষাবাদ নিয়ে গবেষণা।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

উচ্চ ফলনশীল রং-বেরঙের গাজর উৎপাদন

দেশি ও বিদেশি ৮০টি জাতের গাজর নিয়ে গবেষণা করে উচ্চ ফলনশীল গাজরের জাত উদ্ভাবন করেছেন বাকৃবির উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ ও তার গবেষকদল। দেশে প্রচলিত পদ্ধতিতে গাজরের হেক্টরপ্রতি ফলন গড়ে ১০ টন। তবে গবেষণায় উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল গাজরগুলোতে হেক্টরপ্রতি ৩০-৪০ টন ফলন পাওয়া যাবে। ৭০-৮০ দিনেই ফলন পাওয়া যায়। একেকটি গাজরের ওজন ২০০-২৫০ গ্রাম।

গবেষক অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, দেশে শুধু কমলা রঙের গাজর পাওয়া গেলেও লাল, সাদা, হলুদ ও বেগুনি রঙের বিভিন্ন জাতের গাজর দেশে চাষ উপযোগী করা হয়েছে। লাল ও বেগুনি রঙের হওয়ায় গাজরগুলোতে ভিটামিন এ, অ্যান্থোসায়ানিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে বেশি। অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি হৃদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়। রঙিন হওয়ায় গাজরগুলো থেকে প্রাকৃতিক ও নিরাপদ খাবার রং পাওয়া যাবে, যা কেক, আইসক্রিমসহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীতে ব্যবহার করা যাবে।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে গবাদিপশুর নির্ভুল রোগ নির্ণয়

স্বল্প ব্যয় ও অল্প সময়ে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে গবাদিপশুর রক্ত পরজীবী দ্বারা সংঘটিত বিভিন্ন রোগ নির্ণয়ে প্রায় শতভাগ নির্ভুল পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন বাকৃবির প্যারাসাইটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সহিদুজ্জামান ও তার গবেষক দল।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক সহিদুজ্জামান বলেন, দেশে গবাদিপশুতে রক্ত পরজীবী বিশেষ করে বেবিসিয়া, থাইলেরিয়া ও এনাপ্লাজমার দ্বারা সংক্রমিত রোগের প্রাদুর্ভাব উল্লেখযোগ্য। এসব জীবাণুর সংক্রমণে গবাদিপশুর ওজন হ্রাস, রক্তস্বল্পতা ও দুধ উৎপাদন মারাত্মকভাবে হ্রাস পায়। চিকিৎসা সঠিকভাবে ও সঠিক সময়ে না হলে আক্রান্ত পশুর মৃত্যুর ঝুঁকিও থেকে যায়। সাধারণত মাঠ পর্যায়ে এসব রোগের লক্ষণ দেখে আক্রান্ত পশুর চিকিৎসা দেওয়া হয়। যে কারণে চিকিৎসা ভুল হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংক্রমিত পশুর রক্তে জীবাণুর উপস্থিতি নির্ণয়ে অ্যান্টিবডি ও অ্যান্টিজেন পরীক্ষা করা হয়। তবে এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে শতভাগ সঠিক রোগ নির্ণয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। বিশ্বের অনেক দেশে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে গবাদিপশুর রোগ নির্ণয় করা হলেও দেশের মাঠ পর্যায়ে এখনো এ পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়নি। এ পরীক্ষাটি সম্পন্ন হতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে এবং অনেকগুলো নমুনা একসঙ্গে পরীক্ষা করা যায়। প্রতিটি নমুনা পরীক্ষা করতে গড়ে ৫০০-৬০০ টাকা খরচ হয়।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

ইঁদুরের ওপর ফোরজি তরঙ্গের প্রভাব পর্যবেক্ষণ

ফোরজি তরঙ্গের নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেছেন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের অ্যানাটমি অ্যান্ড হিস্টোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম ও সহকারী অধ্যাপক ডা. ইমাম হাসান। ইঁদুরের ওপর পরিচালিত এ গবেষণায় বিরূপ প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে।

সুইস এলবিনো মাইস জাতের ২১টি ইঁদুরকে প্রথমে তিনটি দলে ভাগ করা হয়। প্রথম দল বাদে দ্বিতীয় দলে দৈনিক ৪০ মিনিট ও তৃতীয় দলে দৈনিক ৬০ মিনিট করে ২৪০০ মেগাহার্টজ তরঙ্গ টানা দুই মাস প্রয়োগ করা হয়। তরঙ্গের উৎস হিসেবে একটি ফোরজি মোবাইল কলিং অবস্থায় ইঁদুরগুলোর কাছাকাছি রাখা হয়।

গবেষণায় দেখা যায়, তরঙ্গ সহ্য করা দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলের ইঁদুরের রক্তের গঠন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ পরিবর্তন হয়েছে। শুক্রাণু সৃষ্টিকারী সেমিনিফেরাস নালিকার আকার বড় ও কোষ বিকৃতি হয়ে যাওয়ায় ধীরে ধীরে পুরুষত্বহীনতার দিকে ধাবিত হয়েছে। এছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় দলের ইঁদুরে যকৃতের কেন্দ্রীয় নালিকায় রক্তক্ষরণ হয়েছে, মূত্র সৃষ্টিকারী বৃক্কের গ্লোমেরুলাস সংকুচিত হয়ে গেছে। মস্তিষ্কের স্মৃতিধারণকারী হিপ্পোক্যাম্পাস অংশের কোষের সংখ্যা কমে যাওয়াও প্রমাণিত হয়েছে এ গবেষণায়।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

গবেষণায় দ্বিগুণ হলো সুপারফুড বিটরুটের ফলন

সুপারফুড ‘বিটরুট’-এর ফলন বাড়ানোর বিষয়ে গবেষণা করেছেন উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ড. হারুন অর রশিদ এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী ফাতেমাতুল বুশরা।

যুক্তরাজ্য থেকে আনা বিটরুটের জাত বোল্টার্ডি এবং দেশীয় দুটি হাইব্রিড জাত হার্টবিট ও রেডবেবি নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। তিনটি জাতেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নিরাপদ মাত্রার বিভিন্ন ডোজে জিব্বেরেলিন নামের গ্রোথ প্রোমোটার বা উদ্ভিদের বৃদ্ধিকারক হরমোন ও সুষম মাত্রায় জৈবসার ব্যবহার করা হয়েছে।

প্রকল্পটির তত্ত্বাবধায়ক অধ্যাপক ড. হারুন বলেন, দেশে বিটরুটের গড় ফলন প্রতি হেক্টরে ১২-১৫ টন। নিরাপদ মাত্রায় গ্রোথ প্রোমোটার ব্যবহার করে ওই তিনটি জাতের বিটরুটের গড় ফলন পাওয়া গেছে প্রতি হেক্টরে ২৫-৩০ টন। সুষম মাত্রায় জৈবসার এবং গ্রোথ প্রোমোটার সহনশীল ও নিরাপদ মাত্রায় ব্যবহার করা হয়েছে বিধায় এতে কোনো স্বাস্থ্যঝুঁকি নেই বলেও জানান তিনি।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

অপ্রচলিত উদ্ভিদকে খাদ্যদ্রব্যে রূপান্তর

বাকৃবির মাঠ পর্যায়ের কৃষি নিয়ে কাজ করেন এমন গবেষকের সন্ধান করলে সবার আগে যার নাম আসবে, তিনি হলেন ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির। শিমুল আলু, চুকুর, ফ্রেঞ্চ বিনসহ নানাবিধ উদ্ভিদ নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং মাঠ পর্যায়ে সেগুলোকে ব্যবহার উপযোগীও করে তুলেছেন তিনি।

শিমুল আলু (কাসাভা), চুকুর (রোজেল), অড়হরসহ বিভিন্ন উদ্ভিদ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের গবেষণা করেছেন ড. ছোলায়মান। এসব উদ্ভিদ থেকে তিনি উন্নতমানের খাদ্যসামগ্রী উৎপাদন করেছেন। চিপস, চপ, কেক, পাকোড়া, পুডিংসহ নানাবিধ মুখরোচক খাদ্য এসব উদ্ভিদ থেকে উন্নয়ন করেছেন এই গবেষক।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

দেশি শিং মাছের জিনোম সিকুয়েন্স উন্মোচনের মাধ্যমে উৎপাদন বৃদ্ধি

দেশে প্রথমবারের মতো দেশি শিং মাছের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন এবং স্ত্রী-পুরুষ শিং মাছের লিঙ্গ নির্ধারণকারী সম্ভাব্য জিন শনাক্তকরণে সফলতা পেয়েছেন গবেষকরা। বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ বায়োলজি ও জেনেটিক্স বিভাগের অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানমের নেতৃত্বে এ গবেষণা চালানো হয়।

গবেষক ও অধ্যাপক ড. তাসলিমা খানম জানান, ড্রাফট জিনোম ব্যবহার করে সম্ভাব্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন শনাক্তকরণ সম্ভব হয়েছে, যা যেকোনো দেশীয় মাছের ক্ষেত্রে প্রথম।

কিছু মাছের ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদে স্ত্রী ও পুরুষ মাছের দৈহিক বৃদ্ধির পার্থক্য লক্ষ্য করা যায় জানিয়ে বাকৃবির এই গবেষক বলেন, শিং মাছ তার অন্যতম উদাহরণ। স্ত্রী শিং মাছের বৃদ্ধি পুরুষ মাছ অপেক্ষা ৪০-৬০ শতাংশ বেশি হয়ে থাকে। এ মাছের বাণিজ্যিক উৎপাদন বাড়ানোর জন্য তেলাপিয়ার ন্যায় মনোসেক্স (হরমোন প্রয়োগ করে নির্দিষ্ট লিঙ্গে রূপান্তর) অন্যতম উপায় হিসেবে মনে করা হয়। সফলভাবে মনোসেক্স শিং মাছ উৎপাদনের জন্য লিঙ্গ নির্ধারণকারী জিন শনাক্তকরণ জরুরি।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

আমলকি ব্যবহারের মাধ্যমে ব্রয়লার মুরগির হিট স্ট্রেস কমানো

প্রাকৃতিক উপায়ে আমলকির নির্যাস বা পাউডার ব্যবহারে তীব্র তাপপ্রবাহে ব্রয়লারের হিট স্ট্রেস কমানোসহ উচ্চ তাপমাত্রায় ব্রয়লারের খাদ্যগ্রহণের পরিমাণও বাড়বে বলে জানান প্রাণরসায়ণ ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. চয়ন গোস্বামী, পোলট্রি বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. বাপন দে এবং প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক কামরুল হাসান কাজল।

আমলকি ব্যবহারে উচ্চ তাপমাত্রায় ব্রয়লারের ওপর হিট স্ট্রেসের প্রভাব কমানোর পদ্ধতি নিয়ে অধ্যাপক ড. চয়ন গোস্বামী বলেন, দ্রুত বিপাকীয় হার এবং ঘর্মগ্রন্থি না থাকার কারণে ব্রয়লার হিট স্ট্রেসে বেশি আক্রান্ত হয়। উচ্চ তাপমাত্রায় মুরগির শরীরে প্রচুর পরিমাণ ফ্রি রেডিক্যাল ও রিয়েক্টিভ অক্সিজেন স্পিসিস উৎপন্ন হয়; যা শরীরে প্রোটিন, লিপিড এবং শক্তি উৎপাদন হ্রাস করে। কিন্তু আমলকিতে উপস্থিত অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এসব ফ্রি রেডিক্যাল ও রিয়েক্টিভ অক্সিজেন স্পিসিসের উৎপাদন ত্বরান্বিত করে।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

পোলট্রির রোগ নিরাময়ে আদা-রসুনের নির্যাসের কার্যকারিতা

আদা ও রসুনের নির্যাসে পোলট্রির রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া ই-কোলাই এবং সালমোনেলার বিরুদ্ধে কার্যকারিতা পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ফেলোশিপের অর্থায়নে গবেষণাটি করা হয়েছে। গবেষক দলে রয়েছেন ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহমূদুল হাসান শিকদার, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদের (বিসিএসআইআর) সায়েন্টিফিক অফিসার জাকারিয়া আল নোমান প্রমুখ।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

গবাদিপশুর ব্রুসেলোসিসের টিকা তৈরি

গবাদিপশু প্রতি মাত্র ৫০-১০০ টাকা মূল্যের ব্রুসেলোসিসের ভ্যাকসিন তৈরি করেছেন ভেটেরিনারি অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম এবং তার গবেষক দল।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

দেশে প্রথমবারের মতো ঘোড়ার দেহে প্রাণঘাতী গ্ল্যান্ডার্স রোগের উপস্থিতি নির্ণয়

ঘোড়ার একটি অতিপ্রাচীন ও মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ ‘গ্লান্ডার্স’। এই রোগ ঘোড়া থেকে মানুষে সহজে ছড়াতে পারে। বাংলাদেশে গ্লান্ডার্সের উপস্থিতি নির্ণয় এবং কোন কোন ফ্যাক্টর এ রোগের ঝুঁকি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে তা জানতে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন দুই গবেষক। গবেষণায় দেশের ঘোড়াগুলোর মধ্যে গ্লান্ডার্সের উপস্থিতি মিলেছে।

গবেষণায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের জ্যেষ্ঠ অধ্যাপক ড. সিদ্দিকুর রহমান। তার সঙ্গে রয়েছেন একই বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে আনিসুর রহমান ও সেনাবাহিনীতে কর্মরত কর্নেল পলাশ কুমার ভট্টাচার্য।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদন

স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বন্য খেজুর থেকে ভিনেগার উৎপাদনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা বাংলাদেশের খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের জন্য একটি নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফুড টেকনোলোজি ও গ্রামীণ শিল্প বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান মজুমদার ও তার গবেষক দল এমনটাই দাবি করেছেন।

অধ্যাপক আনিছুর রহমানের নেতৃত্বে বাকৃবি, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (সিকৃবি) ও ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (ডুয়েট) আরও ছয়জন গবেষক এই প্রকল্পে যুক্ত ছিলেন।

বিদায়ী বছরে কৃষি গবেষণায় বাকৃবির ১২ সাফল্য

দেশে রঙিন মুলার চাষাবাদ নিয়ে গবেষণা

দেশে রঙিন জাতের মুলা নিয়ে গবেষণা করছেন উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. হারুন অর রশিদ। এসব মুলা সঠিকভাবে চাষ করা যায় কি না তা জানার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চাষও করেছেন।

তিনি বলেন, মুলা সাধারণত শীতকালীন সবজি হিসেবে সুপরিচিত। আমাদের দেশে এই রঙিন মুলা চাষ করে শীত মৌসুমে মাত্র ২৫-৩০ দিনেই ফলন পাওয়া সম্ভব। দেশে প্রচলিত জাতগুলোর ফলন পেতে অন্তত ৪০-৪৫ দিন অপেক্ষা করতে হয়। এক মৌসুমে কমপক্ষে তিনবার ফলন পাওয়া যেতে পারে এই গোলাকার রঙিন মুলার।

অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, সাধারণত আমেরিকা ও ব্রিটেনে গোলাকার রঙিন মুলার গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ১৮-২০ টন। তবে আমাদের এই গোলাকার রঙিন মুলার হেক্টরপ্রতি ফলন প্রায় ১৫-১৮ টন পর্যন্ত পাওয়া গেছে। একেকটির গড় ওজন ৭০-৮০ গ্রাম।

এসআর/এমএস