ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

দেশে রঙিন মুলার চাষ নিয়ে গবেষণা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) | প্রকাশিত: ০৮:১৩ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশে রঙিন জাতের মুলা নিয়ে গবেষণা করছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ। এই মুলাগুলো সঠিকভাবে চাষ করা যায় কি না তা জানার জন্য পরীক্ষামূলকভাবে চাষও করেছেন।

এ বিষয়ে অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ বলেন, আমরা যে মুলা নিয়ে গবেষণা করেছি সেটি রঙিন বর্ণের। এখানে বেগুনি, লাল, গোলাপি, লাল-সাদা মিক্সচার কালারের জাত রয়েছে। বাংলাদেশে সাধারণত লম্বা আকৃতির মুলা পাওয়া গেলেও দেশে প্রথমবারের মতো আটটি রঙিন গোলাকার ও ডিম্বাকৃতির জাত এবং ছয়টি রঙিন লম্বা বিদেশি জাত এবং ৩টি দেশি জাতসহ মোট ১৭টি দেশি-বিদেশি রঙিন জাতের মুলা নিয়ে গবেষণা করছি।

গবেষণার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদেশে বিশেষ করে আমেরিকা, ইউরোপ, ব্রিটেন ও জাপানে রঙিন গোলাকার মুলাকে সালাদ মুলা হিসেবে খাওয়া হয়। তবে আমাদের দেশের আবহাওয়ায় এবং মাটিতে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ এই রঙিন জাতের মুলাগুলো সঠিকভাবে চাষাবাদ করা যায় কি না তা জানার জন্যই এই পরীক্ষামূলক গবেষণা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বেশিরভাগ মানুষ মুলা সবজি হিসেবে রান্না করে খায়। তবে কেউ কেউ মুলার ঝাঁজ এবং হালকা গন্ধের জন্য কাচা খেতে পছন্দ করে না। তবে গোলাকার রঙিন মুলায় হালকা ঝাঁজ থাকলেও কাঁচা খেলে মুখে কোনো গন্ধ তৈরি হবে না। রং ও আকৃতির কারণে দেখতে আকর্ষণীয় হওয়ায় শসার বিকল্প হিসেবে এই মূলাগুলোকে সালাদ হিসেবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা যাবে।

দেশে রঙিন মুলার চাষ নিয়ে গবেষণা

অধ্যাপক ড. মো. হারুন অর রশিদ রঙিন মুলার গুণাবলি নিয়ে জানান, যেহেতু এটি রঙিন বর্ণের সেহেতু এটি এন্থোসায়ানিন ও এন্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ। এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় এই মুলা মানুষের ডায়াবেটিস কমাবে, রক্তের সুগার ব্যাপকভাবে কমাবে, কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাবে, উচ্চ রক্তচাপ কমাবে, অতি নিম্ন ক্যালরির হওয়ায় ডায়েটের জন্য এটি খুবই আদর্শ। এই মুলাতে ওরাল এন্টিকার্সিনোজেনিক কম্পাউন্ড থাকে যা মানবদেহের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়া এতে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম এবং ফাইবার রয়েছে।

তিনি বলেন, মুলা সাধারণত শীতকালীন সবজি হিসেবে সুপরিচিত। আমাদের এই রঙিন মুলার ক্ষেত্রে শীতের মৌসুমে মাত্র ২৫-৩০ দিনেই ফলন পাওয়া সম্ভব। দেশে প্রচলিত জাতগুলোর ফলন পেতে অন্তত ৪০-৪৫ দিন অপেক্ষা করতে হয়। এক মৌসুমে কমপক্ষে তিনবার ফলন পাওয়া যেতে পারে এই গোলাকার রঙিন মুলার। সাধারণত আমেরিকা ও ব্রিটেনে গোলাকার রঙিন মুলার গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ১৮-২০ টন। তবে আমাদের এই পরীক্ষামূলক গবেষণায় গোলাকার রঙিন মুলার হেক্টরপ্রতি ফলন প্রায় ১৫-১৮ টন পর্যন্ত পাওয়া গেছে এবং মুলাপ্রতি গড় ওজন পাওয়া গেছে ৭০-৮০ গ্রাম।

অধ্যাপক হারুন বলেন, পরীক্ষামূলকভাবে এই গবেষণাটি আমরা সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নেই করেছি। তবে রঙিন মুলার জাত নির্বাচন, জাত উন্নয়ন, পুষ্টিগুণ নির্ণয়ের জন্য সরকারি-বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই রঙিন মুলা নিয়ে বিশদ গবেষণা ও বিশ্লেষণ করতে পারবো।

আসিফ ইকবাল/জেডএইচ/এএসএম