শেকৃবিতে সামাজিক পরিবেশের অবনতি, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ
রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শেকৃবি) সম্প্রতি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের মাধ্যমে শব্দদূষণ বেড়ে যাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সেখানকার সাধারণ শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অনেকে।
চলতি বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রমের আয়োজন বেড়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, সম্প্রতি এসব আয়োজনের অনেকগুলো থেকেই ব্যাপক শব্দদূষণ ও বিজাতীয় সংস্কৃতি বিস্তৃতির ঘটনা বেড়ে চলেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের উন্মুক্ত মাঠটি দুটি আবাসিক হলের মাঝামাঝি অবস্থিত হওয়ায় হলের বাসিন্দাদের ঘুম, পড়াশোনা ও নামাজে ব্যাঘাত ঘটে।
হতাশা প্রকাশ করে একাধিক শিক্ষার্থী বলেন, অন্তত নামাজের সময়ে লাউডস্পিকারে গান বাজানো বন্ধ রাখা যায়। কিন্তু ইদানীং নামাজের সময়ও বিরতি দেওয়া হচ্ছে না। আবার অনেক প্রোগ্রামেই লাউডস্পিকারে বাজানো হচ্ছে হিন্দি ভাষার অশ্লীল শব্দচয়নের গানগুলো।
এদিকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলোর জন্য ছাত্রীদের হলে প্রবেশের সময়সূচি বর্ধিত করা হয়। এ সুযোগে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থানে কিছু শিক্ষার্থী আপত্তিকরভাবে অবস্থান করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নিরাপত্তাকর্মী অভিযোগের সুরে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এমন আপত্তিকর অবস্থায় দেখা আমাদের জন্য খুবই বিব্রতকর। যেহেতু তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাই আমরা তাদের বাধা দিতেও সাহস পাই না। আবার সবাই বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষার্থী নাকি বাহির থেকে কেউ এসে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাচ্ছেন এটা নিয়েও আমাদের চিন্তিত থাকতে হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল ও নবাব সিরাজউদ্দৌলা হলের মাঝের ফাঁকা জায়গায় মুক্তমঞ্চ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। কিন্তু মুক্তমঞ্চ নির্মাণ হলে শব্দদূষণে স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ওই দুই হলের শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্র পরামর্শক অধ্যাপক ড. আসাবুল হক বলেন, বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। ফেসবুকেও এ নিয়ে আলোচনা চলছে। অনেকের পড়াশোনায় সমস্যা হওয়ায় শিগগিরই সংগঠনগুলোর সঙ্গে বসে সমাধানের পথ খুঁজবো এবং প্রয়োজনে টিএসসি অডিটোরিয়াম ব্যবহার করার বিষয়টি বিবেচনা করবো। এখানে আমরা সবাই শিক্ষিত। অশ্লীল কন্টেন্ট ব্যবহারের কোনো যুক্তি আসে না। ভবিষ্যতে এসব নিয়ে প্রশাসন কাজ করবে। উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণে সবাই মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এছাড়া প্রোগ্রামে অংশগ্রহণকারীদের অনেক রাত পর্যন্ত বাইরে থাকার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে হলে প্রবেশের ছাড় দেওয়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানান ড. আসাবুল হক।
এএমএ/এমএইচআর/এএসএম