জবির ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের দায়িত্ব নিলো আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপসহ অস্থায়ী ভিত্তিতে ৭০০ জনকে আবাসনের জন্য আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে উপাচার্য কনফারেন্স রুমে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহর উপস্থিতিতে এ চুক্তি সই করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সমঝোতা স্মারকের তথ্য থেকে জানা যায়, প্রাথমিক অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০০ শিক্ষার্থীর জন্য ঢাকার কেরানীগঞ্জে অবস্থিত বুড়িগঙ্গা তীরে বসুন্ধরা রিভারভিউয়ে এ আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। শিক্ষার্থীদের ফলাফল, দরিদ্রতা, আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ১০০ শতাংশ, ৭৫ শতাংশ, ৫০ শতাংশ, ২৫ শতাংশ স্কলারশিপের ব্যবস্থা করা হবে। অস্থায়ী আবাসনে উন্নতমানের লাইব্রেরি সুবিধা ও কম্পিউটার ল্যাব থাকবে। শিক্ষার্থী ভাষাগত দক্ষতার জন্য আইইএলটিএসের ব্যবস্থা ও নানা ধরনের সফট স্কিলের অর্জনের জন্য সরকার অনুমোদিত বিভিন্ন ধরনের শিক্ষা-প্রশিক্ষণ কোর্স সুবিধা দেওয়া হবে। আবাসনের যাবতীয় ব্যয় আস-সুন্নাহ বহন করবে। তবে অস্থায়ী আবাসন থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াতের পরিবহন ব্যয় বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে।
এ বিষয়ে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, দীর্ঘদিন ধরে আমরাও এ রকমের একটি প্রজেক্ট নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছিলাম। এদিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও শিক্ষার্থীদের আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। দুই পক্ষের চাওয়া মিলে যাওয়ায় আজ আমাদের কার্যক্রম এ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, আমাদের এ প্রজেক্টে শুধু আবাসনের সমস্যাই সমাধান করা হবে না এটা দ্বারা শিক্ষার্থীদের একজন শিক্ষার্থী দেশের শ্রেষ্ঠ মানবসম্পদে পরিণত হবে। আমরা চাই এই হলে কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে না সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে বলে আশা রাখি।
আহমাদুল্লাহ বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করার এই যাত্রা আমরা ৫ হাজারে উন্নীত করতে চাই। শুধু জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ই নয়, দেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকট সমাধানে সব ধরনের কাজ করে যাব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে যোগদান করার পরই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসন করা। সে সংকট নিরসনে আমরা প্রাথমিক অবস্থায় অস্থায়ী আবাসন ব্যবস্থার জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছিলাম আজ থেকে এক মাস আগে। ওই কমিটি গঠন করার পর থেকেই কমিটির সদস্যরা দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে ভবন খুঁজতে থাকে। একই সাথে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সাথে যোগাযোগ করে। আলহামদুলিল্লাহ দীর্ঘ এক মাস আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আজ ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। সেজন্য আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়েখ আহমাদুল্লাহসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।
একই সঙ্গে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকেও নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আবাসনের জন্য কাজ চলমান। আশা করি দ্রুত অনেক বড় একটি সুসংবাদ দিতে পারবো শিক্ষার্থীদের। আজকে এই এমওইউ এর মাধ্যমে আস সুন্নাহর সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যে যাত্রা শুরু হলো এ ধারা আমাদের অব্যাহত থাকবে বলে আশা রাখি।
১২ নভেম্বর অনুষ্ঠিত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবাসিক সংকট সাময়িক নিরসনের উদ্দেশ্যে দেশি-বিদেশি অনুদান পাওয়ার বিষয়ে ৩ ডিসেম্বর কমিটি গঠন করে প্রশাসন। পরে দেশের সবচেয়ে প্রসিদ্ধ ও গ্রহণযোগ্য জনকল্যাণমুখী প্রতিষ্ঠান আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে এমওইউ সই হয়েছে।
আরএএস/এমআরএম/এএসএম