বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর নিয়োগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের লঙ্কাকাণ্ড
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) সদ্য প্রক্টর নিয়োগ নিয়ে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সাবেক প্রক্টর কামরুজ্জামানসহ ১০ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে এই ঘটনা ঘটে। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক ড. মো. কামরুজ্জামানকে প্রক্টর থেকে বাদ দিয়ে ড. আরিফুজ্জামান রাজিবকে প্রক্টর ও আরও পাঁচ শিক্ষককে সহপ্রক্টর করে নতুন প্রক্টরিয়াল বডি ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এতে কামরুজ্জামানপন্থি গ্রুপের শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। মিছিলটি ভিসির বাসভবনের সামনে গেলে আরিফুজ্জামান গ্রুপের শিক্ষার্থীরা বাধা দেন। এতে দুই পক্ষের শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রথমে কথা কাটাকাটি ও পরে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
এ সময় শিক্ষকরা এগিয়ে গেলে তাদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে সাবেক প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামানসহ ১০ শিক্ষক ও শিক্ষার্থী আহত হন। পরে আহতদের উদ্ধার করে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
নতুন প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামানপন্থি এক শিক্ষার্থী জানান, নিয়মানুযায়ী নতুন প্রক্টর হিসেবে আরিফুজ্জামান স্যারকে নিয়োগ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে প্রতিবাদ জানিয়ে একটা অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করার কি প্রয়োজন। আমরা এই কথা বলা মাত্রই আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে কামরুজ্জামান স্যারের প্রিয় শিক্ষার্থীরা।
আহত এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আমাদের প্রতিবাদ জানিয়েছি। কারণ ড. আরিফুজ্জামান বঙ্গবন্ধু পরিষদের নেতা। আমরা কোনো স্বৈরাচারের দোসরদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে দেখতে চাই না। এই প্রতিবাদ জানিয়ে আমরা একটি মিছিল বের করে ভিসির বাসভবনের সামনে গেলে ড. আরিফুজ্জামান স্যারের পক্ষের শিক্ষার্থীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষকরা ছুটে এলে শিক্ষার্থীদের ছোড়া ইটে বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হন।
সাবেক প্রক্টর ড. মো. কামরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। বেশ কয়েকটি ইট আমার গায়ে লেগেছে, এতে আমি কিছুটা আহত হয়েছি।
নতুন প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান বলেন, আমি এ বিষয়ে কোনো কথা বলবো না। ভিসি স্যার আছেন তিনি বিষয়টি দেখবেন।
গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হোসেন উদ্দিন শেখর বলেন, এখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডে হস্তক্ষেপ করেছে, এটা ঠিক নয়। এতে প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনায় কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। রাতের ঘটনায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আশিক জামান অভি/এফএ/এএসএম