ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

গণপিটুনিতে ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু, ছাত্রদলের ৫ জন শনাক্ত

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৯:২৯ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) নিরাপত্তা অফিসের তালা ভেঙে গণপিটুনিতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম মোল্লা ওরফে পিস্তল শামীমের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় একটি ভিডিও ফুটেজ থেকে প্রাথমিকভাবে ছাত্রদলের পাঁচজনকে শনাক্ত করা গেছে। তারা হলেন সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া, রাজু আহমেদ এবং রাজন হাসান, হামিদুল্লাহ সালমান এবং এম এন সোহাগ।

সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ৩৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। বাকিদের মধ্যে রাজু আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ৪৫তম ব্যাচ, রাজন হাসান ৪৬তম ব্যাচ, হামিদুল্লাহ সালমান ইংরেজি ৪৮তম ব্যাচ এবং এম এন সোহাগ কম্পিউটার সায়েন্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। এই চারজন ক্যাম্পাসে ছাত্রদল কর্মী হিসেবে পরিচিত।

ঘটনাস্থলে রাজন হাসানের গায়ে হাফহাতা লাল রঙের শার্ট, সোহাগের গায়ে সাদা টি শার্ট ও চোখে চশমা, রাজুকে চেক শার্ট, হামিদুল্লাহ সালমানকে হাফহাতা শার্ট এবং জিন্স প্যান্ট ও শার্ট পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে সাঈদ হোসেন ভূঁইয়াকে।

এ বিষয়ে হামিদুল্লাহ সালমান জাগো নিউজকে বলেন, ‘সন্ধ্যায় আমি হলে ছিলাম। খবর পেয়ে প্রক্টর অফিসে যাই। তখন দেখি তাকে (নিহত শামীম মোল্লা) পুলিশের গাড়িতে ওঠাচ্ছে। আমি তাকে পেছন থেকে ধাক্কা দিতে গিয়েও দিতে পারনি।’

জড়িত থাকার বিষয়ে রাজু আহমেদ বলেন, ‘সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শোনার পর সেখানে গেছিলাম। সেখানে গিয়ে আমি তাকে কয়েকবার ধমক দিই কিন্তু গায়ে হাত তুলিনি।’

রাজন হাসান বলেন, ’আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম কিন্তু মারার জন্য সেখানে যাইনি। যারা তালা ভাঙার চেষ্টা করছিল তাদের আমি নিষেধ করেছিলাম।’

মারধরের সম্পৃক্ততার বিষয়ে সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘একজন সাবেক শিক্ষার্থী হিসেবে আমি দেখতে গিয়েছিলাম। কেউই হত্যার উদ্দেশ্যে তাকে মারধর করেনি। একজন মানুষ যিনি হেঁটে পুলিশের গাড়িতে উঠেছেন আর কিছুক্ষণের মধ্যে মারা গেছে, এর রহস্য উদঘাটন করা জরুরি।’

জড়িত থাকার বিষয় জানতে চাইলে সোহাগ জাগো নিউজকে বলেন, ‘প্রান্তিক গেট হয়ে টিউশন থেকে ফিরছিলাম। পথে প্রক্টর অফিসের সামনে হইচই দেখে সেখানে গেছিলাম কিন্তু মারধর করিনি। আমি ছাত্রদলের সঙ্গেও জড়িত নই। একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে সেখানে যাই।’

শাখা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সোহেল রানা বলেন, ‘সাঈদ হোসেন ভূঁইয়া সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমি এখন আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি না থাকায় বাকিদের কথা সঠিক বলতে পারবো না।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক রাশিদুল আলম বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে একটি কমিটি করে সুষ্ঠু তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তদন্ত শেষে বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রের প্রচলিত আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এরআগে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী শামীম মোল্লা ওরফে পিস্তল শামীমকে প্রান্তিক গেট এলাকায় দেখা যায়। পরে শিক্ষার্থীরা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অফিসে নিয়ে আসেন। প্রক্টরিয়াল বডি বিষয়টি পুলিশকে জানায়। প্রায় তিন ঘণ্টা পর প্রক্টর অফিসে আসে পুলিশ। এরইমধ্যে অনেক শিক্ষার্থী চলে আসেন। প্রক্টরিয়াল টিম কয়েকবার চেষ্টা করেও তাদের আটকাতে ব্যর্থ হয়। এসময় গণপিটুনির শিকার হন শামীম।

রাত সোয়া ৮টার দিকে শামীমকে পুলিশে হস্তান্তর করা হয়। সাড়ে ১১টার দিকে জানা যায়, শামীম মারা গেছেন। যদিও পুলিশ বিষয়টি রাত ১২টার দিকে আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলিতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন শামীম মোল্লা। এমনকি ওই রাতে বহিরাগত সন্ত্রাসী ভাড়া করে আনাতেও তার ভূমিকা ছিল। মাদক সংক্রান্ত একাধিকবার গুলি ও হামলার ঘটনাতেও অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা শামীম। সাভার-আশুলিয়ায় ত্রাসের রাজত্ব ছিল তার। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তার কর্মকাণ্ডের জন্য ৫ আগস্টের পর আশুলিয়া থানায় তার নামে চারটি হত্যা মামলা হয়েছে।

সৈকত ইসলাম/এসআর/জেআইএম