ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

ছাত্রলীগের সমাবেশ ঘিরে ঢাবি ক্যাম্পাসে মাইকিং

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক | ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ১২:৩৭ এএম, ৩১ মার্চ ২০২৪

মৌলবাদী গোষ্ঠীর কালোছায়া থেকে মুক্ত করে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) নিয়মতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির দাবি এবং বুয়েট কর্তৃক গৃহীত অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থি, শিক্ষাবিরোধী সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রোববার (৩১ মার্চ) বেলা ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করবে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। এ উপলক্ষে ক্যাম্পাসজুড়ে মাইকিং করছে সংগঠনটির নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগের সমাবেশ উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মলচত্বর, টিএসসি, মুক্তি ও গণতন্ত্র তোড়ন, ভিসি চত্বর, হলপাড়াসহ সব গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে এ মাইকিং করা হয়।

মাইকিংয়ে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ সমাবেশে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে বলা হয়, রোববার বেরা ১১টায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশ। বুয়েট কর্তৃপক্ষের গণতন্ত্র ও সংবিধান পরিপন্থি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাতে ছাত্রলীগের প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবাদ সমাবেশে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, গণতন্ত্রে বিশ্বাসী সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করার জন্যে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে শনিবার (৩০ মার্চ) সন্ধ্যায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিবাদ সমাবেশের কথা জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা বলেন, ২৯ মার্চ বুয়েট কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের আবাসিক হলের বরাদ্দকৃত সিট বাতিল ঘোষণা করার সিদ্ধান্তকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-গণতন্ত্রকামী মানুষ ও ছাত্রসমাজ চূড়ান্তভাবে প্রত্যাখ্যান করছে। বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ বুয়েট প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে একটি অন্যায্য, অসাংবিধানিক, মৌলিক অধিকার পরিপন্থী ও সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক নৈতিক স্খলনজনিত শিক্ষাবিরোধী কর্মকাণ্ড হিসেবে আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

তারা বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও এই রাষ্ট্রে সাধারণের শিক্ষার অধিকার একটি গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের মাধ্যমে অর্জিত হয়েছে, যার নেতৃত্ব দিয়েছে এ দেশের ছাত্রসমাজ। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, সাম্প্রতিককালে সংবিধানসম্মত ছাত্র রাজনীতি নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়টিতে এমন কিছু কর্মকাণ্ড পরিচালিত হচ্ছে, আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছে যা ৩০ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের মহান সংবিধানের চূড়ান্ত লঙ্ঘন।

নেতারা বলেন, তা না করে, এই আইনের কোথাও ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা বুয়েটকে প্রদান করা না হলেও বুয়েট প্রশাসন বেআইনি ও অসাংবিধানিকভাবে তা বাস্তবায়ন করছে। মূলধারার প্রকাশ্য ছাত্র-রাজনীতি নিষিদ্ধের এই প্রচেষ্টার মাধ্যমে বুয়েটকে দেশ ও বিশ্ব মানবতাবিরোধী নিষিদ্ধ, অন্ধকার জগতের বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকাণ্ড পরিচালনার তীর্থস্থানে পরিণত করা হয়েছে। টাঙ্গুয়ার হাওড়ে জঙ্গি আস্তানায় গোপন মিটিং, শিক্ষার্থীদের অফিসিয়াল মেইলে জঙ্গিবাদের প্রচারণা, ক্যাম্পাসে কিউ কোডের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালানো, বিশ্ববিদ্যালয় পরিমণ্ডলে শ্রেণিকক্ষে মহান স্বাধীনতাকে কটাক্ষ ইত্যাদি কর্মকাণ্ড বুয়েটকে তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য থেকে পশ্চাৎ দিকে ধাবিত করছে।

ছাত্রলীগের দুই শীর্ষ নেতা বলেন, বুয়েট প্রশাসন ইমতিয়াজ হোসেন রাহিমের বরাদ্দকৃত সিট বাতিলের মাধ্যমে তার সংগঠন করার সাংবিধানিক অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩৮) প্রয়োগ করতে বাধা সৃষ্টি করেছে। এটি একই সঙ্গে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২৭ (আইনের দৃষ্টিতে সমতা), অনুচ্ছেদ ৩১ (আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার), অনুচ্ছেদ ৩২(জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতায় অধিকার-রক্ষণ), অনুচ্ছেদ ৩৬ (চলাফেরার স্বাধীনতা), অনুচ্ছেদ ৩৭ (সমাবেশের স্বাধীনতা) ও অনুচ্ছেদ ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাকস্বাধীনতা) এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

সাম্প্রতিক বছরে বুয়েটের একজন মেধাবী শিক্ষার্থীর অনাকাঙ্ক্ষিত, দুঃখজনক ও মর্মান্তিক মৃত্যু এ দেশের প্রতিটি মানুষের হৃদয়কে গভীরভাবে ছুঁয়ে গেছে, ব্যথিত করেছে। এই ঘটনায় জড়িতদের দেশের প্রচলিত আইনে বিচার সম্পন্ন করা হয়েছে। দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বহু বছর ধরে সন্ত্রাসজনিত কারণে বহু মেধাবী শিক্ষার্থীর প্রাণ অকালে ঝরে গেছে। একই সঙ্গে এদেশের মহান স্বাধীনতা, ভাষা ও ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র ও মুক্তির সংগ্রামে এদেশের বহু শিক্ষার্থী অকাতরে তাদের জীবন বিলিয়ে দিয়েছে, অনেকের প্রাণ হরণ করা হয়েছে।

হাসান আলী/এমআইএইচএস