ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

শেকৃবি

পানি সমস্যায় ভোগান্তিতে শেকৃবির ১২০০ শিক্ষার্থী

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৯:২৮ এএম, ৩০ মার্চ ২০২৪

রাজধানীর শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে পানি সমস্যায় ভুগলেও কোন প্রকার স্থায়ী সমধান করতে পারছে না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বারবার আশ্বস্ত করলেও ৫ বছরে স্থায়ী কোনো সমাধান মেলেনি। এমনকি ১০তলা বিশিষ্ট আবাসিক হলটির ১২শ শিক্ষার্থীদের রমজানের সেহেরী ও ইফতারের সময় চরম বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

সরেজমিন ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হলটিতে প্রায়ই ওয়াশরুমে পানি থাকে না। গোসল এবং ওয়াশরুমে পানির জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। শুক্রবার নামাজের আগে পানি থাকবে না এটাই যেন এখানকার নিয়ম। এই রমজান মাসেও ২/১দিন পরপরই সেহরী-ইফতারের সময়ে পানি থাকে না। শিক্ষার্থীরা ওয়াশরুম ও গোসল করার জন্য এক ব্লক থেকে অন্য ব্লকে ছুটে যায় পানির জন্য। রোজায় যেসব ব্যাচের ফাইনাল পরীক্ষা চলছে সেসব শিক্ষার্থীরা আরও বেশি ভোগান্তির স্বীকার হচ্ছেন।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বারবার হল প্রভোস্টের কাছে এ বিষয়ে সুরাহা চাইলে আশ্বাস দিলেও স্থায়ী সমাধান করা হয়নি। গত ৩ মেয়াদে হলটির প্রভোস্টদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি ছিল হলের পানি সংকট সমাধান করা। তবে তাদের কেউই পানির সমস্যা সমাধানে কোনো ভূমিকা রাখতে পারেননি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্পগুলোতে কোটি কোটি টাকা খরচ হচ্ছে, অথচ হলে পানি সংকটের মত মৌলিক সমস্যা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উদাসীন।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা বিভিন্ন সময় হলের এই পানি সমস্যার বিষয়টি নিয়ে প্রশাসন ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা বিভিন্ন ধরনের অজুহাত দেখান। কখনো পাম্পে সমস্যা পাম্প সংস্কার করা হচ্ছে, লাইনে কাজ করা হচ্ছে, পাইপ ফেটে গেছে, রিজার্ভ ট্যাঙ্ক ছোট, পানির চাপ কম, আবার এই হল সাপ্লাই লাইন অনেক দূর এরকম বিভিন্ন সমস্যার কথা বলেন।

হলটিতে বসবাসরত ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মারুফ হোসেন বলেন, তিনবছর ধরে হলে আছি। পানি না থাকার সমস্যার কোনো পরিবর্তন হয়নি। অন্তত রোজার আগে এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। পানি একপ্রকার আমাদের জন্য মৌলিক চাহিদার মতো। সেটিকে সবার আগে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। বহুতল ভবনের বিভিন্ন ফ্লোরে যখন পানি থাকে না, তখন খুবই সমস্যায় পড়তে হয়। বিশ্ববিদ্যালয় বাহ্যিক দিক দিয়ে পরিবর্তন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু মৌলিক সমস্যার পরিবর্তন হচ্ছে না।

জানা যায়, ২০১৩ সালে এইচ আকৃতির ১০তলার এ হলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। প্রথম দফায় ২তলা ও ৫তলা কাজ শেষে হলটি চালু করা হয়। পরে ২০১৯ সাল থেকে দশতলার দুটি ব্লকই শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। কিন্তু পানি সাপ্লাইয়ের লাইন ও রিজার্ভ ট্যাঙ্ক আগের মতই থেকে যায়। ফলে সেই শুরু থেকেই হলে পানির সমস্যা। ২০১৯ সালে তৎকালীন হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. ইছাক এবং পরবর্তী প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম বিভিন্ন সময়ে পানির সমস্যা সমাধানের কথা বললেও এখন পর্যন্ত স্থায়ী কোনো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিভিন্ন সময়ে চার-পাঁচদিনও হলটিতে পানি না থাকার ঘটনা ঘটেছে। তখন ওয়াসা দিয়ে অল্প পরিমাণে পানি সরবরাহ করা হতো।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রধান প্রকৌশলীর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ওলীউল্লাহ বলেন, অনেক সময় পানি ছাড়তে একটু এদিক সেদিক হলে সমস্যা হয়, তাছাড়া বড় কোন সমস্যা নাই।

তবে নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা হলের বর্তমান প্রভোস্ট অধ্যাপক শেখ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, আমি তো নিয়মিত পাম্প ছাড়ার জন্য ওখানে যাচ্ছি, চিফ ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গেও কথা হয়েছে। অর্থ বরাদ্দ পেলে এই হল আর টিএসসির মাঝে নতুন একটা রিজার্ভ ও পাম্প বসালে আর সমস্যাটা থাকবে না। তবে কবে কাজটি হবে এমন প্রশ্নের কোন উত্তর মেলেনি।

তাসনিম আহমেদ তানিম/এসআইটি/এমএস