ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়
খেলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের দফায় দফায় মারামারি, আহত ১২
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা চলাকালে দুপক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) বিকেল ৫টার দিকে ক্যাম্পাসের ফুটবল মাঠ, ডায়না চত্বর ও মেডিকেলে এ মারামারির ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাঠের দক্ষিণ পাশে একদল শিক্ষার্থী ফুটবল এবং অন্যপাশে আরেকদল শিক্ষার্থী ক্রিকেট খেলছিল। এক পর্যায়ে একপাশ থেকে আরেক পাশে বল যাওয়াকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের খেলোয়াড়দের মধ্যে কথা কাটাকাটির হয়। এ সময় ফুটবল খেলোয়াড় ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের বীজন রায় ও ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের জীয়ন ক্রিকেট খেলায় বাধা দেন এবং ক্রিকেটের স্ট্যাম্পগুলো তুলে ফেলেন। এরপরও দু’পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় মারামারি ঘটে।
প্রথম দফার মারামারিতে ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড় মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আলী রিয়াজ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের তুর্য খান আহত হন। তুর্যের কপাল ফেটে যায় বলে জানা যায়। পরে ক্রিকেট টিমের খেলোয়াড়রা ব্যাট, স্ট্যাম্প ও বাঁশের লাঠি দিয়ে ফুটবল খেলার মধ্যে গোল কিপার বিজনকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। পরে বাকি ফুটবলাররা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন।
উভয়পক্ষের খেলোয়াড়রা বিক্ষিপ্তভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডায়না চত্বর ও ঝাল চত্বরে মারামারিতে জড়ান। এতে ক্রিকেট পক্ষের তুর্য খান, ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের সিয়াম ও জ্যাকি ইসলাম, বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফারহান লাবিব ধ্রুব, মার্কেটিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের আলী রিয়াজ, অর্থনীতি বিভাগের সাদি ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের মাহমুদুল হাসান সাফি এবং ফুটবলারদের পক্ষের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ইবি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জিয়ন সরকার ও সাধারণ সম্পাদক কবিরুল ইসলাম, ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের একই বর্ষের বীজন রায় এবং আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের মেজবাহুল ইসলাম আহত হন।
তাদের চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানেও দফায় দফায় বিক্ষিপ্তভাবে দুপক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় প্রক্টরিয়াল বডি ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে গুরুতর আহত হওয়ায় তুর্য খানকে কুষ্টিয়া মেডিকেলে পাঠানো হয়।
ক্রিকেট পক্ষের আহত শিক্ষার্থী মাহমুদুল হাসান সাফি বলেন, আমরা মাঠে সাত-আটজন ছিলাম। তারা মাঠের ওইপাশ থেকে বাঁশ নিয়ে এসে আমাদের ওপর হামলা করে। উদ্দেশ্যমূলক তারা এ হামলা চালায়। আমাদের বন্ধুরা এলে তাদেরও বাঁশ দিয়ে মারধর করে মাথা ফাটায় এবং জখম করেন।
এ বিষয়ে চিকিৎসা কেন্দ্রের কর্তব্যরত চিকিৎসক খুরশিদা জাহান বলেন, আমরা আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছি। এদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক ছিল, তাই তাকে কুষ্টিয়া রেফার করেছি।
এদিকে ঘটনাটি কারো ইন্ধনে কি-না তা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ। তিনি বলেন, আমরা ঘটনার কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি। বাইরের কারো ইন্ধন আছে কি না খতিয়ে দেখা হবে। পরে বাকি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রুমি নোমান/এসজে/জেআইএম