ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের দু’পক্ষের মারামারিতে আহত ২, কমিটি স্থগিত

জেলা প্রতিনিধি | যশোর | প্রকাশিত: ০৯:২১ এএম, ১৫ অক্টোবর ২০২৩

যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) ছাত্রলীগের দুপক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এতে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতিসহ আহত হয়েছেন দুজন। তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে এ সংঘর্ষ ঘটে। ঘটনার পর যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ।

এদিকে সংঘর্ষের প্রতিবাদে সন্ধ্যায় যশোর চৌগাছা সড়ক অবরোধ করে যান চলাচল বন্ধ করে দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। রাত ৮টার দিকে যবিপ্রবির উপাচার্য ও পুলিশ এসে ঘটনার নিষ্পত্তির আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।

আহতরা হলেন- যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি আল মামুন সিমন (২৮), ছাত্রলীগকর্মী আশরাফুল আলম (২৩)। সিমন সংঘর্ষের ঘটনায় শহীদ মসিয়ূর রহমান হলের প্রক্টরের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি আল মামুন সিমনের কর্মীরা জানান, শনিবার ক্যাম্পাসে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ করে ছাত্রলীগ। সমাবেশ শেষ হলে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার নির্দেশে চাপাতি, রড, লোহার পাইপ, বাঁশের লাঠি নিয়ে মনিরুল ইসলাম হৃদয়, রায়সুল ইসলাম রানা, বেলালসহ আরও অনেকে সমাবেশকারীদের ওপর হামলা করেন। এ সময় আল মামুন সিমন, আশরাফুল আলম গুরুতর আহত হন। পরে বিকেল ৫টার দিকে তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

যবিপ্রবি ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার কর্মীরা জানান, আল মামুন সিমনের লোকজন সভাপতিকে না জানিয়ে ক্যাম্পাসে উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশের আয়োজন করে। এর কারণ শুনতে গেলে তারা হামলা চালায়। এতে আশরাফুল আলমসহ (২৩) আরও কয়েকজন আহত হন। এমনকি হাসপাতালে নেওয়ার সময় তাদের অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখেন। এতে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ক্যাম্পাসে মারামারির প্রতিবাদে সন্ধ্যায় যশোর-চৌগাছা সড়ক অবরোধ শুরু করেন তারা। ফলে সড়কটিতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। রাত ৮টার দিকে যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন ও পুলিশ এসে ঘটনার নিষ্পত্তির আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।

যশোর পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) বেলাল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, একটি অনুষ্ঠান ঘিরে ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের দুপক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় দুপক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন।

পুলিশের এ কর্মকর্তা আরও বলেন, ঘটনার পর কিছুক্ষণের জন্য যশোর-চৌগাছা আঞ্চলিক সড়কটি অবরোধ করে বিক্ষুব্ধরা। পুলিশের হস্তক্ষেপে সড়কটি স্বাভাবিক হয়। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি।

এ বিষয়ে যবিপ্রবির উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ছাত্রলীগ ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করবে তা হবে না। জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।

এদিকে, সংঘর্ষের পর যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে। শনিবার বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে সংঘটিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সংগঠনবিরোধী, শৃঙ্খলা পরিপন্থি ও সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়, এমন কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হলো। একই সঙ্গে কেন পরবর্তী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তার যথোপযুক্ত লিখিত জবাব আগামী সাতদিনের মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কমিটি স্থগিতের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট ঘটনা উল্লেখ করা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের একাংশের নেতারা জানিয়েছেন, শনিবার ক্যাম্পাসে ‘সরকারের উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশকারীদের’ ওপর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সভাপতি সোহেল রানার অনুসারীরা হামলা চালিয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের কমিটি স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে যবিপ্রবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল কবির দ্বীপ বলেন, শনিবার দুপুরে যবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ উন্নয়ন ও শান্তি সমাবেশ করে। কিন্তু সমাবেশ শেষ হলে ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানার নির্দেশে তার অনুসারীরা সমাবেশকারীদের ওপর হামলা করে।

মিলন রহমান/এসজে/এএসএম