ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়

প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে এলেন শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৮:৪৬ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

প্রশাসনের আশ্বাসে আন্দোলন থেকে সরে এসেছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বিষয়টি জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী শেখ দেলোয়ার হোসেন।

তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সাক্ষাৎ হয় উপাচার্যের সঙ্গে। এ সময় আরও ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কবির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার, বাংলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. ফারজানা সিদ্দিকা, বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আশ্রাফুল করিম ও অধ্যাপক নিলুফা আক্তার এবং সহকারী প্রক্টর আহসান হাবীব।

দেলোয়ার আরও বলেন, উপাচার্য আমাদের ছয়টি প্রস্তাব দিয়েছেন। এর মধ্যে আমাদের কোর্সের পরীক্ষাটি মাস্টার্স দ্বিতীয় সেমিস্টারের ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার দুই মাসের মধ্যে নেওয়া হবে। প্রথম সেমিস্টারে গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র নামক ওই কোর্সের পূর্ববর্তী ক্লাস ও মিড টার্মের ৪০ নম্বর অব্যাহত থাকবে, অতিরিক্ত কোনো ক্লাস, মিড টার্ম কিংবা অ্যাসাইনমেন্ট দিতে হবে না। দ্বিতীয় সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর প্রয়োজনমতো অ্যাপিয়ার্ড সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। ড্রপ কোর্সের পরীক্ষা শেষ হওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশিত হবে। শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে একদিনের মধ্যে সনদপত্র দেওয়া হবে। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের সব ধরনের চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হবে। এ ছাড়া নিয়মের ভেতরে থেকে আমাদের আরও কোনো দাবি থাকলে মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

উপাচার্যের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু ওই কোর্সের বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, তা পরিবর্তন করা এখন সম্ভব নয়। পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে অসুস্থ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া যায়। কিন্তু তা বিভাগের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের জানানো হয়নি। একইসঙ্গে অসুস্থ শিক্ষার্থীর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা এতটাই গুরুতর, সেই তথ্য বিভাগ থেকে কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়নি। এ ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

জানা যায়, উপাচার্যের দেওয়া এ ছয় প্রস্তাবে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না জানিয়ে সময় নেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদারের সঙ্গে দেখা করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা দুটি দাবি তুলে ধরেন। এসব দাবি মেনে নিলে আন্দোলন থেকে সরে আসবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের দাবি দুটি ছিল- পুনর্ভর্তি ফি মওকুফ করা এবং ‘গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র’ কোর্সে ফেল না দেখানো।

এদিকে একইদিন বিকেল ৪টায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আবারো আলোচনায় বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের দুটি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দাবি বাস্তবায়নের চেষ্টা করবেন বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের বাইরে গিয়ে দ্বিতীয় দাবি মানা যাবে না বলে জানান তিনি। এছাড়া এর আগের দিনের দেওয়া প্রস্তাব সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের মোবাইল নম্বরে কল দিলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রাশেদ তালুকদার কল ধরলেও একটি প্রোগ্রামে থাকায় এ বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না বলে জানান।

সহপাঠী অসুস্থ থাকায় গত ১৬ জুলাই ‘গণমাধ্যম ও চলচ্চিত্র’ কোর্সে পরীক্ষায় বসেননি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা। পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিভাগীয় প্রধানের পরামর্শে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের পরিচালক সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে আবেদন করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের এ আবেদন ফলপ্রসূ হয়নি। ১৪ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় উল্লেখিত কোর্সে সব শিক্ষার্থীকে অনুপস্থিত দেখিয়ে পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। একে অমানবিক সিদ্ধান্ত আখ্যা দিয়ে ১৭ সেপ্টেম্বর ক্লাস বর্জন করেন স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা।

১৮ সেপ্টেম্বর পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে কোর্স তোলার সিদ্ধান্ত বাতিল করে পরীক্ষার দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। এদিনই ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালকের সাথে সাক্ষাৎ করে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নিলে পরবর্তী কর্মসূচির পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।

নাঈম আহমদ শুভ/এসজে/এমএস