ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

৩০ বছর ধরে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে জুতা সেলাই করছেন দুই ভাই

নাঈম আহমদ শুভ | প্রকাশিত: ০৪:৪৩ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

৩০ বছর ধরে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি ভবনের সামনে জুতা সেলাই করে জীবিকা নির্বাহ করেছেন দুই ভাই প্রদীপ ও সঞ্জিত। সংসার ও সন্তানদের পড়াশোনাসহ ও বৃদ্ধা মায়ের ওষুধের খরচও চলছে এ পেশার ওপর নির্ভর করেই। প্রথমে বাবার সঙ্গে ক্যাম্পাসে জুতা সেলাইয়ের কাজ শুরু করেন তারা। বাবার অবর্তমানে এখনও তারা দুই ভাই আছেন। জুতা সেলাইয়ের পাশাপাশি ছাতাও ঠিক করেন তারা।

বড় ভাই প্রদীপ বাবু বলেন, অনেক ছোট বয়স থেকেই বাবার সঙ্গে জুতা সেলাই করা শুরু করি আমরা দুই ভাই। এখন জুতা সেলাইয়ের পাশাপাশি সুযোগ পেলে জুতা বানানোরও কাজ করে থাকি। বাবা মারা গেছেন তিন বছর হলো। এরপর থেকে আমরা দুই ভাই ক্যাম্পাসে জুতা সেলাইয়ের কাজ করছি। আমাদের আরেক ভাই পার্শ্ববর্তী বাজারে জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন।

তিনি আরও বলেন, সবদিন সমানভাবে রোজগার হয় না। একেকদিন একেক রকম। এর উপরই নির্ভর করে কোনোরকমে পরিবার চালাতে হচ্ছে। অসুখ-বিসুখসহ বিভিন্ন সমস্যায় অনেক সময় ভোগান্তিতে পড়তে হয় টাকার অভাবে। তবে কষ্টের বিনিময়ে উপার্জিত এ টাকা দিয়েই পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।

ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি অনেক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জুতাও সেলাই করে থাকেন তারা দুই ভাই। তবে তাদের কাছ থেকে কখনো খারাপ আচরণ পাননি কেউ। কখনো টাকা নিয়ে কারো সঙ্গে সমস্যাও হয়নি। খুশিমনে তাদের প্রাপ্য টাকা দেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। হঠাৎ জুতা ছিঁড়ে গেলে তাৎক্ষণিক সেলাই করার সুযোগ পাওয়ায় প্রদীপ ও সঞ্জিতের কার্যক্রমকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেক শিক্ষার্থী।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ওমর মেহেরাব বলেন, কিছুদিন আগেই ক্যাম্পাসে থাকাকালীন হঠাৎ জুতা ছিঁড়ে যায়। তাৎক্ষণিক তাদের কাছ থেকে জুতা সেলাই করতে পারায় পরবর্তী কার্যক্রম করতে আমার সমস্যা হয়নি। তা না হলে জুতা সেলাই কিংবা নতুন জুতা কিনতে ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে হতো। যার ফলে আমাকে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হতো।

পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অনন্য বলেন, জুতা সেলাই, জুতা পলিশ ছাড়াও অনেক সময় ছাতা ঠিক করার কাজ করেন তারা। তারা না থাকলে জুতা সেলাইয়ের জন্য অনেক দূরে মদিনা মার্কেট যেতে হতো। ক্যাম্পাসে অনেক শিক্ষার্থী রয়েছেন যারা আর্থিকভাবে অস্বচ্ছল, তারা তাদের মাধ্যমে জুতা সেলাই করে একই জুতা অনেকদিন পরতে পারেন। এই সেবা নিঃন্দেহে প্রশংসনীয়। তাদের এ কাজকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।

এফএ/জিকেএস