ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

ইবিতে নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং, তদন্তে কমিটি

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৮:০০ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) পরিচিতি পর্ব ও শৃঙ্খলা শেখানোর নামে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের এক নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের অভিযোগ উঠেছে একই বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গত ২ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ সেপ্টেম্বর দফায় দফায় এ র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার চেয়ে শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।

অভিযোগপত্রে নাম উঠে আসা অভিযুক্তরা হলেন- মিজানুর ইমন, পুলক, আকিব, শুভ ও সাকিব। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ২ সেপ্টেম্বর ওরিয়েন্টেশন ক্লাসের পর অভিযুক্তরা তাকে জিমনেসিয়ামের পেছনে নিয়ে যান। সেখানে পরিচিত হওয়া এবং আদব-কায়দা শেখানোর নামে অভিযুক্তরা তার সঙ্গে নানাভাবে খারাপ ব্যবহার করেন। ওইদিনের পরিচয় গ্রহণ শেষে অভিযুক্ত শুভ তাকে সন্ধ্যা ৭টায় পুনরায় একই স্থানে আসার জন্য বলেন। না আসলে আলাদাভাবে রুমে ডেকে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। পরে সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী সেখানে গেলে আবার আদব-কায়দা শেখাতে শুরু করেন অভিযুক্তরা। শেখানো পদ্ধতি থেকে একটি ভুল হলেই গালাগাল ও বিভিন্ন খারাপ ভাষায় বকাঝকা করেন।

আরও পড়ুন: র‌্যাগিং: হলে আজীবন নিষিদ্ধ শাবিপ্রবির ১৬ শিক্ষার্থী 

এমন সময় একজন উঠে চলে গেলে অভিযুক্ত শুভ ভুক্তভোগীকে বলেন, ‘ওই দেখ তোর বড় ভাই চলে যাচ্ছে, তাকে সালাম দিলি না কেন? এখন যা ওকে গিয়ে কনভিন্স কর।’ ভুক্তভোগী সেটা না করলে অভিযুক্ত ইমন ও পুলক তাকে উল্লাস করার ভঙ্গিতে সবার সামনে নিজেকে ভোদাই এবং মাল বলে সম্বোধন করতে বলেন। ভুক্তভোগীকে অনুরূপ কাজ তিনবার করতে বাধ্য করা হয়। ওই দিন রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাকে আটকে রাখেন অভিযুক্তরা।

পরদিন বিভাগের সিনিয়রদের মধ্যে ক্রিকেট ম্যাচ ছিল। এতে জুনিয়রদের উপস্থিত থাকার জন্য বলা হয়। এতে ভুক্তভোগীসহ আরও কয়েকজন দেরিতে মাঠে গেলে খেলা শেষে অভিযুক্তরা তাদের বকাঝকা করেন।

পরে ৫ সেপ্টেম্বর পুনরায় ভুক্তভোগীকে ক্লাস শেষে জিমনেসিয়ামের সামনে ডেকে নিয়ে ফেসবুকে ফ্রেন্ড রিকুয়েস্ট না দেওয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে কথার মাধ্যমে হেনস্তা করা হয়। তাকে ব্যাচআউট করার হুমকি দিয়ে অভিযুক্তরা বলেন, ‘যদি আমাদের কথা না মানিস, তোকে ব্যাচ-আউট করে দেওয়া হবে। তুই এইচআরএম বিভাগের ছাত্র হিসেবে কোনো সুবিধা পাবি না।

এর আগে ঘটনার বিষয়ে ভুক্তভোগী তার পরিবারকে জানালে গত ৫ সেপ্টেম্বর ওই শিক্ষার্থীর বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার বরাবর অভিযোগ জানিয়ে একটি মেইল করেন। পরে শনিবার ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে ছেলেকে দিয়ে লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী ছেলের বাবার বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে যা ঘটেছে সেটি নিয়ে পরিবারের সবাই চিন্তায় ছিলাম। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি। তারা এমন খারাপ ভাষায় আমার ছেলেকে র‌্যাগিং করেছে, যেগুলো সভ্য সমাজে কোনোভাবেই যায় না।

এদিকে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শেলিনা নাসরিন, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আনিসুর রহমান, ফিনান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক মিথুন বৈরাগী ও একাডেমিক শাখার ডেপুটি রেজিস্ট্রার আলীবদ্দীন খান। কমিটিকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন৷

তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম বলেন, আমি বিষয়টা শুনেছি। তবে আমাদের কাছে এখনও চিঠি পৌঁছায়নি। সম্ভবত সকালের মধ্যে পেয়ে যাবো। চিঠি পেলে তখন আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।

রুমি নোমান/আরএইচ/জিকেএস