ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

রুয়েট

বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাঈদীর জানাজার তুলনা, ছাত্রলীগের আলটিমেটাম

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ১১:৪৩ এএম, ২৯ আগস্ট ২০২৩

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর জানাজায় উপস্থিতির তুলনা করে একটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) কর্মকর্তা মো. মিলনুর রশিদ। পরে তাকে তার কক্ষ থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

সোমবার (২৮ আগস্ট) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধীন ফাউন্ড্রিশপ চেম্বার থেকে তাকে বের করে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে ছাত্রলীগ।

অভিযুক্ত মিলনুর রশিদ রুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার।

এ ঘটনায় যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. নীরেন্দ্র নাথ মুস্তফীকে সভাপতি করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির অন্য দুই সদস্য হচ্ছেন শহীদ শহীদুল ইসলাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আলী হোসেন এবং গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মুফতি মাহমুদ রনি।

আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে তদন্তকার্য সম্পন্ন করে সুপারিশসহ মতামত দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

রুয়েট সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জানাজায় মানুষের উপস্থিতির সঙ্গে সম্প্রতি সাঈদীর জানাজায় উপস্থিতির তুলনা দেখিয়ে একটি কোলাজ ছবি নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেন রুয়েটের কর্মকর্তা মিলনুর রশিদ। মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ড পাওয়া জামায়াতে ইসলামীর এ নেতার মৃত্যুর পর থেকে ধারাবাহিকভাবে তার জীবনকর্মসহ বিভিন্ন পোস্ট শেয়ার করেন তিনি। এরই অংশ হিসেবে গত ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হেয় করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো জানাজার ওই ছবিটি শেয়ার করেন মিলনুর রহমান।

রুম থেকে বের করে দেওয়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মিলনুর রশিদ বলেন, ‘ছাত্রলীগ আমার কক্ষে এসে অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও কক্ষ থেকে বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে দিয়েছে। আমি এখন কথা বলার পরিস্থিতিতে নেই। পরে আপনার সঙ্গে কথা বলবো।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে তুচ্ছতাচ্ছিল্যের উদ্দেশ্যে নয়; বরং নিজের ফেসবুকে বিষয়টি রেখে দেওয়ার জন্য শেয়ার করা হয়েছে। সত্য কথা বলতে ফেসবুক সম্পর্কে আমি তেমন কিছু জানি না, বুঝিও না। তবে কোনো কিছু ভালো লাগলে আমার ফেসবুকে শেয়ার করি।’

এ বিষয়ে রুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইসফাক ইয়াসশির ইপু বলেন, ‘অভিযুক্ত রুয়েট কর্মকর্তার এমন জঘন্য কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তার কক্ষে যান। এসময় মিলনুর রশিদ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেন। এমন পরিস্থিতিতে ছাত্রলীগের উত্তেজিত নেতাকর্মীরা তাকে কক্ষ থেকে বের দিয়ে সেখানে তালা ঝুলিয়ে দেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘২৪ ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্ত ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। আমাদের বেঁধে দেওয়া সময়সীমার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।’

এ বিষয়ে রুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ফারুক হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। মানবতাবিরোধী কাউকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জানাজার সঙ্গে তুলনা করে ওই কর্মকর্তা অবশ্যই অন্যায় করেছেন। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির দেওয়া প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

রুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘জাতির জনকের বিষয়ে কোনো আপস নয়। যারা বঙ্গবন্ধুকে অবমাননাকর বক্তব্য কিংবা কার্যকলাপ করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মনির হোসেন মাহিন/এসআর/জিকেএস