ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

ফুলপরী নির্যাতন

বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চান ইবির ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ১২:২১ এএম, ১৩ এপ্রিল ২০২৩

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ছাত্রী ফুলপরী খাতুনকে নির্যাতনের ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কার হওয়া ইবির ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরা তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন। একই সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণের সুযোগ ও স্থগিত হওয়া ফল প্রকাশের অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। অন্তরা ইবির পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

বুধবার (১২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসানের কাছে এ সংক্রান্ত একটি আবেদন জমা দিয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী অন্তরা।

আরও পড়ুন: অন্তরার নির্দেশে ফুলপরীকে মারধর, বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ

আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৪ এপ্রিল ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় আমাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আমি বর্তমানে ফাইনাল ইয়ারে অধ্যয়নরত। আমার অনলাইন ক্লাস চলমান। আপনার দপ্তর থেকে আমাকে দুই দফায় যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে সেখানে সুনির্দিষ্ট কোনো অপরাধ কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট কোনো ধারা উল্লেখ করা হয়নি।

jagonews24

ভুক্তভোগী ছাত্রী ফুলপরী খাতুন

তিনি আরও বলেন, আমি দৃঢ়চিত্তে বলতে পারি আমি উক্ত র‌্যাগিংয়ের ঘটনায় কোনোভাবেই অংশ নেইনি।

আবেদনে এই ছাত্রলীগ নেত্রী সাময়িক বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, ক্লাস ও পরীক্ষা দেওয়ার অনুমুতি প্রদান এবং তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের অনুরোধ করেন।

এ বিষয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ইবির পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দীন জাগো নিউজকে বলেন, ফল স্থগিতের বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় অথরিটি ভালো জানেন। আমরা রেজাল্ট সাবমিট করার সময় কর্তৃপক্ষকে চিঠিতে দিয়েছিলাম, বিশ্ববিদ্যালয় তাকে (অন্তরা) সাময়িক বহিষ্কার করেছে। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অনুরোধ করা হলো।

আরও পড়ুন: ইবির ছাত্রলীগ নেত্রীসহ পাঁচজনের সিট বাতিল

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এইচ এম আলী হাসান বলেন, আবেদনটি পেয়ে একাডেমিক শাখায় পাঠিয়েছি। এটি আইন প্রশাসকের মতামতের জন্য পাঠানো হবে। তার মতামত নিয়ে আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নেবো।

উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক রবিউল ইসলাম বলেন, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী যাবতীয় একাডেমিক কার্যক্রম থেকে তাকে (অন্তরা) অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। কখন পরীক্ষা হয়েছে সেটা মুখ্য বিষয় নয়।

ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে র‍্যাগিংয়ের নামে ফুলপরী নামের এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি (বহিষ্কৃত) সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ পাঁচ শিক্ষার্থীকে গত ৪ মার্চ সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বহিষ্কৃত পাঁচ শিক্ষার্থী হলেন- শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ছাত্রলীগ কর্মী ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থী তাবাসসুম ইসলাম, আইন বিভাগের ইসরাত জাহান মিম, ফাইন আর্টস বিভাগের হালিমা খাতুন উর্মি ও ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোয়াবিয়া জাহান।

আরও পড়ুন: ইবির ৫ ছাত্রীকে বহিষ্কার ও হল প্রভোস্টকে প্রত্যাহারের নির্দেশ

jagonews24

অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী

এর আগে গত ১ মার্চ ওই পাঁচ ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কারের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট ড. শামসুল আলমকে অবিলম্বে প্রত্যাহার করতেও বলা হয়।

গত ১২ ফেব্রুয়ারি ইবির দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রাত সাড়ে ১১টা থেকে রাত প্রায় ৩টা পর্যন্ত শারীরিক নির্যাতনের শিকার হন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ফুলপরী খাতুন। তিনি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী। অভিযোগ ওঠে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, তারা ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করে তার বিবস্ত্র ভিডিও ধারণ করে রাখেন।

আরও পড়ুন: ইবির ঘটনায় প্রভোস্টের অবহেলা-প্রক্টরের উদাসীনতা ছিল

এ ঘটনায় ১৩ ফেব্রুয়ারি সকালে ভয়ে হল ছেড়ে বাসায় চলে যান ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। র‌্যাগিংয়ের নামে শারীরিক ও মানসিকভাবে হেনস্তার বিচার ও নিরাপত্তা চেয়ে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) হল প্রভোস্ট, প্রক্টর ও ছাত্র-উপদেষ্টা দপ্তর বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। বিষয়টি নিয়ে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং শাখা ছাত্রলীগ পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করে।

এরপর বিষয়টি নিয়ে জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী গাজী মো. মহসীন। পরে ১ মার্চের মধ্যে অভিযুক্ত পাঁচ ছাত্রীকে হল ছাড়ার নির্দেশ দেন দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল কর্তৃপক্ষ। এর তিন পর ৪ মার্চ তাদের সাময়িক বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রুমি নোমান/এমকেআর