সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ
দেশের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। সবুজ গাছপালা, মনোরম পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আঁধার টিলাবেষ্টিত এ দৃষ্টিনন্দন বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ সৌন্দর্যে অনন্য মাত্রা যোগ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। প্রতিদিন ক্যাম্পাস সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকেও এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন মুসল্লিরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখে পড়ে সবুজ গাছপালা আচ্ছাদিত এক কিলো রোড। দুদিকে লেক আর চারপাশে সারি সারি গাছ। প্রধান ফটক থেকে কিলোরোড দিয়ে মিনিট পাঁচেক হাঁটলেই পাওয়া যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন। এ বাসভবনের ঠিক বিপরীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবন ও শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের মধ্যখানে অবস্থিত কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।
কিলোরোডের পার্শ্ববর্তী ঝাউগাছ ও দুটি পুকুরের মধ্যবর্তী স্থানে রয়েছে মসজিদে যাওয়ার সরু রাস্তা। এ রাস্তা থেকে সামনের দিকে সোজা তাকালেই দেখা যায় কেন্দ্রীয় মসজিদের মিনার। একটি বিশাল গম্বুজ দিয়ে নির্মিত হয়েছে একতলা বিশিষ্ট এ মসজিদ। মসজিদের চারদিকে আছে বিভিন্ন ফলজ ও বনজ উদ্ভিদ। মসজিদের ঠিক সামনে ডানদিকে আছে খেজুর, নারিকেল, লিচুসহ নানান জাতের ফলের গাছ। আছে বড় বড় উদ্ভিদও। মসজিদের ঠিক ডান পাশে আছে মুসল্লিদের জন্য ওজুখানা ও শৌচাগারের ব্যবস্থা। আর বামপাশে আছে সুউচ্চ মিনার যেখান থেকে আজানের সুর দূর-দূরান্তে ভেসে যায়।
এছাড়া মসজিদের ভেতরে আছে একটি লাইব্রেরিও। বিভিন্ন ধরনের ইসলামি বইয়ের সমাহার আছে এ গ্রন্থাগারে। মুসল্লিরা এসব বই পড়ে ইসলাম সম্পর্কে জানার পরিধি আরও বাড়াতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৭ সালে তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ মুহিব উদ্দিন আহমেদ এ মসজিদের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। মসজিদের সামনের দুটি পুকুরসহ প্রায় দুই একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত কেন্দ্রীয় এ মসজিদ। মসজিদের ভেতরে ছয় শতাধিক মানুষ একসঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী নাজমুল হাসান বলেন, ক্যাম্পাসের কেন্দ্রীয় মসজিদ আসলেই অসাধারণ। বাইরে থেকে দেখলে যে কারোর চোখ জুড়াবে। মসজিদের ভেতরে সব ধরনের আধুনিক সুযোগ-সুবিধা আছে। হল মসজিদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় মসজিদেও নামাজ আদায় করি।
মসজিদের বিভিন্ন বিষয়ে জাগো নিউজের সাথে কথা হয় ইমাম ও খতিব ক্বারি মাওলানা মতিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, নান্দনিক এ মসজিদে বিভিন্ন জায়গা থেকে মুসল্লিরা এসে নামাজ আদায় ও কোরআন তিলাওয়াত করেন। প্রতি শুক্রবারে কোরআন হাদিসের আলোকে সময়োপযোগী ও প্রাসঙ্গিক বয়ান করা হয়। ১১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে মসজিদটি পরিচালিত হয়। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিইবি বিভাগের অধ্যাপক ড. সামসুল হক প্রধান সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এ কমিটির মেয়াদ তিন বছর থাকে।
ইমাম আরও বলেন, বিশেষ করে জুমার দিন বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট ছাড়াও বাইরের অনেক মুসল্লি মসজিদে নামাজ আদায় করেন। রমজান মাস উপলক্ষে তারাবির নামাজে প্রতিদিন প্রায় তিনশ মুসল্লি অংশ নেন।
মসজিদের সৌন্দর্যবর্ধনের বিষয়ে ইমাম বলেন, মসজিদের সামনের পুকুর সংস্কার, মসজিদের মাঠ নান্দনিক রূপে গড়ে তোলা দরকার। দর্শনার্থীদের জন্য বাইরে বসার ব্যবস্থার পাশাপাশি মসজিদের ভেতরে সমৃদ্ধ পাঠাগার গড়ে তোলা যেতে পারে।
এসজে/এমএস