ইবিতে ছাত্রী নির্যাতন
গোপনে ক্যাম্পাসে এলেন ৫ অভিযুক্ত, বললেন না কিছুই
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পাঁচ ছাত্রীর নাম প্রকাশ পেয়েছে। এদের মধ্যে দুজন সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়ে তিনটি তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) ওই দুজনসহ পাঁচ অভিযুক্ত ছাত্রীই তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হয়েছেন বলে জানা গেছে।
তবে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন গোপনে। ক্যাম্পাসে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন ভবনে নিজেদের বক্তব্য উপস্থাপন শেষে চলে যান। এসময় তাদের নিরাপত্তায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি উপস্থিত ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ৯টায় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন অভিযুক্তরা। তাদের মধ্যে ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী একাডেমিক পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষা শেষে তিনি ও বাকি চার অভিযুক্ত তাবাসসুম, উর্মি, মিম ও মুয়াবিয়া তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হন। পরে বিকেল ৪টায় তারা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এসময় তারা সাংবাদিকদের কাছে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি। শুধু বলেন, ‘আমাদের যা বলার তদন্ত কমিটির কাছে বলেছি। এখন আর কিছু বলার নেই।’
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডলও কোনো মন্তব্য করেননি।
তবে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ঘটনায় যে পাঁচ ছাত্রীর নাম এসেছিল আমি তাদের নিয়ে তদন্ত কমিটির কাছে এসেছিলাম। এখন তাদের পৌঁছে দেবো।’
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে গত ১১ ও ১২ ফেব্রুয়ারি দুই দফায় ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রীকে রাতভর নির্যাতন করার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনায় শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা, ফিন্যান্স বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের তাবাসসুমসহ ৭-৮ জন জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। ঘটনা তদন্তে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে দুটি পৃথক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
এছাড়া এ ঘটনায় গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন হাইকোর্টের নজরে আনেন আইনজীবী গাজী মো. মহসীন ও আজগর হোসেন তুহিন। তখন তাদের লিখিত আবেদন দিতে বলেন আদালত। সে অনুসারে তারা জনস্বার্থে রিট করেন।
গত বৃহস্পতিবার রিটের শুনানি শেষে একজন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক ও একজন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তার সমন্বয়ে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়া অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরই মধ্যে গত শনি ও সোমবার ভুক্তভোগী এবং অভিযুক্তদের বক্তব্য শোনে তদন্ত কমিটি।
রুমি নোমান/এসআর/জিকেএস