ছাত্রলীগের প্রশংসায় ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা
সন্তানকে ভর্তি পরীক্ষা দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা অভিভাবকরা মুগ্ধ হয়েছেন ছাত্রলীগের কাজে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য এক ডজন সুবিধার ব্যবস্থা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। এতে খুশি অভিভাবকরা। আর নেতারা বলছেন, এসব সহায়তার মধ্য দিয়ে ছাত্রলীগ শুভ কাজের উদ্বোধন করেছে।
গত ৩ জুন থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ সেশনের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। পরীক্ষার সময়ে সহায়তা কেন্দ্র, বাইক সার্ভিস, অভিভাবক ছাউনি, মোবাইল টয়লেট, স্বাস্থ্যসেবা ও চায়ের আপ্যায়নসহ নানান ধরনের সহায়তার ব্যবস্থা করে ছাত্রলীগ।
ছাত্রলীগের নেতাদের কাছে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ২২টি স্থানে শিক্ষার্থী সহায়তা ও তথ্যকেন্দ্র, ৫টি প্রবেশপথে জয় বাংলা বাইক সার্ভিস, চারটি স্থান ও সকল তথ্যকেন্দ্রে সুপেয় পানি, ৮টি স্থানে মোবাইল টয়লেট, ৪টি স্থানে অভিভাবক ছাউনি, ২ স্থানে প্রাথমিক চিকিৎসা ও মধুর ক্যান্টিনে প্রতিবন্ধীদের হুইলচেয়ার ও লজিস্টিকস সরবরাহ করে ছাত্রলীগ। এছাড়া অভিভাবক ছাউনিতে চায়ের ব্যবস্থাও করে ছাত্রলীগ।
ক্যাম্পাসজুড়ে ছাত্রলীগের নানা আলোচনা-সমালোচনা থাকলেও ভর্তি পরীক্ষায় ছাত্রলীগের সহায়তায় সবাই মুগ্ধ হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও মিডিয়ায় ছাত্রলীগের এ কাজের প্রশংসা করেছেন। এছাড়া বিরোধী ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও ছাত্রলীগের এ কাজের সাধুবাদ জানিয়েছে।
ভর্তিচ্ছু এক পরীক্ষার্থীর অভিভাবক শ্রী রাধানাথ দাশ বলেন, ছেলেকে পরীক্ষা দিতে নিয়ে এসেছি। সিট পড়েছে আইবিএ-তে। ভুল করে কার্জন হলে চলে গেছিলাম। ছাত্রলীগের বাইক সার্ভিসের মাধ্যমে পরীক্ষার হল খুঁজে পেয়েছি। বসার ব্যবস্থাও করেছে তারা।একটু পরে আবার একজন এসে চা দিয়ে গেল। কী যে ভালো লাগলো! ছেলেরা আসলেও খুব কষ্ট করছে।
নোয়াখালীর মাইজদী থেকে পরীক্ষাকেন্দ্রে আসা অভিভাবক কামরুল হুদা কামাল বলেন, সেই কতদূর থেকে এসেছি মেয়েকে নিয়ে। পরপর দুইদিন দুটো পরীক্ষা, বেশ ঝামেলা হতো আমার জন্য। কিন্তু ছাত্রলীগের সহায়তায় খুব সুবিধা হচ্ছে। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ খুঁজে দিয়েছে ছাত্ররা। প্রয়োজন হওয়ায় টয়লেটের ব্যবস্থাও করেছে দেখছি। তাদের থেকে এত বেশি আন্তরিকতা পেয়ে খুব ভালো লাগছে।
উত্তরা থেকে বোনকে নিয়ে পরীক্ষাকেন্দ্রে এসেছেন মুহসিনা খাতুন। ছাত্রলীগের ব্যবস্থাপনার প্রতি সন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, জ্যামের আশঙ্কায় খুব ভোরে এসে পৌঁছেছি ক্যাম্পাসে। অস্বস্তি লাগছিল খুব। কিন্তু ছাত্রলীগের ছেলেদের কর্মব্যস্ততা স্বস্তি দিয়েছে। আমার তেমন কোনো সমস্যায় পড়তে হয়নি। কিন্তু যারা সমস্যায় পড়েছে, তাদের সাহায্য করেছে ছাত্রলীগ। একজন মাথা ঘুরে পড়ে গেছিল কিছুক্ষণ আগে। তাকে ফার্স্টএইড দিতে দেখলাম। সবমিলিয়ে দারুণ কাজ হচ্ছে। অভিভাবকদের দুর্দশা লাঘব হয়েছে অনেক।
ফরিদপুর থেকে আসা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা এর আগেও বিইউপিতে গিয়েছিলাম। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষই এসব ব্যবস্থা করেছিল। এখানে ছাত্রলীগ করেছে। ছাত্রলীগের সব জায়গায় শুধু বদনাম। মারামারি-হানাহানি, অনেক কিছু। সবকিছুর মধ্যে এটি অবশ্যই একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। তবে এই ব্যবস্থাগুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন করলে আরও বৃহৎ পরিসরে করা যেত বলে আমি মনে করি।
আয়োজনের বিষয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কাছে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা পিতামাতা সমতুল্য। তাই বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত অভিভাবকদের সম্মান জানাতেই ছাত্রলীগ অভিভাবকদের জন্য বিভিন্ন সহায়তার উদ্যোগ নেয়। ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের আস্থার জায়গা অর্জন করেছে ছাত্রলীগ। পরীক্ষা হলে নিয়ে যাওয়ার অনুপযোগী কিন্তু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র (মোবাইল, ঘড়ি) ছাত্রলীগের কাছে রেখে গেছে। ছাত্রলীগ তা নিরাপদে সংরক্ষণ করে পরীক্ষা শেষে ফেরত দিয়েছে।
এসব কাজের মাধ্যমে ছাত্রলীগ শুভ কাজের শুভ উদ্বোধন করেছে বলে মন্তব্য করেন ছাত্রলীগের এই নেতা।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভালো কাজের প্রতিযোগিতা ও শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানোর মতো শুভ কাজের উদ্বোধন করেছে ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে।
আল-সাদী ভূঁইয়া/এমএইচআর/এএসএম