ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

মেট্রোরেলের রুট পরিবর্তনে আন্দোলনে যাচ্ছে ঢাবি শিক্ষার্থীরা

প্রকাশিত: ১২:৩৫ পিএম, ০৬ জানুয়ারি ২০১৬

প্রস্তাবিত মেট্রোরেল প্রকল্পের রুট পরিবর্তনের দাবিতে আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলন কর্মসূচির প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবে তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

প্রস্তাবিত মেট্রোরেলের পরিকল্পনায় এর রুটের একটি অংশ শাহবাগ-টিএসসি-দোয়েল চত্বর হয়ে প্রেসক্লাবের দিকে যাওয়ার কথা রয়েছে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের দোয়েল চত্বরে একটি স্টপেজ রাখা হয়েছে।

পরিকল্পনা মোতাবেক এখানে একটি সুপরিসর স্টেশন নির্মিত হবে। স্টেশনের প্রস্থটি বেশ বড়। সাড়ে তিন মিনিট পর পর ট্রেন থামবে এই স্টপেজে। কাজেই সারাদিন ভিড় লেগেই থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্টেশনের পাশেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সায়েন্স লাইব্রেরি থাকায় কার্যত শিক্ষার্থীদের পড়া-লেখা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

তাছাড়া এই স্টপেজ শুধু যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই ব্যবহার করবেন তা নয়। এটা ঢাকা মেডিকেল, বংশাল, চক বাজার, বাবু বাজারসহ একটি বিস্তৃত অঞ্চলের বাসিন্দা এবং যাত্রীরা এই স্টপেজ ব্যবহার করবেন। যার দরুণ এ এলাকার যানজট আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এমনকি স্টপে ঘিরে বিভিন্ন অস্থায়ী দোকানের একটা পসরা গড়ে উঠবে যা আরো অসহনীয় করে তুলবে বলে ধারণা তাদের।

মেট্রোরেলের পিলারগুলো রাস্তার মাঝ দিয়ে যাবে ফলে নিচের রাস্তাগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়বে। তার উপর বাড়তি যানবাহনের চাপে পুরো এলাকায় অসহনীয় যানজটের সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করছেন শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় রাস্তা প্রসারিত করার ব্যবস্থা নেয়া হলে টিএসসি, কার্জন হল, বাংলা একাডেমি, মুঘল আমলের নিদর্শন, পরমাণু শক্তি কমিশন, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট, তিন নেতার মাজার ইত্যাদি ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ভাঙতে হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তাছাড়া এ প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আনাগোনা বাড়াবে যা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তাব্যবস্থা বিপর্যস্ত হবে। অরক্ষিত হয়ে পড়বে গোটা বিশ্ববিদ্যালয়। প্রায় একশ কিলোমিটার বেগে ছুটে চলা ট্রেনের শব্দের কারণে মাত্রাতিরিক্ত শব্দদূষণের কবলে পড়বে বিশ্ববিদ্যালয়। সুস্পষ্টভাবেই শিক্ষার পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। বিপুল পরিমাণ গাছ কাটা পড়বে, ক্যাম্পাস হারাবে তার স্বাভাবিক সবুজ সৌন্দর্য। বস্তুত ক্যাম্পাসের একটি বড় অংশজুড়ে ঝুলন্ত ছাদ তৈরি হবে বলেও দাবি শিক্ষার্থীদের। এ ছাড়াও এটি বাস্তবায়ন হলে ঐতিহাসিক রাজু ভাস্কর্য হারাবে তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য।

শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা মেট্রোরেল চাই, তবে আমাদের শিক্ষাঙ্গণের বুক চিরে নয়। যেহেতু শাহবাগে একটি স্টপেজ রাখা হয়েছে তাই দোয়েল চত্বরে স্টপেজের কোনো প্রয়োজন নেই। তারা কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান, মেট্রোরেলটির রুট পরিবর্তন করে বিকল্প পথে নিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধের জীবন্ত যাদুঘর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ও ইতিহাস রক্ষার পাশাপাশি এর শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে।

এ দিকে রুট পরিবর্তনের দাবিতে বৃহস্পতিবারের মানববন্ধনে উপস্থিত থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রক্ষার এই আন্দোলনে শামিল হওয়ার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের সচেতন দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান মানববন্ধনের আয়োজকরা।

এমএইচ/একে/আরআইপি