প্রকৌশলীদের ভুলে দুই বছর ভুগতে হবে রাবি শিক্ষার্থীদের
দুইটি আবাসিক হল ও একটি একাডেমিক ভবনের নির্মাণসামগ্রী আনতে গিয়েই খানাখন্দে ভরে গেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা। এতে রাস্তাগুলো শুধু যানবাহন চলাচলেরই অনুপযোগী হয়নি, হেঁটে যেতেও ভোগান্তি বেড়েছে শিক্ষার্থীদের। রাস্তা ঠিক করতে অন্তত দুই বছর সময় লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে প্রকৌশল দপ্তর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সংকট কাটাতে শহীদ হবিবুর রহমান হলের সামনে একটি ২০ তলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হবে। তৃতীয় বিজ্ঞান ভবন ও খালেদা জিয়া হলের মধ্যবর্তী স্থানে নির্মাণকাজ শুরু হয়েছে ১০ তলাবিশিষ্ট দেশরত্ন শেখ হাসিনা হল।
অন্যদিকে ছাত্রদের জন্য শহীদ এ এইচ এম কামারুজ্জামান নামে হল হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদারবক্স হলের সামনে। ভবনগুলোর নির্মাণসামগ্রী আনতেই রাস্তার এই হাল হয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, ভারী ট্রাকে করে আনা হচ্ছে বিভিন্ন মালামাল। মাদার বক্স হলের মোড় থেকে শুরু করে জিয়া হলের সামনের সড়ক হয়ে হবিবুর রহমান হলের সড়কটি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ জাগো নিউজকে বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বার্থেই এসব উন্নয়ন প্রকল্প। এখন যে ভোগান্তিটা হচ্ছে তাতে আমি নিজেও মর্মাহত। কিন্তু আপাতত এভাবেই উন্নয়ন প্রকল্পের অন্তত বেজমেন্টের কাজ শেষ করতে চাই। তাই কটাদিন একটু কষ্ট সহ্য করতে হবে।
তবে কবে নাগাদ রাস্তাগুলো ঠিক হবে সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি প্রধান প্রকৌশলী। এ বিষয়ে তিনি বলেন, আপাতত অন্তত তিনটি প্রকল্পের বেজমেন্টের কাজ শেষ করতে হবে। আর এতে কম করে হলেও দুই বছর সময় লেগে যাবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রকল্পের শুরুতে যে ডিপিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) দেওয়া হয় তাতে প্রধান সড়ক থেকে প্রকল্প এলাকায় মালামাল নিয়ে যাওয়ার খরচের বিষয়টি উল্লেখ করেনি প্রকৌশল দপ্তর। এতে ক্যাম্পাসের যোগাযোগ অবকাঠামোর ক্ষতি প্রশমন করে মালামাল কিভাবে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে আসা হবে তাও উল্লেখ করা হয়নি। ডিপিপিতে এ বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভারী ট্রাকে করেই মালামাল ক্যাম্পাসের সড়ক ব্যবহার করে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যাচ্ছে।
অন্যদিকে প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে এজন্য ব্যয় বরাদ্দ থাকলেও সংশ্লিষ্টদের দাবি, ছোট গাড়িতে মালামাল আনতে ব্যয় বাড়তে পারে অনেক বেশি। ব্যয় বাড়ার অজুহাতে ১৫ টনের বেশি লোডের গাড়ি প্রবেশ করানো হচ্ছে ক্যাম্পাসে। ফলে অতিমাত্রায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সড়কগুলো। প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে অতিভারী ট্রাকে পরিবহন করে যে ব্যয় কমানো হয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পুনর্নির্মাণ করতে ব্যয় হবে আরও বেশি।
ভাঙাচোরা সড়কে চলাচলে ভোগান্তির কথা জানিয়ে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের শিক্ষার্থী গোপাল পাল বলেন, ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবনগুলো যাওয়ার রাস্তা একটি। এতে সবার সমস্যা হচ্ছে। এটি বিনোদপুর থেকে স্টেশন বাজার যাওয়ার মূল রাস্তা। আশপাশের এলাকার যারা এ রাস্তায় চলাচল করেন তাদেরও সমস্যা হচ্ছে। ভেঙে যাওয়া অংশের সামনে এসে গাড়ি থেকে যাত্রী নামিয়ে খালি গাড়ি পার করতেও সমস্যায় হচ্ছে।
সালমান শাকিল/এসআর/এমএস