ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

মেস-বাসা নিয়ে অনিশ্চয়তায় জবি শিক্ষার্থীরা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৪:৫৯ পিএম, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২১

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ ছিল দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। গত ১২ সেপ্টেম্বর স্কুল-কলেজ খুলে যাওয়ায় আবারও মুখরিত হয়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গন।

তবে এখনও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা শুরু না হলেও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা আগামী ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে ৭ অক্টোবরের আগেই ঢাকায় আসার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জবি শিক্ষার্থীরা। কিন্তু দীর্ঘ বিরতিতে মেস ছেড়ে বাড়িতে থাকায় এখন আবার আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা।

জবির এক তৃতীয়াংশ শিক্ষার্থী থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশে ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়। তবে বর্তমানে একসঙ্গে অনেক শিক্ষার্থী মেস-বাসা খোঁজ করায় পরীক্ষার আগে আবাসন নিশ্চিত করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঢাকায় এসে পরীক্ষা দেওয়ার আগেই আবাসন নিশ্চিত করার জন্য অধিকাংশ শিক্ষার্থীই গ্রাম থেকে চেষ্টা চালাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট, আত্মীয়-স্বজন ও সহপাঠীদের মাধ্যমে বাসার খোঁজ নেওয়াসহ বিভিন্নভাবে আবাসন নিশ্চিতের চেষ্টা করছেন তারা।

তবে আবাসনের অপ্রতুলতা ও অতিরিক্ত বাসা ভাড়াসহ বেশ কিছু জটিলতার কারণে কিছুসংখ্যক শিক্ষার্থী আবাসন নিশ্চিত করতে পারলেও অধিকাংশ শিক্ষার্থীই এখনো আবাসন ব্যবস্থা নিয় শঙ্কায় রয়েছেন।

জানা গেছে, গত জুনের শেষ দিকে সশরীরে পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এ ঘোষণায় গ্রামে থাকা অনেক শিক্ষার্থীই ঢাকায় মেস ঠিক করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পরীক্ষা না হওয়ায় মেস ছেড়ে আবারও বাড়িতে চলে যান। এরপর আবারও আগস্টের ১০ তারিখ থেকে সশরীরের পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে পুনরায় মেস খোঁজেন শিক্ষার্থীরা। তবে দেশব্যাপী করোনা সংক্রমণ বাড়ায় আবারও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

তবে আগামী ৭ অক্টোবর থেকে সশরীরে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ও স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার পর জবি শিক্ষার্থীরা পুনরায় মেস-বাসা ঠিক করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। অনেকে ৭-১০ দিন ধরে চেষ্টা করেও মেস-বাসা না পেয়ে বিকল্প হিসেবে আত্মীয়-স্বজনের বাসায় থেকে পরীক্ষা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তবে অধিকাংশ শিক্ষার্থীদেরই একমাত্র ভরসা মেস-বাসা। অনেকে আবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি টাকা দিয়েই রুম নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

তবে মেস-বাসা খুঁজতে ছাত্রীরাই বেশি ভুগছেন। তাদের দাবি, ছাত্রী হলে থেকে পরীক্ষা দিতে পারলে আবাসনের জন্য মানসিক চাপ থাকতো না। পরীক্ষার আগেই মেস নিশ্চিত করে ঢাকায় যাওয়া এই মুহুর্তে বেশ কষ্টসাধ্য।

তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা পুরোপুরি সমাধান না করা গেলেও শিক্ষার্থীরা সুস্পষ্টভাবে তাদের সমস্যা জানালে তা সমাধান করার চেষ্টা করা হবে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী চন্দ্রিমা রায় বলেন, ১৫ দিন ধরে মেস খুঁজছি, কিন্তু পাচ্ছি না। গত কয়েকবার পরীক্ষা হবে ভেবে আগের মেস অনেক দিন ধরে রেখেছিলাম। সেখানে অনেক টাকা লেগে গেছে। কিন্তু পরে মেস ছেড়ে দিতে বাধ্য হই। এখন যেহেতু পরীক্ষার তারিখ ফাইনাল, তাই সবাই মেস খুঁজছি। ঢাকা থেকে অনেক দূরে বাসা হওয়ায় ঢাকা গিয়ে সঙ্গে সঙ্গেই মেস পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না৷ সবাই একসঙ্গে বাসা খোঁজায় বাসা পাওয়াও দুর্লভ হয়ে গেছে। এদিকে এখনও আমরা মিডটার্ম দিচ্ছি, আবার ফাইনাল পরীক্ষার টেনশন। সব মিলিয়ে বাসা খুঁজে বের করার বিষয়টি অনেক ভোগাচ্ছে আমাদের। আগেই যদি আমাদের হলে উঠানো হতো তাহলে এ সমস্যা থাকতো না।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক শিক্ষক ড. প্রতিভা রানী কর্মকার বলেন, শিগগিরই ছাত্রীদের হলে উঠানো হবে। আমাদের ছাত্রীরা অনেক কষ্ট করছে, এটা ঠিক। কোভিড-১৯ ও বেশ কয়েকটি কারণে ছাত্রী হলটি পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। অর্ডিন্যান্স অনুসারে ছাত্রীরা সিট পাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, মেস বা বাসা ভাড়ার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের না। তারপরও কোনো শিক্ষার্থী সুস্পষ্টভাবে তার সমস্যার বিষয়টি জানিয়ে, কী সাহায্য চায় সেটির আবেদন ছাত্রকল্যাণ দপ্তরে দিতে পারে। তখন আমরা এটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেবো। এক্ষেত্রে ছাত্রকল্যাণ শুধু মাধ্যম হিসেবে কাজ করতে পারে।

রায়হান আহমেদ/ইউএইচ/এমএস