অরক্ষিত বেরোবির বধ্যভূমি
অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতিবিজড়িত রংপুরের দমদমায় অবস্থিত বেরোবির একমাত্র বধ্যভূমি। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পার হলেও এখনও সেটা অরক্ষিত। ফলে সেখানে অবাধে বিচরণ করছে গরু ছাগল।
রংপুর মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয় সূত্র জানায়, রংপুর-বগুড়া মহাসড়কের দমদমা ব্রিজের কাছে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কারমাইকেল কলেজের ৬ শিক্ষকসহ শত শত নারী-পুরুষকে ধরে এনে গুলি করে নির্মমভাবে হত্যা করে।
সরেজমিনে দেখা যায়, দীর্ঘদিন অরক্ষিত থাকার পর ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর কারমাইকেল কলেজ শিক্ষক পরিষদ সেখানে একটি স্মৃতিফলক নির্মাণ করেন। ফলকটির চারপাশে সীমানা প্রাচীর না থাকায় গাছের গুঁড়ি ফেলে রাখা হয়েছে।
অবশেষে ২০১০ সালের ২৯ ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ ও বধ্যভূমি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রথমদিকে কিছু মাটি কেটে সাইনবোর্ড টাঙানো হলেও দায়িত্ব নেয়ার ৫ বছর পরও সেটির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হয়নি। এমনকি বর্তমানে সেখানে নেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাইনর্বোডও। সীমানা প্রাচীর নির্মাণ না করায় পবিত্র সে স্থান আজ পরিণত হয়েছে গোচারণ ক্ষেতে।
অপরদিকে, এই বধ্যভূমিতে কোনো স্থাপনা না থাকায় দুইদিকে সীমানা প্রাচীর দিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে বহুতল ভবন। ফলে বিঘ্নিত হচ্ছে বধ্যভূমির প্রকৃত মর্মার্থ। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি নিশ্চিহ্ন হওয়ার আগেই এই বধ্যভূমিতে স্থাপনা নির্মাণের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস সংরক্ষণ করা।
বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রংপুর মহানগর ইউনিট কমান্ডার ও রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি সদরুল আলম দুলু বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্ব নিয়েও বধ্যভূমিটি অবহেলায়-অযত্নে পড়ে থাকাটা দুঃখজনক। বধ্যভূমিটি দ্রুত সংরক্ষণের দাবি জানান তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র বধ্যভূমিটির বেহাল দশা সর্ম্পকে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড. একেএম নূর-উন-নবী বলেন, বধ্যভূমিটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একজনকে দায়িত্ব দেয়া ছিল। বিষয়টি দেখছি।
এসএস/এমএস