ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

শীতার্তদের পাশে ইয়ুথ`স ভয়েস ফাউন্ডেশন

প্রকাশিত: ০৭:২৯ পিএম, ০৪ ডিসেম্বর ২০১৫

ইয়ুথ’স ভয়েস ফাউন্ডেশন। তরুণদের নিয়ে গঠিত একটি স্বেচ্চাসেবী সংগঠন। ভালবাসা ও উষ্ণতা নিয়ে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো যাদের কাজ। যাত্রা শুরু ২০১১ সাল থেকে। সম্প্রতি চট্টগ্রামে এ সংগঠন কর্তৃক পরিচালিত ইভেন্ট ‌‘ফাইট অ্যাগেন্সট উইন্টার-৫’ উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। প্রথম ধাপের ইভেন্টটির লক্ষ্য ছিল সচেতনতা সৃষ্টি ও তহবিল সংগ্রহ। নগরীর বিভিন্ন স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচশত স্বেচ্ছাসেবকের স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে এ ইভেন্টটি শেষ হয়।

শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে নীল-টিশার্টে পরিহিত স্বেচ্ছাসেবকগণ বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে নগরীর নয়টি পয়েন্ট-আগ্রাবাদ, জিইসি, প্রবর্তক, কাজির দেওরি, দুই নম্বর গেট, চকবাজার, ওআর নিজাম এবং খুলশী থেকে তহবিল সংগ্রহ শুরু করেন। এছাড়াও তারা বাড়ি-বাড়ি গিয়েও তহবিল সংগ্রহ করেন।

এই ইভেন্টটি মূলত দুটি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে আছে-তহবিল সংগ্রহ এবং দ্বিতীয় ধাপে শীত বস্ত্র ক্রয়পূর্বক শৈত্য কবলিত জনগোষ্ঠীর মাঝে বিতরণ। এ বছর প্রায় আটশ অনলাইনে নিবন্ধনকারীর মাঝে পাঁচশজনকে বেছে নেয়া হয় স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে। ইভেন্টটিতে স্বতস্ফুর্তভাবে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছে-এশিয়ান ইউনিভার্সিটি উইমেন্স-ফটোগ্রাফি ক্লাব, NSU YEF, লিন ওয়াটার। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে রেডিও ফুর্তি ও ফুড পার্টনার হিসেবে বুম টাউন রয়েছে।

‘ইভেন্টের মূল উদ্দেশ্য অনুদান সংগ্রহ নয় বরং সচেতনতা সৃষ্টি করা’ বললেন সংগঠনের সহ-সভাপতি রাকিবুল হাসান। সংগঠনটির সভাপতি তাহমিদ কামাল চৌধুরী বলেন, এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে মানুষকে মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য, আমরা মানুষ-ই পারি মানুষের পাশে দাঁড়াতে। আমাদের আশেপাশেই অনেকে আছেন যাদের শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ নেই। তাদেরকে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচানোর দায়িত্ব আমাদের। আমরাই পারি একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে এসে মনুষ্যত্ব রক্ষা করতে।

জানা যায়, ২০১১ সালে শুরু করে পঞ্চম বারের মতো এই শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ করতে যাচ্ছে ইয়ুথ ভয়েস ফাউন্ডেশন। প্রথমবার দুশত শিশুকে শীতের কাপড় দিয়েছিলেন, ২০১২ সালে ২৮০ জন, ২০১৩ সালে ৬৫০ জন শীতার্ত মানুষের মাঝে উষ্ণতার পরশ বুলিয়ে দিয়েছেন ইয়ুথ’স ভয়েজ পরিবারের সদস্যরা। শুধু তাই নয়, গত বছর এই সংগঠনটি তহবিল সংগ্রহ করে ২৫০০ শীতবস্ত্র বিতরণ করেন বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের মানুষের মাঝে যা বাঁচিয়েছে অনেকের জীবন। এ বছর তারা শীতবস্ত্র বিতরণ করতে যাচ্ছেন আবারো উত্তরাঞ্চলের জেলা ঠাকুরগাঁও্‌, সাতক্ষীরা, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল এবং চট্টগ্রাম পার্বত্য অঞ্চলের দুর্গম এলাকাগুলোতে।

এদিকে, সংগঠনের সম্প্রতি ইভেন্টটিতে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে চট্টগ্রামবাসীর কাছে। সেচ্ছাসেবকরাও অনেক খুশী এই রকম একটি সমাজসেবামূলক কাজ করতে পেরে। তারা বলেন, আজকাল যুবসমাজ পড়ালেখার চাপে খুবই আত্মকেন্দ্রিক হয়ে পড়ছে। ইয়ুথ’স ভয়েস তাদের মাঝে কর্মদ্দীপনাকে জাগিয়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এজন্য সে ইয়ুথ’স ভয়েসকে ধন্যবাদ জানায় তারা।

অন্যদিকে, এ ইভেন্টটির পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে ২ মাস ধরে নিরলসভাবে কাজ করে গেছে ইয়ুথ’স ভয়েসের সদস্যরা। যাদের মধ্যে রয়েছেন- তাহমিদ, রাকিব, শরীফ, জুনায়েদ, মোফাসসাল, আদনান, নাভীদ, রাদিত, ফারজিন, প্রান্ত, অপু, আবিদ, পুজা, ট্রুক, সুচিত্রা, মউলি, সামিহা, সাকিব, সামি, বার্তা, রাইহান, ফারিয়া, কারিমা, সুমাইয়া, সামিউর, নুজাত, মারযুক, সাওদা, নুসরাত, সাদমা্ন, আবরার প্রমুখ।

ইয়ুথ’স ভয়েস ফাউন্ডেশনের পথচলা শুরু হয় ২০১১ সালে প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সাবেক কিছু শিক্ষার্থীর হাত ধরে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল যুবসমাজের কর্মদ্দীপনাকে দেশের উন্নয়নে নিয়োজিত করা। ২০১১ সালে তাহমিদ, ফাহিম, শরিফ, মিথুন, সাদ, পিয়া, কিশওয়ার ও রাকিবের হাত ধরে যাত্রা শুরু হয় ইয়ুথ’স ভয়েজ-এর। পরে যুক্ত হন আদনান, নাভীদ, রাদিত, ফারজিন, মোফাসসাল সহ আর অনেকে।

বর্তমানে ৩৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বেছাসেবকগণ এ সংগঠনের সঙ্গে কাজ করছে বলে জানান সংগঠনটির প্রধান সভাপতি তাহমিদ কামাল চোধুরী। এই সংগঠটির মূল অনুপ্রেরণা হচ্ছে যুব সমাজের শক্তি দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়া বলেন ফারযিন যিনি ২০১৩ সাল থেকে এই সংগঠনের সঙ্গে জড়িত।

বর্তমানে সংগঠনটির দেশে-বিদেশে সদস্য সংখ্যা ৭০ জন। তাদের নিরলস প্রচেষ্টায় সংগঠনটি চার বছর যাবৎ সমাজমেবামূলক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গকৃত। দরিদ্র শিশুকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করা, সংযমের  মাসে ভাগ্যহত শিশুদের মাঝে ইফতার ও নতুন কাপড় বিতরণ, শীতবস্ত্র প্রদান ছাড়াও পরিবেশ-সচেতনতা, অটিজম সম্পর্কে সচেতনতা ও স্বীকৃতি অর্জন প্রভৃতি কাজে সংগঠনটি নিজেদের জড়িত রেখেছে। ইয়ুথ’স ভয়েস ফাউন্ডেশন তাদের কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ Young Bangla প্রদত্ত ‘জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড ২০১৫’ অর্জনে সক্ষম হয়।

এমএইচ/একে