ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

ইবিতে বাড়ছে বিদেশি মুখের সংখ্যা

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ০৩:৪৯ পিএম, ০৪ জুন ২০২১

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) দিন দিন বেড়েই চলেছে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। ক্যাম্পাসে বর্তমানে রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক বিদেশি শিক্ষার্থী। কিন্তু করোনা মহামারিসহ কিছু জটিলতায় স্থবির হয়ে আছে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া।

জানা যায়, ইসলাম ও আধুনিকতার সমন্বয়ে বিশ্বমানের পাঠদানের উদ্দেশ্যে ১৯৭৯ সালের ২২ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখানে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির চেষ্ঠা চালিয়েছেন কর্তৃপক্ষ।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের আবাসনের সুবিধার্থে ১৯৯৯ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল প্রতিষ্ঠিত হয়। এ হলে রয়েছে একটি আন্তর্জাতিক ব্লক। ব্লকে রয়েছে মোট ৬৪টি রুম। প্রতিটি রুমে দুজন করে ১২৮ শিক্ষার্থী অবস্থান করতে পারবেন। এছাড়া বিদেশি নারী শিক্ষার্থীদের জন্য দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে রয়েছে আবাসন সুবিধা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বিদেশি শিক্ষার্থী হিসেবে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ১৯৯৭-৯৮ শিক্ষাবর্ষে নেপালের জাকাউল মোস্তফা ভর্তি হন। এরপর ২০০০-০১ শিক্ষাবর্ষে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শিক্ষার্থী আনিসা আনসারী ভর্তি হয়েছিলেন বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে। আনিসা অনার্স-মাস্টার্স শেষ করলেও জাকাউল অনার্স শেষ না করেই ক্যাম্পাস ছেড়ে চলে যান।

দীর্ঘ ১৭ বছর পর আবার নতুন সাত শিক্ষার্থীর দেখা পায় বিশ্ববিদ্যালয়টি। এরা সকলেই ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এ বর্ষে এমফিলে দুইজন, মাস্টার্সে চারজন ও অনার্সে একজন বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হন।

ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স সেলের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয় ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে। এ বর্ষে মাস্টার্সে ২২ জন ও অনার্সে তিনজন ভর্তি হন। পরের শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্সে দুজন ও অনার্সে ৯ জন ভর্তি হন। সর্বশেষ ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে অনার্সে ১৪ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন ইবিতে। এসব শিক্ষার্থীদের অধিকাংশই নেপাল, শ্রীলঙ্কা, সোমালিয়া, ভারত ও নাইজেরিয়া থেকে আগত।

চারটি শিক্ষাবর্ষে ৫৪ জন ভর্তি হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬ জন। বাকিরা শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করে ইতোমধ্যে নিজ দেশে পাড়ি দিয়েছেন।

তবে মিস্কি আহমেদ সাঈদ ও হুসাইন আব্দুল কাদির ওমর নামের দুই সোমালিয়ান শিক্ষার্থীর মাস্টার্সের দুটি পরীক্ষা বাদ থাকায় তারা ফিরতে পারেননি এখনও। তারা উভয়েই বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৮-১৮ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থী।

jagonews24

জানা যায়, করোনার মধ্যে গত ৯ জানুয়ারি তাদের মাস্টার্সের চূড়ান্ত পরীক্ষা শুরু হয়। তবে আবার সরকারি নির্দেশনায় ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে পরীক্ষা স্থগিত করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ফলে বাকি থাকা দুটি পরীক্ষা ও নানা জটিলতায় দেশে ফিরতে পারেননি তারা। বর্তমানে ক্যাম্পাসের রেস্ট হাউজে মিস্কি সাঈদ ও আরো দুই ছাত্রী অবস্থান করছেন। এছাড়া পাঁচ সোমালিয়ান শিক্ষার্থী ঢাকাতে অবস্থান করছেন।

মিস্কি আহমেদ সাঈদ জানান, ‘করোনার আগেই আমার একাডেমিক কার্যক্রম শেষ হয়ে যেতো। কিন্তু দেড় বছর ধরে ক্যাম্পাসে আর্থিক সমস্যার মধ্যে অবস্থান করছি। পরীক্ষা দুটি কবে হবে তাও অনিশ্চিত। দুই বোনকে সঙ্গে নিয়ে রেস্ট হাউজে নিজেরাই রান্নাবান্না করে খাচ্ছি। কবে দেশে ফিরতে পারবো জানি না।’

ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট অ্যাফেয়ার্স সেলের পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহাদাৎ হোসেন আজাদ বলেন, ‘২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের সার্কুলার আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েসাইটে দিয়ে রেখেছি। এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমরা এটি পাঠিয়েছি। ৩০ জুন পর্যন্ত ভর্তির শেষ সময় ছিল। তবে উপাচার্য সার্কুলারের সময়সীমা বৃদ্ধির নির্দেশ দিয়েছেন’।

তিনি আরও বলেন, ‘অনলাইনে কিছু শিক্ষার্থী আবেদন করে রেখেছেন। তবে তাদের ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। করোনার কারণে ভর্তি প্রক্রিয়া স্থবির হয়ে থাকলেও আমাদের ক্যাম্পাসে বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

রায়হান মাহবুব/এসএমএম/এএসএম