ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

করোনার প্রকোপে বন্ধ হয়ে গেল জবির উন্মুক্ত পাঠাগার

বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক | জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় | প্রকাশিত: ১২:৩৩ পিএম, ০২ এপ্রিল ২০২১

করোনার প্রাদুর্ভাব আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উন্মুক্ত পাঠাগার। বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এছাড়াও পাঠাগারে রাখা শিক্ষার্থীদের যাবতীয় বই ও ব্যাগ সরিয়ে নিতে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে পাঠাগার বন্ধের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষোভ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

উন্মুক্ত পাঠাগারে কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, হল না থাকার কারণে পড়াশোনার পর্যাপ্ত পরিবেশ নেই। এ কারণে অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। মেসে পড়াশোনারও ভালো পরিবেশ নেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্মুক্ত পাঠাগারে তারা পড়াশোনার একটি ভালো পরিবেশ পান। কিন্তু করোনার কারণে এখন এটি বন্ধ করায় পড়াশোনায় ভীষণ ব্যাঘাত ঘটবে বলে জানান তারা।

এদিকে পাঠাগার বন্ধের নির্দেশনা পেয়েই হতাশ হয়ে ধীরে ধীরে নিজেদের বই ও ব্যাগসমূহ সরিয়ে নিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, উন্মুক্ত পাঠাগারে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের চেয়ে তুলনামূলক কম। অনেকে সকালে এসেই ব্যাগ গুছিয়ে নিয়েছেন।

করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে গত বছরের সেপ্টেম্বরে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল উন্মুক্ত পাঠাগারের কার্যক্রম পুনরায় চালু করেন। এ উদ্যোগে সাড়া দিয়ে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত পাঠাগারমুখী হতে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ও লোকপ্রশাসন বিভাগের মোট ৯টি রুমে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উন্মুক্ত পাঠাগারের কার্যক্রম পরিচালিত হতো।

উন্মুক্ত পাঠাগারের শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ বলেন,
‘করোনা মহামারির কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকলেও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় টিকে থাকার জন্য উন্মুক্ত লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করতেন এক ঝাঁক শিক্ষার্থী। হঠাৎ করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উন্মুক্ত লাইব্রেরি বন্ধ করে দেন। যেহেতু আমাদের আবাসিক হল নেই সে কারণে পড়াশোনার পর্যাপ্ত পরিবেশ না থাকায় অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পরিস্থিতি স্বাভাবিকের দিকে গেলে যত দ্রুত সম্ভব লাইব্রেরি যেন খুলে দেয়া হয়।’

রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুনায়েদ সাব্বির বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ায় সেপ্টেম্বরে জবির উন্মুক্ত পাঠাগার খুলে দেয় প্রশাসন। এতে আমরা পড়াশোনার জন্য সু্ন্দর একটি পরিবেশ পাই। এজন্য প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। কিন্তু পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় জবি প্রশাসন উন্মুক্ত পাঠাগার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা উন্মুক্ত পাঠাগারের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। প্রত্যাশা করছি দ্রুতই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে এবং আমরা পুনরায় পাঠাগারে আসতে পারব।’

উন্মুক্ত পাঠাগারের প্রতিনিধি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৭ম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পরিস্থিতি বিবেচনায় অনির্দিষ্টকালের জন্য পাঠাগার বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। আশা করছি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দ্রুতই আবার প্রাণবন্ত হয়ে উঠবে উন্মুক্ত পাঠাগার।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল জানান, করোনার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় আপাতত অনির্দিষ্টকালের জন্য উন্মুক্ত পাঠাগার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পাঠাগার খুলে দেয়া হবে।

রায়হান আহমেদ/ইএ/এমএস