রাবিতে আর্থিক অনুদান প্রদানে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি বিভাগে আর্থিক অনুদান দেয়ার ক্ষেত্রে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষকরা। তারা বলছেন, কোনো কোনো বিভাগকে পূর্ণ সুযোগসুবিধা দিচ্ছে আর কোনো বিভাগকে মোটেও দিচ্ছে না। এতে দুটো বিভাগের শিক্ষকদের মধ্যে সম্পর্কের অবনতি হচ্ছে বলে দাবি তাদের।
রোববার (২১ মার্চ) দীর্ঘ বিরতির পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অপসারণের দাবি নিয়ে আবারও আন্দোলনে নেমেছেন প্রগতিশীল শিক্ষকদের একাংশ। ‘দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে সকাল ১১ টায় শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ সিনেট ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. পুরনজিত মহালদারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে অবিলম্বে দুর্নীতিগ্রস্ত প্রশাসনের অপসারণের দাবি জানানো হয়।
এসময় ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং প্রশাসনের বিরুদ্ধে একটার পর একটা অভিযোগের প্রমাণ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। দুর্নীতি প্রমাণিত হওয়ার সত্ত্বেও নির্লজ্জভাবে তিনি উপাচার্য পদে বহাল রয়েছেন। তার মেয়াদ পূর্ণ হতে আর মাত্র দেড় দুই মাস সময় রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে তিনি একাডেমিক সুস্থ পরিবেশকে ইচ্ছাকৃতভাবে নষ্ট করার চেষ্টা করছেন বলে আমরা ইঙ্গিত পেয়েছি।’
অধ্যাপক মামুন আরও বলেন, ‘সিন্ডিকেটের অনুমোদন ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি উপাচার্য একক সিদ্ধান্তে লিজ দিতে পারেন না। কিন্তু বর্তমান উপাচার্য গোপনে সিন্ডিকেট সদস্যদের না জানিয়ে টেবিল এজেন্ডার মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তি ব্যক্তিখাতে ব্যবহার করছেন।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক এক্রাম উল্যাহ বলেন, ‘আমরা প্রায় দুই বছর থেকে দুর্নীতিবিরোধী শিক্ষক সমাজ বর্তমান প্রশাসনের দুর্নীতি ও অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কথা বলে যাচ্ছি। বর্তমান উপাচার্যের দুর্নীতির সত্যতা প্রমাণ করেছে ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর পরেও তিনি নির্লিপ্তের মত পদত্যাগ না করে স্বপদে বহাল আছেন।
ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. সুলতান উল ইসলাম বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতিবাজ প্রশাসন মুজিব শতবর্ষ উদযাপনে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজকে বাদ দিয়ে বিএনপি জামায়াতকে নিয়ে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক কাজ করেছেন। অন্যায়, অনিয়ম, দুর্নীতি, নিয়োগ-বাণিজ্য, স্বজনপ্রীতির কারণে তার বিবেকবুদ্ধি লোপ পেয়েছে। আমরা চাই উনি স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে বিশ্ববিদ্যালয়কে কলুষমুক্ত করবেন। ইউজিসি, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রধানমন্ত্রীর নিষেধাজ্ঞার পরও তিনি নিয়োগ-বাণিজ্য বন্ধ রাখেন নি।
তিনি আরও বলেন, ইউজিসি ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে রিট করতে চান তিনি। যাতে তার নিয়োগ বাণিজ্য চালিয়ে যেতে পারেন। আর যাকে দিয়ে রিট করাবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবিরের নেতা ছিল, তার পরিবার জামাত শিবিরের অংশ।
এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান, মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মজিবুল হক আজাদ খান, সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক আসাবুল হক, প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ড. জাহাঙ্গীর আলম সাউদ, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ও সাবেক প্রক্টর তারিকুল আহসান প্রমুখসহ মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রায় শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
সালমান শাকিল/আরএইচ/জিকেএস