ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

৯ মাসেও ফল নেই, চাকরিতে আবেদন নিয়ে হতাশায় শিক্ষার্থীরা

ক্যাম্পাস প্রতিবেদক | প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, ২০ অক্টোবর ২০২০

ঢাকা কলেজের ২০১৪-১৫ সেশনের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ ইব্রাহিম। ৯ মাস আগে পরীক্ষা দিয়ে এখনও ফলাফল পাননি। এমনিতেই ৪ বছরের অনার্স সম্পন্ন করতে সময় লাগছে ৬ বছর। তার ওপর দীর্ঘ ৯ মাসেও চতুর্থ বর্ষের ফলাফল প্রকাশ না হওয়ায় করতে পারছেন না চাকরির আবেদন।

ইব্রাহিম বলেন, ‘পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশের কথা থাকলেও দীর্ঘ ৯ মাসেও আমরা তা পাইনি। অনার্স শেষ বর্ষের ফলাফল না দেয়ার কারণে কোনো চাকরিতে আবেদন করতে পারছি না। একেতে সেশনজট তার ওপর আবার ফল প্রকাশে বিলম্ব। আমরা দুশ্চিন্তায় আছি।’

ঢাকা কলেজের এই শিক্ষার্থীর মতো অধিভুক্ত সাত কলেজের এমন হাজারো শিক্ষার্থী হতাশায় ডুবে রয়েছেন। হতাশার কারণ হিসেবে শিক্ষার্থীরা বলছেন, ‘শুধুমাত্র কর্তৃপক্ষের গাফিলতিতে সেশনজট, ফলাফল প্রকাশে বিলম্বসহ নানা বিষয় শিক্ষার্থীদের মানসিক পীড়ার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

ভুক্তভোগী এসব শিক্ষার্থীরা জানান, ২০১৪-১৫ সেশনের চতুর্থ বর্ষের লিখিত পরীক্ষা ২০১৮ সালে হওয়ার কথা থাকলেও তা শেষ হয় চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি। অধিভুক্ত সাত কলেজে মোট ২৫টি চলমান বিভাগের মধ্যে ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং, অর্থনীতি, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, উদ্ভিদবিজ্ঞান, গণিত, পদার্থ বিজ্ঞান, ভূগোল ও পরিবেশ এই ৮টি বিভাগের ফলাফল এখনও প্রকাশ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর ফলে একই সেশনের অন্য বিভাগের শিক্ষার্থীরা চাকরিতে আবেদন করতে পারলেও বঞ্চিত হচ্ছেন এই ৮ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। ‘পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩ মাসের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ হবে’- সাত কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের এমন প্রতিশ্রুতিও অকার্যকর রয়েছে।

এরই মধ্যে গতকাল (সোমবার) প্রকাশ হয়েছে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর আগেই এসব বিভাগের ফলাফল প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী ঈষিতা দাস বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ার পর থেকেই আমরা বিভিন্ন জটিলতার শিকার হচ্ছি। আমাদের ২০১৪-১৫ সেশনের ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ৯ মাস আগে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা রেজাল্ট পাইনি। রেজাল্ট প্রকাশ না করার কারণে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষাগুলোতে আবেদন করতে পারছি না। বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু রেজাল্টের জন্য কিছুই করতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘রেজাল্ট প্রকাশের পরও দেখা যায়, বিভিন্ন জটিলতার কারণে রেজাল্ট আসে না। আবার স্টুডেন্টদের হয়রানির শিকার হতে হয়। দ্রুত রেজাল্ট প্রকাশের দাবি জানাচ্ছি।’

এছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থীদের স্নাতক শেষ হলেও অধিভুক্ত সাত কলেজের এই সেশনের (২০১৪-১৫) শিক্ষার্থীদের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষাই নিতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। এতে সেশনজটে পড়ে চরম হতাশায় দিন কাটছে তাদের।

ঢাকা কলেজের ২০১৫-১৬ সেশনের শিক্ষার্থী তৌকির আহমেদ বলেন, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া আমাদের সেশনের শিক্ষার্থীদের অনার্স শেষ হলেও আমরা এখনও পরীক্ষাই দিতে পারিনি। কোনো চাকরিতে আবেদনও করতে পারছি না। এতে চাকরির বাজারে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি।’

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ প্রশাসনকে আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান এই শিক্ষার্থী।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে অধিভুক্ত সাত কলেজের সমন্বয়ক ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্ল্যাহ খোন্দকার বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের এ সংক্রান্ত সমস্যার বিষয়ে আমরা সাত কলেজের অধ্যক্ষদের নিয়ে সভা ডেকেছি। আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে ঢাকা কলেজে সভা শেষে এসব বিষয়ে লিখিত আকারে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে জানাব।’

এ বিষয়ে জানতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীকে একাধিকবার কল দিলেও তার নম্বরটি ব্যস্ত পাওয়া যায়।

নাহিদ হাসান/এফআর/এমকেএইচ