সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব : গওহর রিজভী
রাষ্ট্রের সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী। তিনি বলেছেন, ‘সমাজের সব স্তরের মানুষের পাশাপাশি নারী-পুরুষের বৈষম্য দূর করার দায়িত্ব প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।’
রোববার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজবিজ্ঞান অনুষদের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ফারজানা মাহমুদের বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। বইটির নাম ‘সেক্যুলারিজম, জেন্ডার ইকুয়ালিটি পলিটিক্স অ্যান্ড দ্য স্টেট’।
গওহর রিজভী বলেন, সমাজের সব স্তরের মানুষের জন্য ‘প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে না পারলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। মেধাভিত্তিক সমাজ গড়তে হলে নারীর প্রতি বিদ্বেষ-বৈষম্য দূর করতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) অতীত গৌরবের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সম্প্রতি কোটা আন্দোলন হয়েছে। আমি ওই আন্দোলনের বিরুদ্ধে নই। তবে আমি কোটা পুনর্বিন্যাস নয়, পুনর্গঠনের পক্ষে। আমরা কেউ গ্রামের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করি, কেউ শহরে। এ ক্ষেত্রে শহরের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা সুবিধাবঞ্চিতরা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়। এটি দূর করতে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানকে পদক্ষেপ নিতে হবে। সবাই যাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমান যোগ্যতা, সুযোগ নিয়ে চাকরিতে প্রবেশ করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে। চাকরিতে প্রবেশের পরে দক্ষতা যোগ্যতা বিবেচনায় নিয়ে পদোন্নতির বিষয়টি দেখতে হবে।
তিনি বলেন, ‘মেরিট বেজ সোসাইটি (জ্ঞান নির্ভর সমাজ) গঠন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় রাষ্ট্র ফেল করছে। ফলে গত ৫০ বছরে একটা বড় গ্যাপ দেখা দিয়েছে। সব ক্ষেত্রে ব্যালান্স আনতে হবে। লিঙ্গ ও সামাজিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। দেশে ১০-১২ মিলিয়ন দলিত রয়েছে। অথচ আমরা বলছি, দেশে কোনো দলিত নেই। তাদের জন্যও কাজ করতে হবে।’
এ ধরনের একটি বই প্রকাশে উদ্যোগ নেয়ায় লেখকের প্রশংসা করেন গওহর রিজভী। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা বলেন, ‘এ ইস্যুতে বই লিখে লেখক সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ফখরুল আলম বলেন, ‘ধর্মের কথা বলে ধর্মনিরপেক্ষতায় বারবার আঘাত এসেছে। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতা তো ধর্মহীনতা নয়। বিষয়টি যুক্তিতর্ক দিয়ে ভালোভাবে উপস্থাপিত হয়েছে ফারজানার এ বইয়ে। এছাড়া গণতন্ত্রের বিকাশ, আইনের শাসন নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানে পরিবর্তন আনার কথাও বলেছেন লেখক।’
অনুষ্ঠানে লেখক ফারজানা মাহমুদ বলেন, নারীর প্রতি সামাজিক বৈষম্যের প্রতিবাদ করতে গিয়েই তিনি এ বিষয়ে লেখালেখির অনুপ্রেরণা পান। এর সঙ্গে ধর্মনিরপেক্ষতা, রাজনীতি ও রাষ্ট্রের বিষয়টিও যুক্ত হয়েছে।
এইউএ/এফআর/জেআইএম