জাবিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে প্রশাসনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ১ হাজার ৪৪৫ কোটি টাকার অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ তিন দফা দাবির চলমান আন্দোলনে সৃষ্ট সংকট সমাধানে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রশাসনিক ভবনের কাউন্সিল কক্ষে এ আলোচনা শুরু হয়।
আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক আমির হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নুরুল আলম, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক শেখ মো. মনজুরুল হক, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) রহিমা কানিজ, প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রকৌশলী নাসির উদ্দিন এবং নির্বাহী প্রকৌশলী (সিভিল) আহসান হাবিব অংশ নেন।
প্রতীক্ষিত এ আলোচনায় আন্দোলনকারী ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ প্ল্যাটফর্মের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশ নেয়।
এরা হলেন পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দীন, অধ্যাপক খবির উদ্দিন, দর্শন বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান, রায়হান রাইন, এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া, বাংলা বিভাগের শামীমা সুলতানা, তারেক রেজা, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের অধ্যাপক নুরুল ইসলাম।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম পাপ্পু, প্রচার সম্পাদক মারুফ মোজাম্মেল, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সভাপতি নজির আমিন চৌধুরী জয়, সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক, কার্যকরী সদস্য রাকিবুল হক, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ দিদার, সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মোহাম্মদ, সাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে, দফতর সম্পাদক রেবেকা আহমেদ এবং বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ জাবি শাখার মুখপাত্র খান মুনতাসির আরমান, যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীন শিশির ও আরিফুল ইসলাম আলোচনায় অংশ নিয়েছেন।
আলোচনায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। আলোচনা শেষে উভয় পক্ষই বৈঠকের সিদ্ধান্ত প্রেসকে অবহিত করবে বলে জানানো হয়েছে।
এর আগে তিন দফা দাবিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর থেকে টানা তিনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। ৫ সেপ্টেম্বর অবরোধ চলাকালে উপাচার্য তাদের আলোচনায় বসার প্রস্তাব দিলে দাবির ব্যাপারে ‘আন্তরিকতার’ শর্তে রাজি হন তারা। পরে ৭ সেপ্টেম্বর আলোচনার প্রাক্কালে আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীকে ছাত্রলীগের এক নেতা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করলে সেদিনের মতো আলোচনা ভেস্তে যায়।
আলোচনা নিয়ে আশাবাদী ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ প্ল্যাটফর্মের সমন্বয়ক দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘এক টেবিলে সমাধান না হলেও একটা নীতিগত সিদ্ধান্ত তো আসতে হবে। পরে সম্পূরক আলোচনা হতে পারে।’
আলোচনা-পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘আলোচনা শেষে আমরা নিজেদের মধ্যে বসব। তারপর গণমাধ্যমকে জানাবো।’
উল্লেখ্য, তিন দফা দাবিতে গত ২৫ আগস্ট থেকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’র ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এমবিআর/পিআর