ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

সবুজ চত্বর, সেরা পড়ালেখা

প্রকাশিত: ১২:২৯ এএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫

বিশাল খেলার মাঠ। মাঠে নরম সবুজ ঘাস। মাঠের সীমানা ছুঁয়ে চারদিকে গোল হয়ে সারি সারি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। গাছের সারির পাশ দিয়ে কংক্রিটের তৈরি মজবুত রাস্তা। বিশাল বড় ক্যাম্পাসের এখানে ওখানে চত্বরের সঙ্গে মিলিয়ে শোভা পাচ্ছে লাল ইটের দেয়ালের তৈরি প্রাচীন ঐতিহ্যের ভবন।

যারা দুই তিন বছরের মধ্যে ক্যাম্পাসে আসেননি, তারা হুট করে এলে চমকে উঠবেন। এটাই কী রাজশাহী কলেজ চত্বর? এত সুন্দর ও শোভাময়। পরম যত্নে এ ক্যাম্পাস এখন এত সুশোভিত ও প্রকৃতিময়। সুন্দর নামাঙ্কিত উজ্জ্বল ভবনের পাশে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন প্রকারের গাছ।

নগরীর প্রাণকেন্দ্রে রাজশাহী কলেজের প্রাচীন ভবনগুলো এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে, তবে তা আরো বেশি উজ্জ্বল। ধূলি ধূসরিত রাস্তাগুলো কংক্রিটের তৈরি। সব সময়ের মতো রাজশাহী কলেজ শুধু পড়ালেখায়ই ভালো নয়, সাংস্কৃতিক চর্চায়ও এগিয়ে আছে এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।

আছে ডিবেটিং ক্লাব, নাট্য সংগঠন, রক্তদাতা সংগঠন ও কলেজ কর্তৃক বিভিন্ন ধারাবাহিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলেজ চত্বরের বিভিন্ন জায়গা শিক্ষার্থীদের কলরোলে মুখরিত। শিক্ষার্থীরা ক্লাসেও পিছিয়ে নেই। ক্লাসে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি শতভাগ। আর এর সবই সম্ভব হচ্ছে রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মহা. হবিবুর রহমানের উদ্যোগে ও কলেজ শিক্ষকদের সহযোগিতায়।

কলেজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালে কলেজ কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে ক্যাম্পাসকে শোভাময় করার লক্ষ্যে প্রায় একশ প্রজাতির কয়েক হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। ক্যাম্পাসের শোভাবর্ধন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা ও বিলুপ্ত প্রজাতির গাছ সংরক্ষণের উদ্যোগে এ গাছ লাগানো শুরু হয়। প্রাকৃতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীরা যেন আরো উৎসাহী ও প্রাণবন্তভাবে পড়ালেখা করতে পারে সেই লক্ষ্য নিয়েই কলেজ কর্তৃপক্ষ গাছগুলো রোপণ করেছেন।

কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, এ পর্যন্ত কলেজে বিভিন্ন প্রকার ওষুধি, ফলজ , অর্নামেন্টাল (বাহারী গাছ), বিভিন্ন ঋতুভিত্তিক ফুলের গাছ ও বৃক্ষ জাতীয় গাছ লাগানো হয়েছে। প্রতিটি গাছের চারপাশ বেঁধে দেয়া হয়েছে নিজস্ব অর্থায়নে। বৃক্ষের গায়ে ঝুলছে দেশীয় ও বৈজ্ঞানিক নামাঙ্কিত ফলক।

rajshahi university

কলেজের অধ্যক্ষ হবিবুর রহমান জানান, আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে কলেজের প্রশাসন ভবনের পেছনের পুকুর সংস্কার করে তার চার পাড় বেঁধে দিয়ে টিএসসির আদলে আড্ডা দেয়ার স্থান গড়ে তোলা হবে। এর ফলে শিক্ষার্থীরা কুসর্গের স্পর্শ বাঁচিয়ে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বেড়ে উঠতে পারবে।

এছাড়া কলেজের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারকে ডিজিটালাইজেশন করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। কলেজ হোস্টেলের পাশে নির্মিত দেশের প্রথম শহীদ মিনারকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য শহীদ মিনার টাওয়ার নির্মাণ করা হবে। যেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের ইতিহাস লিপিবদ্ধ থাকবে। কলেজের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারকেও সিরামিক ইট দিয়ে বেঁধে দেয়ার পরিকল্পনা আছে বলে জানান তিনি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিকা জামাল সাথী ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শাহাবুদ্দিন আহমদ জাগো নিউজকে বলেন, বৃক্ষরোপণের কারণে পরিবেশ সুন্দর হয়েছে। পড়ালেখার মান এবং ভালো ফলাফলের জন্য ক্লাসে উপস্থিতিও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই কলেজ নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি।

কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী মাহবুব মোর্শেদ হক জাগো নিউজকে বলেন, এই কলেজে প্রতিটি ক্লাসই হয়। কোনো শিক্ষার্থী যদি মনোযোগ সহকারে ক্লাস করেন, তাহলে তিনি অনেক কিছু শিখতে পারবেন।

রাজশাহী কলেজের সহযোগী অধ্যাপক উদ্ভিদবিদ ড. আ ন ম আল মামুন চৌধুরী বৃক্ষরোপণকে মহৎ উদ্যোগ উল্লেখ করে জাগো নিউজকে বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা করা, কলেজের সৌন্দর্য বর্ধন ও বিলুপ্তি প্রজাতির উদ্ভিদ সংরক্ষণে বৃক্ষরোপণ একটি মহৎ উদ্যোগ। প্রাকৃতিক পরিবেশে শিক্ষার্থীরা আরো প্রাণবন্ত ও উৎসাহী হয়ে পড়ালেখা করতে বৃক্ষরোপণ সহযোগিতা করবে বলে জানান তিনি।

রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ মহা. হবিবুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, বৃক্ষরোপণের উদ্দেশ্য কলেজে সুস্থ ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ তৈরি করা। যাতে করে শিক্ষার্থীরা সবুজ চত্বরে মনোযোগী হয়ে ভালোভাবে পড়ালেখা করতে পারে।

এসএস/এমএস