না ফেরার দেশে জবি শিক্ষার্থী সিরাজুল
সবাইকে কাঁদিয়ে নীরবে চলে গেলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী সিরাজুল ইসলাম। শনিবার (১৭ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর সিটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
জবি প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
রসায়ন বিভাগের ১৪তম আবর্তনের (২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী ছিলেন সিরাজুল। তার গ্রামের বাড়ি পাবনা জেলার আটঘরিয়া উপজেলায়। মেধাবী শিক্ষার্থী সিরাজুল কেমিস্ট্রি অলিম্পিয়াড ২০১৬ তে আঞ্চলিক পর্যায় বিজয়ী হয়ে জাতীয় পর্যায়ে অংশগ্রহণ করেছিল।
জানা যায়, ভাইরাল এনসেফালাইটিস নামক মস্তিষ্ক সংক্রামণজনিত রোগে তার মৃত্যু হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই তার মাঝে মাঝে জ্বর হতো। সর্বশেষ ঈদের ছুটিতে গ্রামের বাড়িতে গেলে ঈদের দিন বিকেলে জ্বর নিয়ে পাবনা সদর হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে দুদিন চিকিৎসা নেয়ার পর অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রাজশাহী অথবা ঢাকায় নিতে বললে ঢাকা সিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার (১৬ আগস্ট) সিটি হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।
এ বিষয়ে সিরাজুলের প্রতিবেশী ও সহপাঠী মাহমুদ বলেন, ঈদের দিন বিকেলে সিরাজুলকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন ডাক্তার তাকে রাজশাহী অথবা ঢাকায় নিয়ে যেতে বলে। যেহেতু জ্বর, ডেঙ্গু বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল। কিন্তু তিনবার ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হলেও তা ধরা পড়েনি।
সিরাজুলের সহপাঠী ও রসায়ন বিভাগের ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী জামশেদ দিপু বলেন, ওর অসুস্থতার বিষয়ে আগে কিছুই জানতাম না। ঈদের ২-৩ দিন পর ফোনে কথা হয়। তখন বলে ওর কিডনিতে পানি জমেছে, ঢাকায় চিকিৎসা করাতে আসছে।
রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক অমিনুল হক বলেন, খবর পেয়ে বিকেলে সিটি হাসপাতালে যায়। তখন ওকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। আমি চলে যাওয়ার কিছু সময় পর ও মারা যায়।
তিনি আরও বলেন, ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি ভাইরাস থেকে ব্রেনে সংক্রামণ হয়ে মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক শুভ বলেন, ওর রোগটা হল ভাইরাল এনসেফালাইটিস। এটা মূলত ভাইরাস থেকে মস্তিষ্কে সংক্রামণ ঘটায়। রোগীর পরিবার থেকে বলা হয়, দুদিন আগে থেকে জ্বর হচ্ছে। কিন্তু রোগী বলেছে, আগেও তার জ্বর আসলে সে গুরুত্ব দেয়নি। ১৬ তারিখ রাত আনুমানিক ৩টার দিকে আমরা তাকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নিই। তার ডেঙ্গু পরীক্ষা করা হয়েছে, রক্তে প্লাটিলেটের পরিমাণ সামান্য কম থাকলেও সব রিপোর্টই নেগেটিভ এসেছে।
প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ওকে নিয়ে শনিবার সন্ধ্যার দিকে পরিবারের সদস্যরা পাবনার উদ্দেশে রওনা হন। আমাদের একজন শিক্ষক হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন। যদি আগে খবর পেতাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ওর চিকিৎসা ব্যয় বহন করা হতো।
ইমরান খান/জেএইচ/এমএস