নামাজ পড়ে বের হতেই ছোবল দিল সাপ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) ক্যাম্পাসে বেড়েছে বিষধর সাপের প্রকোপ। বিষধর সাপের দংশনের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তিও হয়েছেন এক শিক্ষার্থী। এতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ক্যাম্পাসজুড়ে।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়ে বের হওয়ায় সময় বিষধর সাপের দংশনের শিকার হন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মানিক মিয়া। তার বাড়ি গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, শিক্ষক-কর্মকর্তা ডরমেটরি, আবাসিক হল, কেন্দ্রীয় মসজিদ রাস্তাসহ সর্বত্রই প্রতিনিয়ত দেখা মিলছে বিষধর সাপের। সাপ ছাড়াও বেড়েছে শিয়াল-কুকুরের উপদ্রব। ফলে ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার মাগরিবের নামাজ পড়ে বের হওয়ার সময় মানিক মিয়ার স্যান্ডেলের ওপর একজোড়া সাপ অবস্থান করছিল। অসাবধানতাবশত স্যান্ডেলে পা দেয়া মাত্রই তার ডান পায়ের আঙুলে কামড় দেয় সাপ। পরে তাকে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ওইদিন বিকেলেই শিক্ষক ডরমেটরির ভেতর থেকে বের হয় বিষধর কোবরা সাপ। পরে তা মারতে গিয়ে রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তারিকুল ইসলাম আঘাত পান।
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় একাডেমিক ভবনের ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের অফিস কক্ষসহ আরও একটি কক্ষে সাপ দেখা যাওয়ায় অনির্দিষ্টকালের জন্য তা তালাবদ্ধ রয়েছে।
ওই বিভাগের শাখা কর্মকর্তা এ কে এম রাহিমুল ইসলাম জানান, সাপের উপদ্রব বুঝতে পেরে কক্ষ দুটি সার্চ করলে ছয়-সাতটি সাপের বাচ্চা পাওয়া যায়। কিন্তু মা সাপটি না পাওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থে কক্ষ দুটি প্রায় এক মাস ধরে তালাবদ্ধ।
সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, ক্যাম্পাসের একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল, শিক্ষক-কর্মকর্তা ডরমেটরি, কেন্দ্রীয় মসজিদের আশপাশ ও রাস্তা ঝোপঝাড়ে ভরে গেছে। সেগুলোই শিয়াল-কুকুর ও বিষাক্ত সাপ-পোকামাকড়ের অভয়ারণ্য হয়ে পড়েছে। ফলে প্রচণ্ড গরমে এসব বিষধর সাপ প্রতিনিয়ত ঝোপঝাড় থেকে বের হচ্ছে।
এমনকি সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের পরিপ্রেক্ষিতে জীবাণুবাহী এডিস মশার প্রজনন ও বিস্তার রোধেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিয়াল-কুকুরের পর সাপের উপদ্রবে ক্যাম্পাসে চলাচলে নতুন আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার না করায় সাপের উপদ্রব বেড়েই চলছে। কিন্তু প্রশাসন এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ও পরিচ্ছন্নতা শাখার সচিব মো. আলী আহসান জাগো নিউজকে বলেন, জঙ্গল পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়েছে। এডিস মশা বিস্তার রোধে সিটি করপোরেশন থেকে আজ স্প্রে করা হবে।
সার্বিক বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
সজীব হোসাইন/এফএ/পিআর