ভিডিও EN
  1. Home/
  2. ক্যাম্পাস

মানসম্মত শিক্ষায় গবেষণা জরুরি : ফরাসউদ্দিন

জাগো নিউজ ডেস্ক | প্রকাশিত: ০৭:৪২ পিএম, ২১ জুলাই ২০১৯

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেছেন, ‘বিগত শতাব্দী থেকেই শিক্ষাখাতের বিভিন্ন দিক ও বহুমুখী প্রবণতা দেখা দেয়। যেমন ধর্ম, প্রকৃতি ও সমাজ বিষয় ছাপিয়ে পাঠ-পঠনের বিষয়বস্তুতে কর্মসংস্থানের প্রশ্নটি সামনে চলে আসে।’

তিনি বলেন, ‘সকল পর্যায়েই সুপ্তভাবে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশ্নটি অন্তর্ভুক্ত থাকলেও স্পষ্টভাবে বৃত্তিমূলক শিক্ষার মাধ্যমে মানবকে দক্ষ মানব সম্পদে ও প্রযুক্তি সমৃদ্ধ উচ্চশিক্ষার মাধ্যমে মানব মূলধন হিসেবে গড়ে তোলার বিষয়গুলো এখন অগ্রাধিকার পাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের মতো একটি কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রথমে অনুন্নত থেকে স্বল্পোন্নত এবং বর্তমানে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠে আসার যোগ্যতা অর্জনে শিক্ষা একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।’

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশের সঙ্গে সংযুক্ত কিছু সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নশীল দেশের প্রতিযোগিতাকালে আর পাওয়া যাবে না। বিশেষ করে শিল্পোন্নয়নের মাধ্যমে টেকসই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত হতে হলে মানসম্মত শিক্ষাক্ষেত্রে জ্ঞান বিজ্ঞানে পারদর্শিতা অর্জন করতে হবে এবং প্রযুক্তি ও উন্নয়ন কৌশল বিষয়ে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক গবেষণা কাজে বিনিয়োগ বাড়ানো জরুরি।’

২১ জুলাই চট্টগ্রামের নেভি কনভেনশন সেন্টারে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির দ্বিতীয় কনভোকেশন স্পিকার হিসেবে তিনি এসব বলেন। এবারের কনভোকেশন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ। বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি।

স্বাগত বক্তব্য দেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী ও শিক্ষায় একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন।

প্রফেসর ড. কাজী শহীদুল্লাহ ‘ডিগ্রি অর্জন শুধুমাত্র সার্টিফিকেট নয়, বরং শিক্ষার্থীদের সাধনা, চর্চা ও সততার ফসল’ মন্তব্য করে বলেন, ‘‘আমরা পরিবর্তনশীল বৈশ্বিক অর্থনীতিতে বাস করছি। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে আমাদের টিকে থাকতে হলে শিক্ষার মান উন্নত করতে হবে। শিক্ষার মান যত উন্নত হবে, অর্থনীতি তত উন্নত হবে।’’ শিক্ষার মান উন্নত করতে হলে যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে, গবেষণাখাতকে সচল করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় যোগ্য মানবসম্পদ সৃষ্টির মাধ্যমে বৈশ্বিক ও জাতীয় সমস্যা সমাধান করতে পারে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই লক্ষ্যে ভূমিকা রাখছে। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি তাদের অন্যতম। অনেকের মতে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় বেকার তৈরির কারখানা। বস্তুত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি ও দক্ষতা যুক্ত হলে বেকারত্ব দূর হবে। সংস্কৃতি ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা যোগ্য নাগরিক হয়ে ওঠবে। জ্ঞান চর্চা করলে হবে না, জ্ঞানের বাস্তব প্রয়োগ ঘটাতে হবে। যুগোপযোগী শিক্ষা দিয়ে তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ জনগোষ্ঠীতে রূপান্তর করতে না পারলে বাংলাদেশ ২০২১ সালে মধ্যম আয়ের ও ২০৪১ সালে উচ্চ আয়ের রাষ্ট্রে পরিণত হবে না।’

বিশেষ অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী এমপি বলেন, ‘এই ইউনিভার্সিটি উচ্চশিক্ষার পাদপীঠ। জ্ঞানচর্চা ও জ্ঞান সৃজনের সুমহান কেন্দ্র। এই ইউনিভার্সিটি থেকে আজকে যারা প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি সমাপনের স্বীকৃতিস্বরূপ সনদ নিয়ে যাচ্ছেন, তাদের আহ্বান জানাই, বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো তারাও যেন অ্যালামনাই হিসেবে নতুন জ্ঞান সৃষ্টি ও দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরিতে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির সঙ্গে যুক্ত থাকেন ও ভূমিকা রাখেন।’

তিনি বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণাখাতে বিশেষ অবদান রাখছে। শুধু সরকার নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষও গবেষণার ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে।’

স্বাগত বক্তব্যে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষাদান করে না, নতুন জ্ঞানও সৃষ্টি করে। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। পাশ্চাত্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় দিয়ে। প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিও বেসরকারি। বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ও জাতীয় সংস্কৃতিতে ভূমিকা রাখতে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি উচ্চমান সম্পন্ন নাগরিক তৈরি করছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে জ্ঞান সৃষ্টি করতে হলে গবেষণাতে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেও প্রাধান্য দিতে হবে। সেজন্য সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কেও এমফিল ও পিএইচডি গবেষণার অধিকার দিতে হবে।’

কনভোকেশন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইউজিসির সদস্য ড. সাজ্জাদ হোসেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরিন আকতার প্রমুখ।

কনভোকেশনে ১১১২ জন গ্র্যাজুয়েট তাদের শিক্ষা সমাপনী সনদ গ্রহণ করেন। কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফল অর্জন করায় সমাবর্তনে ১১ জন গ্র্যাজুয়েটকে পদক প্রদান করা হয়।

অনুষ্ঠান শেষে বেলা ৩টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করা হয়। সঙ্গীতশিল্পী নোবেল এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করেন।

এমআরএম/জেআইএম

আরও পড়ুন