রাবি ছাত্রলীগ সভাপতিসহ ৭ নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়াসহ সাত নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও লিচু চুরির অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। নগরীর হেতেমখা এলাকার আব্দুল্লাহ ইবনে মনোয়ার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজশাহী মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে গত ১৫ মে মামলাটি করেন। আগামী ১৬ জুলাই আসামিদের আদালতে হাজিরার জন্য ডাকা হয়েছে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী মিজানুর রহমান বাদশা মঙ্গলবার দুপুরে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গোলাম কিবরিয়া ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- রাবি ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি সাদ্দাম হোসেন, আইন বিভাগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান আলী, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কানন, উপ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান আশিক ও কর্মী মেহেদী হাসান বিজয়। এছাড়াও ক্যাম্পাসের বহিরাগত কিন্তু ছাত্রলীগ সভাপতির কক্ষে থাকেন মো. আকাশ নামে একজনকেও এই মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, মামলার আসামিরা দুর্দান্ত চাঁদাবাজ, দাঙ্গাবাজ, পরধন লোভী। আসামিরা সমাজে এমন কোনো খারাপ কাজ নেই যে করতে পারে না। বাদী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ গোদাগাড়ী বাগানের আম ও লিচু চলতি মৌসুমসহ (২০১৯-২০) দুই মৌসুমের জন্য এক লাখ ৫১ হাজার ৯৯৯ টাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের নিকট হতে লিজ গ্রহণ করে। বর্তমান সময় অতিক্রান্ত হয়েছে। লিজ সময় অতিক্রান্ত হওয়াকালীন উপারোক্ত নামীয় আসামিরাসহ আরও ১৫/২০ জন গত ০৭/০৫/১৯ তারিখে রাতে আনুমানিক ৮টায় গোধাগাড়ী বাগানে অবৈধ অস্ত্র-শস্ত্রসহ মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে বাদীর কাছ থেকে ২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ সময় বাদীর সঙ্গে সাক্ষীরাও থাকায় আসামিরা কোনো অঘটন ঘটাতে না পেরে বাদীকে হুমকি দেয়। তারা বাদীকে দুই দিনের মধ্যে দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিতে বলে। না হলে বাদীকে বাগান থেকে আম ও লিচু না পাড়তে না দেয়ার হুমকি দেয়। অবশেষে ঘটনার দিন ০৯/০৫/১৯ তারিখ বিকেল ৪টায় উপরোক্ত আসামিরাসহ অজ্ঞাতনামা ১৫/২০ জন মিলে বাগানের লিচু পাড়তে থাকে।
এজহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, বাগানের পাহাড়াদার লিচু পাড়তে নিষেধ করলে ১নং আসামি গোলাম কিবরিয়া বাদীকে কিল ঘুষি মারে এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে বাগান থেকে দূরে সরে যেতে বলে। আসামিরা সকলে মিলে বাগানে প্রায় দেড় লাখ টাকার লিচু চুরি করে। বাগানের পাহাড়াদার কিছু দূরে গিয়ে মোবাইল ফোনে বাদীকে ঘটনাটি জানালে আসামিরা চুরিকরা লিচুসহ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
আসামিরা এখনো চাঁদার হুমকি অব্যাহত রেখেছে। এতে বাদীর জীবন হুমকির মুখে রয়েছে। বাদী গত ০৯/০৫/১৯ তারিখে মতিহার থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলাটি গ্রহণ না করে আদালতে গিয়ে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেন। পরবর্তীতে আত্মীয়স্বজন ও নিকটজনদের সঙ্গে আলোচনা করে আদালতে গিয়ে মামলা করা হয়।
মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে রাবি ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আমি কোনো ধরনের চাঁদা দাবি করিনি। আর যারা বাগানটির টেন্ডার নিয়েছে তারা জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে জড়িত। আমাকে রাজনৈতিকভাবে হেয় করার উদ্দেশ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমি তাদের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করব।
সালমান শাকিল/আরএআর/জেআইএম