ঢাবির দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ও ইডেন মহিলা কলেজের দুই ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ঢাবির দুই ছাত্রের বিরুদ্ধে। গত ১ সেপ্টেম্বর ভুক্তভোগী দুই ছাত্রী অভিযুক্ত দুই ছাত্রের শাস্তি দাবি করে ঢাবির ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর অধ্যাপক ড. আমজাদ আলীর আছে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
প্রক্টর অধ্যাপক ড. আমজাদ আলী জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মেয়ে দুটি আমাদের কাছে প্রেম প্রতারণাসহ অশালীন সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে। আমরা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবো।
বর্তমানে ওই দুই ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নির্দেশনা ও পরামর্শ দফতরে কাউন্সিলিং সেবা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ভুক্তভোগীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের দ্বিতীয় সেমিস্টারের এক ছাত্রী এবং ইডেন মহিলা কলেজের অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী। আর অভিযুক্ত দুই ছাত্র হলো বিশ্ববিদ্যালয়ে উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের মাস্টার্সের কামরুজ্জামান তানজিম ও আরিফুজ্জামান। অভিযোগকারী ওই দুই ছাত্রী সম্পর্কে বোন।
তানজিম ও আরিফুজ্জামান তাদের দুইবোনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পযার্য়ে প্রতারণা করেছে বলেও অভিযোগ পত্রে জানানো হয়।
ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রী অভিযোগ পত্রে বলেন, “কামরুজ্জামান তানজিমের সঙ্গে দীর্ঘ চার বছর থেকেই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। এই সময়ে তানজিম অনিচ্ছা সত্ত্বেও অশালীন কাজে বাধ্য করে এবং পরবর্তীতে জানতে পারি তার (তানজিম) অন্য একটি সম্পর্ক আছে।’
“এখন তানজিম তার সম্পর্কের কথা অস্বীকার করে নানা ধরনের গালিগালাজ ও ভীতি প্রদর্শন করছে। একইসঙ্গে তানজিমের বন্ধু আরিফুজ্জামানের দ্বারা তার বড় বোনও একই ধরনের আচরণের স্বীকার হয়েছে। এতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেছিলেন’ বলেও অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ছাত্রীর বড় বোন ইডেন কলেজের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, “আরিফুজ্জামানের সঙ্গে তিন বছরের প্রেমের সম্পর্ক। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সে আমাকে অনেক অশোভন কাজে বাধ্য করেছে। কিন্তু পরবর্তীতে বিয়ে করতে বলা হলে সে অসম্মতি জানায়।’’
অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করা হয়, “আরিফুজ্জামানের বাড়িতে গেলেও কোনো প্রতিকার হয়নি বরং তার মা-বাবা উল্টো হুমকি-ধমকি প্রদান করেছে। তার বিভাগের বন্ধুরা মুঠোফোনে আমাদের পরিবারকে হুমকি দিচ্ছে। এই অবস্থায় আমি মানসিকভাবে খুব ভেঙে পড়েছি। এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
প্রক্টর অধ্যাপক ড. আমজাদ আলী জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি যেহেতু স্পর্শকাতর তাই আমরা ভালো করে তদন্ত না করেতো কোনো ধরনের ব্যবস্থা নিতে পারি না। আগে আমরা বিষয়টি ভালোভাবে তদন্ত করবো এরপর দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো।
হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে অনেক আগ থেকেই সম্পর্ক ছিল। সে সময় তারা শারীরিক সম্পর্কে জড়ায়। যার কারণে তারা এখন বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করতে না পেরে আত্মহত্যার করতে চেয়েছে। তবে মেয়েগুলোর একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার হলেও আমি মনে করি তাদের উচিত ছিল আরো আগেই আমাদের বিষয়টি অবহিত করা।
এমএইচ/বিএ