আট স্বপ্নবাজ তরুণের ‘মনের মানুষ’
বাংলার লোক সংগীতকে মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার ব্রত নিয়ে এগিয়ে চলছে জগন্নাথ বিশ্ববিদালয়ের (জবি) আট স্বপ্নবাজ তরুণের গানের দল ‘মনের মানুষ’। এ দলের মুখপাত্র বাদল হোসেন বাদশা, ফাইয়াজ হাওলাদার সোহান জানালেন তাদের সেই ব্রতের কথা।
খুব অল্প সময়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় তথা সংগীতাঙ্গণে পরিচিতি পেয়েছে ‘মনের মানুষ’ দল।
শুরুটা ২০১৬ সালে ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংসদের ‘বসন্ত বরণ’ অনুষ্ঠানে গানের মাধ্যমে। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় দিবস, পহেলা বৈশাখ, সরস্বতী পূজা উপলক্ষে কেন্দ্রীয় পূজা উদযাপন কমিটির আয়োজনে গান, রেডিও নেক্সট, বাংলা রেডিও, ‘মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’র আয়োজনে বাহাদুর শাহ পার্ক, মুন্সিগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জের সোনার গাঁ লোক শিল্প জাদুঘর এবং রয়েল রিসোর্টসহ দেশের বেশ কয়েকটি স্থানে মাটির গান মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন তারা।
এ ছাড়া নিজ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান, ইউএনডিইএফ’র ‘নারী অধিকার সংরক্ষণ’ আয়োজিত অনুষ্ঠানেও গেয়েছেন। বিভিন্ন বিভাগ ও এর অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি কলেজে গেয়েছেন তারা। এর মধ্যে সরকারি কবি নজরুল কলেজ, ঢাকা এবং সরকারি হরগঙ্গা কলেজ মুন্সিগঞ্জ রয়েছে। সম্প্রতি উদীচীর বর্ষাবরণ উৎসবে গান বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে। বর্তমানে দেশের নানা প্রান্ত থেকে গান গাওয়ার ডাক পাচ্ছেন নিয়মিত।
‘মনের মানুষের’ ৮ সদস্যের সংসারে রয়েছে তাদের কয়েকটি মৌলিক গান। গানগুলোর মধ্যে রয়েছে সানভীর মাহমুদ- ফতেহ আলী আকাশের কথা ও সুরে ‘মনের মানুষ কোথায় পাই..., লাল জবা ফুল..., বাদশা’র কথা ও সুরে ‘পাইলাম নারে অন্তরের খবর.., সোহান ও আকাশের ‘আহারে আহারে..’ বাদশা’র কথায় ও আকাশের সংগীত পরিচালনায় সোহাগীনি প্রণয়িনীসহ বেশ কয়েকটি মৌলিক গান ইতোমধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বিভিন্ন বিভাগের ৮ তরুণের বেশির ভাগ সদস্যই সংগীত, নাট্যকলা ও চারুকলা বিভাগের। তারা সবাই বিভিন্ন যন্ত্রে পারদর্শী। বাঁশি ও ভোকালে রয়েছেন বাদল হোসেন বাদশা, ভোকাল, দোতারা, ম্যান্ডোলিনে ফতেহ আলী খান আকাশ, ভোকাল ও বেহালায় আমীর ফয়সাল, গিটার ভোকালে সানবীর মাহমুদ ফয়সাল, তবলা, ঢোল, খোলে সৌরভ দাস গুপ্ত, কাহন, দফ ও মন্দিরায় ফাইয়াজ হাওলাদার সোহান, খমকে তাকবির রিমন এবং নারী ভোকালে আছেন নুসরাত।
‘মনের মানুষ’র বাদল হোসেন বাদশা ও আকাশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তাদের ইচ্ছের কথা। তারা জানালেন, হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির ধারক ও বাহক হলো আমাদের লোকগান। বাংলাদেশে অনেক গানের দল, ব্যান্ড আছে যাদের প্রায় সবগুলোই পাশ্চাত্য গানের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা রক মিউজিক এবং মেটাল যন্ত্রের সমন্বয়ে গান। কিন্তু আমরা তাদের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিয়েই লোকগান আর দেশীয় বাদ্যযন্ত্র নির্ভর হয়ে মানুষের কাছে মাটির গান পৌঁছে দিতে চাই। বাংলার এ ঐতিহ্যবাহী যন্ত্র ও সংগীত যেন হারিয়ে না যায় সেজন্য আমাদের নিরন্তর পথচলা। আমরা স্বপ্ন দেখি একদিন আমরা সারা পৃথিবীতে বাংলার ঐতিহ্য লোকগানকে পৌঁছে দিতে পারব।
ইতো মধ্যে তাদের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল ‘ মনের মানুষ’ এ কয়েকটি গান পাওয়া যাবে। খুব শিগগিরই আরও কয়েকটি মৌলিক গান আসছে। তাছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের www.facebook.com/monermanush.jnu.bd এই লিঙ্কে পাওয়া যাবে।
ইমরান খান/জেডএ/জেআইএম