জবিতে অভিযুক্তকে রেখে নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
ছিনতাইয়ের অভিযোগে নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) প্রশাসন। গত ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের এক ছাত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ১২তম ব্যাচের মিরাজুল ইসলাম মারুফের ওরফে এম আই মারুফের পরিবর্তে একই বিভাগের ১৩তম ব্যাচের মারুফ আহমেদকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য দফতর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ফাহিম আহমেদ খান রাতুল (আইডি # ই১৬০৩০৪০৭২) এবং ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. মারুফ আহমেদকে (আইডি # ই১৭০৬০২০৪১) বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানানো হয়।
নিরপরাধ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি, অভিযোগকারী তার অভিযোগপত্রে মিরাজুল ইসলাম মারুফের ব্যাচ বা আইডি নম্বর নির্ধারিত করে না দেয়ায় এ ধরনের ভুল হয়েছে।
তবে অভিযোগকারী ছাত্রীর ভাষ্য, ২৮ তারিখে ছিনতাইয়ের ঘটনায় তিনি মারুফ ও রাতুলের নাম উল্লেখ করে অভিযোগপত্র প্রদান করেন। মারুফের ব্যাচ বা আইডি নম্বর তিনি নির্ধারণ করে দেননি। তবে তদন্তে থাকা শিক্ষককে মিরাজুল ইসলাম মারুফের ছবি দেখিয়েছেন।
এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার চেয়ে ও সম্মানহানির কথা উল্লেখ করে প্রক্টর নূর মোহাম্মদ বরাবর অভিযোগপত্র দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্র মারুফ আহমেদ।
এ বিষয়ে মারুফ আহমেদ বলেন, ‘চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে আমার বিভাগীয় প্রধান আমার কাছ থেকে আইডি কার্ডের ফটোকপি নেন। এরপর গতকাল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় আমার বহিষ্কারাদেশের খবর দেখে বিব্রত হই। আমি জড়িত না থেকেও আমার নাম দেয়াতে আমি ও আমার পরিবারের সম্মানহানি ঘটেছে। আমি এ ঘটনার প্রতিকার চাই।’
ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আকরাম মল্লিক হোসেন বলেন, ‘প্রক্টর অফিস থেকে আমার কাছে মৌখিক তথ্য চাওয়া হয়। প্রক্টর অফিস থেকে চাওয়া তথ্য অনুযায়ী আমি প্রক্টর অফিসে মারুফ আহমেদের তথ্য দিয়েছি।’
তথ্য দফতর পরিচালক মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘প্রক্টর অফিস বা রেজিস্ট্রার অফিস থেকে যে প্রেস রিলিজ দেয়া হয় আমরা সেটাই দেই। আমাদের পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।’
এ বিষয়ে পরবর্তীতে জবি প্রক্টর ড. নূর মোহাম্মদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে মারুফের নাম জেনেছিলাম। দুজনই মারুফ, বিভাগও একই কিন্তু ব্যাচ ভিন্ন হওয়ায় জটিলতা তৈরি হয়েছে। তবে আমরা বিষয়টি বুঝতে পারার সঙ্গে সঙ্গে এই আদেশ বাতিল করেছি এবং প্রকৃত অপরাধীকে সাময়িক বহিষ্কার করে আদেশ দিয়েছি। এই বিচারই চূড়ান্ত নয়, কারণ সাময়িক বহিষ্কার হওয়াদের ‘কেন স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে না’ এ মর্মে কারণ দর্শাতে বলা হয়। এরপর সার্বিক বিবেচনায় শাস্তির বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
ইমরান খান/এসআর/এমবিআর/পিআর