চারুকলায় চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি
চৈত্রের শেষ দিন আজ। রাত পোহালে বাংলা নববর্ষ ১৪২৬। পুরনো দিনের দুঃখ, গ্লানি, হতাশা দূর করে আসবে নতুন ভোর। যে ভোরে উদিত হবে নতুন সূর্য। মুছে যাবে সব জঞ্জাল। নব উদ্যমে সাজবে পৃথিবী। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, ‘মুছে যাক গ্লানি, ঘুচে যাক জরা, অগ্নি স্নানে শুচি হোক ধরা।’
প্রতি বছরের মতো এবারও রমনার বটমূলে ছায়ানটের গানে গানে আর চারুকলা থেকে বের হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রার মাধ্যমে বাঙালি বরণ করবে নতুন বছরকে। এখন চলছে সে আয়োজনের শেষ প্রস্তুতি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন মঙ্গল শোভাযাত্রার আয়োজন নিয়ে।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) চারুকলায় দেখা যায়, মঙ্গল শোভাযাত্রা নিয়ে চারুকলার শিক্ষার্থীদের আয়োজন প্রায় শেষ দিকে। তৈরি হয়েছে বিভিন্ন স্ট্রাকচার। এখন সেগুলোতে দেয়া হচ্ছে পেপার পেস্টিং। এর ওপর দেয়া হবে রঙের আস্তরণ। বৃষ্টি মোকাবেলায় এসব স্ট্রাকচারের উপরে টানানো হয়েছে সামিয়ানা। এছাড়াও মুখোশ, চিত্রকর্ম, মাটির তৈরি সরা, পুতুল, মাছ, পাখি, সূর্যসহ বিভিন্ন শিল্পকর্ম তৈরিতে সময় পার করছেন শিক্ষার্থীরা।
এবারে মঙ্গল শোভাযাত্রার কাজের দায়িত্বে রয়েছে চারুকলার ২১তম ব্যাচ। এ ব্যাচের শিক্ষার্থী তন্ময় দেবনাথ বলেন, ‘আমাদের প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। রাত জেগেও আজ আমরা কাজ করবো। আশা করছি নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ হবে। একটি সুন্দর মঙ্গল শোভাযাত্রা আমরা করতে পারবো।’
জয়নুল গ্যালারিতে শিক্ষার্থীদের তৈরি বিভিন্ন শিল্পকর্ম বিক্রির জন্য প্রদর্শন করা হচ্ছে। চারুকলায় আগত দর্শনার্থীরাও পছন্দ মতো সেগুলো কিনছেন। এ দায়িত্বে থাকা অদ্রিয়ন্তী রায় ঊর্মি বলেন, এখন শেষ সময় তাই বিক্রি বেড়েছে। দর্শনার্থীরা কিছু না কিছু কিনেই ফিরছেন।
এদিকে আয়োজকরা জানান, এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার পুরোভাগে থাকবে মহিষ, পাখি ও ছানা, হাতি, মাছ, বক, জাল ও জেলে, ট্যাপা পুতুল, মা ও শিশু এবং গরুর আটটি শিল্প কাঠামো। এছাড়া রয়েছে পেইন্টিং, মাটির তৈরি সরা, মুখোশ, রাজা-রানির মুখোশ, সূর্য, ভট, লকেট ইত্যাদি।
রোববার (১৪ এপ্রিল) সকাল ৯টায় চারুকলা থেকে বের হবে বাঙালির প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে বর্ণিল শোভাযাত্রা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের নেতৃত্বে এ শোভাযাত্রা শাহবাগ মোড় ঘুরে আবার চারুকলায় এসে শেষ হবে।
এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘মস্তক তুলিতে দাও অনন্ত আকাশে।’
এমএইচ/এএইচ/এমএস