জবির পাশে নিয়মিত ছিনতাই, নীরব প্রশাসন!
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) সংলগ্ন বাহাদুর শাহ পার্ক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের এলাকাগুলোতে নিয়মিত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। এসব ছিনতাইয়ের বেশির ভাগ শিকার হচ্ছেন জবি শিক্ষার্থীরা।
অনুসন্ধানে জানা যায়, রাতে এবং খুব সকালে এসব ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ছিনতাইয়ের শিকার অধিকাংশই হচ্ছেন নারী শিক্ষার্থী। একটি সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে ছিনতাইগুলো সংঘটিত হচ্ছে। চক্রের মধ্যে রয়েছে কিছু উঠতি বয়সের ছেলেও।
বিশ্ববিদ্যালয় সূ্ত্রে জানা যায়, গত ৮ এপ্রিল বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন পানির ট্যাংকের সামনে নাজনীন নামের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে এক মেয়ে ও রিকশাচালকের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে জানা যায়, রিকশাওয়ালা ও রিকশায় থাকা মেয়েটি ছিনতাই দলের সদস্য। কিন্তু তাদের চিহ্নিত করা যায়নি।
গত ৩ এপ্রিল ছিনতাইয়ের শিকার হন ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী সিনথিয়া আক্তার। পরে তিনি সূত্রাপুর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ওইদিন সকাল সাড়ে ৭টায় বাহাদুর শাহ পার্কের সামনে বাস থেকে নামার পর হঠাৎ এক মোটরসাইকেল আরোহী তার গলায় ছুরি ধরে ফোন দিতে বলে। ভয়ে তিনি ফোনটি দিয়ে দেন। এরপর তার সামনে আরেকজনের হাতে ছুরি মেরে তার ফোনটিও নিয়ে নেয় ছিনতাইকারীরা।
গত ২৮ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন বাহাদুর শাহ পার্কে ছিনতাইয়ের শিকার হন নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের এক শিক্ষার্থী। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে ওই শিক্ষার্থী বলেন, ২৮ মার্চ বিকালে বাহাদুর শাহ পার্কে যাওয়ার পথে অপরিচিত এক ব্যক্তি আমার পিছু নেয়। পার্কের ভেতরে বন্ধুর সঙ্গে কিছুক্ষণ গল্পের পর ওই বন্ধু চলে যায়। আমি আরও কিছু সময় পার্কে অবস্থান করি। পরে যখন বের হব তখন ওই ব্যক্তিসহ আরও চার-পাঁচজন আমার গতিরোধ করে এবং জোর করে পার্কের ভেতরে নিয়ে যায়। তারা আমার ওড়না ধরে টানাটানি করে এবং আমার মোবাইল ফোনটি নিয়ে নেয়। আমার কিছু ছবিও তারা তুলে রাখে।
‘ওই ঘটনায় সূত্রাপুর থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও চার-পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করি’- যোগ করেন তিনি।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত বছরে প্রায় ১০টির মতো ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু কোনো ধরনের প্রতিকার মেলেনি।
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সূত্রাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফ ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী আমাদের থানায় ছিনতাইয়ের মামলা করেছেন। আমরা তদন্ত করে অভিযুক্ত একজনকে চিহ্নিত করেছি। দ্রুত আমরা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ছিনতাইয়ের বিষয়ে আমাদের কাছে একটি অভিযোগ এসেছে। ছিনতাইয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার এবং একজনকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেখানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। মামলাও হয়েছে।
ইমরান খান/এমএআর/পিআর