কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে বোরকা নিয়ে বিড়ম্বনা
বোরকা নিয়ে চরম বেকায়দায় রয়েছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ছাত্রীরা। বিশেষ ক্লাস ও পরীক্ষার সময় ছাত্রীদের বোরকা খুলতে বাধ্য করার অভিযোগ রয়েছে। এতে অনেক ছাত্রী আপত্তি করলেও বিষয়টি কুবি কর্তৃপক্ষ প্রশাসনিকভাবে কোনো সুরাহা না করায় বোরকা নিয়ে শ্রেণি কক্ষ কিংবা পরীক্ষার সময় প্রায়ই বিড়ম্বনায় পড়তে হয় ছাত্রীদের।
সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার বাংলা বিভাগের এক ছাত্রী বোরকা পড়লে শিক্ষকের সঙ্গে এ নিয়ে মৃদু বাকবিতণ্ডা হলেও ওই ছাত্রী বোরকা খোলেনি, তাই তাকে নম্বর কম দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, বোরকা পড়ার দায়ে এবার বৈষম্যের শিকার হলো কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মাকছুদা মীরা। মাকছুদা মীরাকে প্রেজেন্টেশানের সময় বিভাগের শিক্ষিকা নাহিদা বেগম বোরকা খোলার জন্য চাপ দেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর একাধিক সহপাঠীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বাংলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষেরে দ্বিতীয় সেমিস্টারের (বাংলা ৫ম ব্যাচ) গ্রুপ প্রেজেন্টেশনের সময় এই শিক্ষার্থী বোরকা পরেই প্রেজেন্টেশনে অংশগ্রহণ করতে এলে শিক্ষিকা নাহিদা বেগম বোরকা খোলার জন্য চাপ দেন।
কিন্তু কোনোভাবেই বোরকা খুলতে রাজি হয়নি ওই শিক্ষার্থী। তখন শিক্ষার্থীর উদ্দেশে শিক্ষিকা বলেন, আরো বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বোরকা পড়ে ক্লাসও করতে দেয়া হয় না। ভবিষ্যতে তোমরা অনেক জায়গায় চাকরি করতে যাবে যদি বোরকা না খোলো তোমাদের চাকরি হবে না। বাংলা শিক্ষার্থীদের সংস্কৃতি ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক।
তখন ওই শিক্ষার্থী বলেন ‘আমি চাকরি করবো না।’ পরে বোরকা পড়েই ওই শিক্ষার্থী প্রেজেন্টেশনে অংশগ্রহণ করেন এবং প্রেজেন্টেশনের নম্বর ঘোষণার সময় ওই শিক্ষিকা বলেন ‘তার সব কিছুই ভালো হয়েছে, তবে ভালো পোশাক না পড়ার কারণে এক নম্বর কম পেয়েছে।’
তাৎক্ষণিকভাবে কয়েকজন শিক্ষার্থী বোরকা না খুলেই প্রেজেন্টেশন গ্রহণের অনুরোধও করেন ওই শিক্ষিকাকে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হওয়া যায়।
এই বিষয়ে কোর্স শিক্ষক নাহিদা বেগম বলেন, ‘আমি কোর্স শিক্ষক- আমার একটা চাওয়া পাওয়া আছে, তাই আমি শাড়ি পড়েই প্রেজেন্টেশন দিতে বলেছিলাম, এটি তেমন কিছু না।’
এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় সেল ফোনে কুবির বাংলা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মনিরুজ্জামান জানান, এ বিষয়ে এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি, অভিযোগ পেলে বিষয়টি তদন্ত করা হবে।
কামাল উদ্দিন/বিএ